শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
Published : 10 Sep 2024, 10:11 PM
গাজীপুরের টঙ্গী, সদর ও শ্রীপুর উপজেলায় বিভিন্ন দাবিতে দিনভর বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২৫টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
দাবি আদায়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে শুরু হওয়া শ্রমিক বিক্ষোভ দুপুরের পর থেকে স্বাভাবিক হতে শুরু করে বলে জানান গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম।
১৩ দফা দাবিতে মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন টঙ্গীর এমট্রানেট গ্রুপ লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন পিনাকি গ্রুপ, ড্রেস ম্যান ও নোমান গ্রুপের শ্রমিকরাও।
এক পর্যায়ে আশপাশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শ্রমিক বিক্ষোভে অংশ নেয়। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ বৈঠক করে দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
এদিকে দাবি মেনে নেওয়ার পর এমট্রানেট গ্রুপের মানব সম্পদ বিভাগের বেশকিছু কর্মকর্তার পদত্যাগ চেয়ে আবার দুপুর ৩টার পর থেকে আন্দোলনে নামেন শ্রমিকরা।
এমট্রানেট গ্রুপের শ্রমিক রফিকুল ইসলাম জানান, কয়েক বছর ধরে মৌখিক ও লিখিতভাবে তাদের দাবিগুলো উপস্থাপন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে মঙ্গলবার সকালে পাঁচটি পোশাক কারখানার শ্রমিক একসঙ্গে আন্দোলনে নামেন।
অপরদিকে সকালে ১৪ দফা দাবিতে শ্রীপুর উপজেলার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি এলাকার মেঘনা গ্রুপের হাই ফ্যাশন কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নেয়।
এ সময় পার্শ্ববর্তী হাউ আর ইউ টেক্সটাইল লিমিটেডের শ্রমিকদের কারখানা থেকে বের করে আনতে গেলে হামলার শিকার হন অন্য শ্রমিকরা। পরে উত্তেজিত শ্রমিকরা সেখানে ঢুকে ভাঙচুর চালায়।
এদিকে সকাল সাড়ে ৮টায় কারখানা প্রবেশ করে হাজিরা বোনাসসহ ১০ দফা দাবিতে কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় জয়দেবপুর থানার নতুন বাজার এলাকার এস এম নীটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরা।
একই দাবিতে পরে বেলা ১২টার দিকে অ্যাসরোটেক্স লিমিটেডের শ্রমিকরা কারখানার প্রধান গেইটে ইট পাইকেল ছুঁড়তে থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়।
ছুটির খবর শুনে এস এম নীটওয়্যার এবং অ্যাসরোটেক্স লিমিটেডের শ্রমিকরা অ্যাপারেলস্-২১ লিমিটেড ও গ্রীণ ফাইবার কম্পোজিট কারখানার গেইটে গেলে ওই দুটি কারখানাতেও ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। পরে বেলা ১টার দিকে শ্রমিকরা সরে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, সকাল থেকে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে ২৫টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়।
পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করলে দুপুরের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় বলে জানান তিনি।
তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনী ও বিজিবির সঙ্গে মিলে পুলিশ কাজ করছে বলে জানান শিল্প পুলিশের এই কর্মকর্তা।