দলিল প্রতি দলিল লেখকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ১ হাজার ৯০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করেন মোহরাররা।
Published : 17 Apr 2025, 11:35 AM
ছদ্মবেশে তথ্য সংগ্রহ করার পর গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছে দুনীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দুদকের একটি আভিযানিক দল এ অভিযানে অংশ নেয় বলে জানিয়েছেন দুদকের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায়।
দুদক গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রথমে ছদ্মবেশে এনফোর্সমেন্ট টিমের সদস্যরা তথ্য সংগ্রহ করেন। তারপর ওই টিমের সদস্যরা দলিল রেজিস্ট্রেশন, তল্লাশি, নকল উত্তোলনসহ অন্যান্য কাজে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি এবং ঘুষ দাবিসহ নানাবিধ অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত করে সত্যতা পান।
এ সময় দুদক গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায়, সোহরাব হোসেন সোহেল, ডিএডি মোহাম্মদ আল-আমিন হোসেন, আফসার উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জমির দলিলের নকল উত্তোলনে গ্রাহকদের কাছ থেকে নকলনবিশরা সরকার নির্ধারিত ফরমে দলিল প্রতি অতিরিক্ত ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা বেশি আদায় করছেন।
রশিদ বহি (টিকিট বহি) প্রতিটি ফর্ম ৬০০ টাকা দরে বিক্রি করার বিধান রয়েছে। কিন্তু বুধবার এটি বিক্রির পর্যালোচনায় দেখা যায় ১০টি ফরমে ৬ হাজার টাকার বদলে ৬ হাজার ৭০০ টাকা আদায় করা হয়েছে।
ফরমের অতিরিক্ত ৭০০ টাকা পাওয়া যায় কোটালীপাড়া সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের অফিস সহকারী আবুল খায়েরের কাছে। অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে ওই অফিস সহকারী অভিযানিক দলের সদস্যদের কাছে কোনো সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
এছাড়া দলিল পর্যালোচনার সময় দলিল লেখক এবং ফোনে জমির দলিল দাতা ও গ্রহীতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তারা জানান, দলিল রেজিস্ট্রেশনের সময় কোটালীপাড়া সাব-রেজিস্ট্রোরের কার্যালয়ের মোহরার শিখা রাণী মণ্ডল ও মোহারার মেশকাতুর রহমান দলিল প্রতি দলিল লেখকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ১ হাজার ৯০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করেন।
দুদকের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, অভিযুক্ত নকলনবিশ, অফিস সহকারী আবুল খায়ের, মোহরার শিখা রাণী মণ্ডল ও মোহরার মেশকাতুর রহমানকে সতর্ক ও তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোটালীপাড়া সাব-রেজিস্ট্রারকে পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে দুদকের সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায় বলেন, “অভিযানে দলিলের নকল উত্তোলন, রশিদ বহি (টিকিট বহি) ফিতে অতিরিক্ত টাকা আদায় ও দলিল রেজিস্ট্রেশনে অতিরিক্ত অর্থ দাবিসহ অন্যান্য অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গেছে।”
এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলেও জানান দুদকের এ কর্মকর্তা।