অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় কোহিনূর ও আব্দুস সাত্তারকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
Published : 12 Nov 2024, 10:10 PM
ময়মনসিংহের নান্দাইলে ২০০৪ সালে পৌর নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলাকালে গুলিতে দুজন নিহত হওয়ার মামলায় তৎকালীন পুলিশ সুপার কোহিনূর মিয়া ও সাবেক পৌর মেয়র আব্দুস ছাত্তার ভূঁইয়া উজ্জ্বলকে খালাস দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার বিকালে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাবরিনা আলী এ রায় দেন বলে আদালত পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) পি এস এম মোস্তাছিনুর রহমান জানান।
তিনি বলেন, “আদালত এ মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় সাবেক পুলিশ সুপার কোহিনূর মিয়া ও পৌর মেয়র প্রার্থী আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া উজ্জ্বলকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন বিচারক।”
মামলার বিবরণে বলা হয়, ময়মনসিংহের নান্দাইলে ২০০৪ সালের ৫ মে আচারগাঁও হাই স্কুল কেন্দ্রে পৌর নির্বাচনে ভোট চলাকালে দুপক্ষের সংর্ঘষে গুলিতে সুজন ও আবু তাহের নামে দুজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে নান্দাইল থানায় মামলা দায়ের করে।
এর আগে ২০০৪ সালের ৫ মে পৌর নির্বাচনে নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই পক্ষের সংঘর্ষে সুজন ও আবু তাহের নামে দুই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এই ঘটনায় নিহতদের পরিবার কোনো মামলা না করায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে নান্দাইল থানায় মামলায় একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। পরে তদন্ত শেষে আসামি শনাক্ত না হওয়ায় তিনবার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ।
এরপর ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর ওই পৌরসভা নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা রফিক উদ্দিন ভুঁইয়া আদালতে পুনরায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় নান্দাইলের সাবেক এমপি খুররম খান চৌধুরী, তৎকালীন পুলিশ সুপার কোহিনুর মিয়া ও পৌর মেয়র আব্দুস ছাত্তার ভুঁইয়া উজ্জ্বলসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
পরে আদালতের নির্দেশে নান্দাইল থানা পুলিশ মামলাটি পুনরায় তদন্ত করে ওই বছরই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতা রফিক উদ্দিন ভুঁইয়া নারাজি দিয়ে ২০০৮ সালে জেলা জজ আদালতে একটি রিভিশন আবেদন দায়ের করেন। পরে আদালত মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
সিআইডি ২০১১ সালে এসপি কোহিনুর মিয়া ও নান্দাইল পৌর সভার মেয়র আব্দুস ছাত্তার ভুঁইয়া উজ্জ্বলের নামে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করে। দীর্ঘ ২০ বছর ৬ মাস ৩ দিন আইনি প্রক্রিয়া শেষে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় কোহিনূর ও আব্দুস সাত্তারকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
মামলায় আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট এএইচএম খালেকুজ্জামান, আতাউর রহমান মুকুল ও এমএ হানান্ন খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ার আজিজ টুটুল কৌশলী ছিলেন।
রায় ঘোষণার পর নান্দাইলের সাবেক পৌর মেয়র আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “দীর্ঘ বিশ বছর পর আদালতের কাছে ন্যায় বিচার পেয়েছি।”
তবে এসপি কোহিনূর মিয়া আদালতে হাজির ছিলেন না। তিনি পলাতক রয়েছেন।