স্থানীয়রা বলছেন, ভাটাগুলোতে মাটি পরিবহন করা হচ্ছে ট্রাক্টর-ট্রলির মাধ্যমে। এতে চাকায় পিষ্ট হয়ে ফসলি জমি ও গ্রামীণ রাস্তাঘাট নষ্ট হচ্ছে।
Published : 26 Feb 2025, 12:06 PM
লক্ষ্মীপুরে গ্রামীণ সড়ক ও ফসলি জমি ‘নষ্ট হওয়ায়’ ট্রাক্টর-ট্রলি চলাচলে এলাকাবাসীর বাধার পর এক ইটভাটা মালিক তার শ্রমিকদের দিয়ে বিক্ষোভ করিয়েছেন। এ সময় শ্রমিকরা গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে রাখে।
মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার কাদিরাগোজা থেকে করাতিরহাট সড়কের সবুজের গোজা পর্যন্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা বলছেন, কাদিরাগোজা-করাতিরহাট সড়কের আশপাশে কয়েকটি ইটভাটা রয়েছে৷ এসব ভাটায় আশপাশের ফসলি জমির ঊর্বর মাটি কেটে নিয়ে ইট তৈরি করা হয়। প্রশাসন অভিযান চালিয়ে একাধিকবার জরিমানা করলেও তা বন্ধ হয়নি। আর ভাটাগুলোতে মাটি পরিবহন করা হচ্ছে ট্রাক্টর-ট্রলির মাধ্যমে। ফলে ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে ফসলি জমি ও গ্রামীণ রাস্তাঘাট নষ্ট হচ্ছে। এরইমধ্যে ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে কাদিরাগোজা-করাতিরহাট সড়কের বিভিন্ন অংশের কার্পেটিং উঠে গেছে।
বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হলে তারা স্থানীয়দের এসব ঘটনায় সচেতন হতে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করার পরামর্শ দেয়। এতে সদরের চররমনী মোহন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও একই ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য আলী হোসেন সরকারসহ স্থানীয় লোকজন ট্রাক্টর চলাচলে বাধা দেয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মেসার্স ইকবাল ব্রিকস ম্যানুফেকচারিংয়ের ট্রাক্টর চালক মো. হৃদয় বাধা দেওয়া লোকজনকে ট্রাক্টর দিয়ে ‘চাপা দেওয়ার চেষ্টা’ করে। তখন স্থানীয়রা হৃদয়কে মারধর করে।
তবে মারধরের সময় বিএনপি নেতা আলী ঘটনাস্থল ছিলেন না বলে এলাকার লোকজন জানিয়েছেন।
তারা ভরছেন, পরে ‘মেসার্স ইকবাল ব্রিকস ম্যানুফেকচারিং’ ইটভাটার মালিক কামাল উদ্দিন ইকবাল বিএনপি নেতা আলীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ তুলে শ্রমিকদের দিয়ে বিক্ষোভ করান। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা গাছের গুঁড়ি ফেলে ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সড়ক থেকে গাছের গুঁড়ি সরিয়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা আলী হোসেন বলেন, “সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জামশেদ আলম রানা অবৈধ ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ করতে আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। এজন্য স্থানীয় লোকজন ট্রাক্টর বন্ধ করতে বলে। তখন ট্রাক্টর চালক লোকজনকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। এজন্য তারা চালককে মারধর করেছে।
“পরে ভাটা মালিক ইকবাল তার শ্রমিকদের দিয়ে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে রাখে। আমার বিরুদ্ধেও মিথ্যে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।”
ইটভাটা মালিক কামাল উদ্দিন ইকবাল বলেন, “বিএনপি নেতা ‘অযথা’ ট্রাক্টর চলাচলে বাধা দিচ্ছেন। তাকে যদি ইউএনওই নির্দেশ দেন, তিনি আমাদের নিয়ে বসতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে লোকজন দিয়ে ট্রাক্টর চলাচলে বাধা দিচ্ছেন। কারণ জানতে চাইলে একজন চালককে আমার ভাটার সামনেই দুই দফা মারধর করা হয়৷
“এনিয়ে বিএনপি নেতার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি সরাসরি আমার কাছে কোনো চাঁদা দাবি করেননি। আর বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের ঘটনায় আমি জড়িত নয়।”
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জামশেদ আলম রানাকে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেন নাই।