উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার।
Published : 26 Aug 2024, 05:36 PM
চাঁদপুরের শাহারাস্তি উপজেলায় উজানের পানি নেমে গত দুই দিনে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার।
সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত উপজেলার সুচিপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ বাড়িঘর পানির নিচে এবং রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। একইসঙ্গে তলিয়ে গেছে মাছের ঘের এবং গবাদি পশুর ঘর।
সূচিপারা ডিগ্রি কলেজে আশ্রয় নিয়েছেন আড়াই শতাধিক মানুষ। তারা গত তিনদিন ধরে এই আশ্রয়কেন্দ্রে পরিবার-পরিজন নিয়ে আছেন। সঙ্গে নিয়ে এসেছেন গবাদি পশুসহ হাঁস-মুরগি।
আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা জাকির হোসেন বেপারী বলেন, “বাড়ি-ঘরে পানি উঠে যাওয়ার কারণে বৃদ্ধা মাসহ পরিবার-পরিজন নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছি। কবে পানি কমবে সেই চিন্তায় আছি।”
তানিয়া আক্তার নামে এক গৃহবধূ বলেন, “আমরাও শিশুদের নিয়ে গত দুই দিন ধরে এই আশ্রয়কেন্দ্রে আছি। আমাদের বাড়িঘর সব পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন কী অবস্থায় আছে তাও জানি না।”
পাশের পাথৈর গ্রামের মাহিন হোসেন বলেন, “আমাদের গ্রামের উত্তর ও দক্ষিণপাড়া সব বাড়িঘর সব পানিতে তলিয়ে গেছে। দেখার জন্য এখন পর্যন্ত কেউ আসেনি। আমরা সরকারের সহযোগিতা কামনা করি।”
একই গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, “আজকে চারদিন আমাদের এলাকায় পানি। কুমিল্লা ও ফেনীর পানি আমাদের এলাকায় চাপ দেওয়ায় ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। ডাকাতিয়া নদী দিয়ে বানের পানি প্রবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কমছে না।”
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সজাগ ফাউন্ডেশনের সদস্য ফয়েজ আহমেদ বলেন, “গত কয়েকদিন যারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন তাদের খুঁজে খুঁজে খাবার দেওয়ার চেষ্টা করছি। এই মুহূর্তে দুর্গত মানুষের পাশে সবাইকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।”
শাহরাস্তির ইউএনও মো. ইয়াসির আরাফাত বলেন, “উপজেলার দক্ষিণে ছয়টি ইউনিয়নে পঞ্চাশ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এ পর্যন্ত পাঁচশতাধিক পরিবার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। পানি বেড়ে যাওয়ায় আরো পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে। আমরা এসব লোকদের সহযোগিতায় কাজ করছি। অন্যদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।”
এদিকে, দুপুরে উপজেলার সূচিপাড়ার ডিগ্রি কলেজ আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান।