“লুটপাটের পর রাত ৯টার দিকে কারখানার একাধিক ভবনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়৷ ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট এলেও তারা আগুন নেভাতে পারছেন না৷”
Published : 26 Aug 2024, 11:37 AM
১৪ ঘণ্টার বেশি সময় গেলেও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি নারায়ণগঞ্জের গাজী টায়ার কারখানার আগুন। কারখানায় লুটপাট চালিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷
রোববার রাত ৯টার দিকে রূপগঞ্জের তারাবো রূপসী এলাকায় সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীরের মালিকানাধীন ওই কারখানায় আগুন লাগার পর থেকে ফায়ার সার্ভিসের এক ডজন ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে।
সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি বলে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক ফকরউদ্দিন জানিয়েছেন।
এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করছিল। তবে এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
টায়ার প্রস্তুতকারী কারখানাটিতে প্রচুর প্লাস্টিক জাতীয় কাঁচামাল ও দাহ্য বস্তু থাকার কারণে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে বলে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা জানিয়েছেন।
রোববার ভোররাতে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী৷ তার গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে বিকালে একদল লোক গাজীর টায়ার প্রস্তুতকারী কারখানাটিতে হামলা চালায় এবং লুটপাট শুরু করে৷
এর আগে গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এক দফায় গাজীর রূপসী ও কর্ণগোপের দুটি কারখানায় হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক লেফট্যানেন্ট কর্নেল রেজাউল করিম সাংবাদিকদের বলেন, “খবর পেয়ে রাত ১১টা ৪০ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস৷ এটি একটি টায়ার তৈরির ফ্যাক্টরি৷ আগুনটা পুরো ফ্যাক্টরিতে ছড়িয়ে পড়েছে৷
“এছাড়া টায়ার, টায়ার তৈরির কাঁচামাল রাবার, প্ল্যাস্টিক জাতীয় দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে৷ আমাদের ১২টি ইউনিট কাজ করছে৷”
গাজী গ্রুপের টায়ার তৈরির কারখানাটিতে লুটপাট চালিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কারখানার সহকারী মহাব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম৷
গাজী গ্রুপের এই কর্মকর্তা বলেছেন, “রোববার বিকালে দুটি দলে কয়েক’শ লোক কারখানায় ঢুকে পড়ে৷ আমাদের কর্মীদের সক্ষমতা অনুযায়ী তাদের বাঁধা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না৷ লুটপাটের পর রাত ৯টার দিকে কারখানার একাধিক ভবনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়৷ ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট এলেও তারা আগুন নেভাতে পারছেন না৷”
হামলার ঘটনার পর পুলিশে ফোন দিয়েও সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন সাইফুলসহ কারখানা কর্তৃপক্ষ৷
সাইফুল বলেন, “লুটপাটের সময় থানাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন জায়গায় ফোন দিলে সেনাবাহিনীর একটি টিম আসে গেটের সামনে৷ কিন্তু ১০ মিনিটের বেশি তারা দাঁড়াননি৷ পরে আগুন দেওয়ার পর ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আসে৷”
“ছয়তলা একটি ভবনের নিচে যখন আগুন দেওয়া হয় তখন লুটপাটকারীদের কয়েকজন ভবনটির ওপরে ছিলেন৷ এখন কয়েকজন দাবি করছেন, তাদের স্বজনরা ভবনে আটকা পড়েছেন।”
এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা রেজাউল বলেন, “ভবনে আটকে পড়া ১৪ জনকে আমরা উদ্ধার করতে পেরেছি৷ তারা এ কারখানার কর্মী নন, মূলত কারখানাটির মালামাল সরিয়ে নিতে তারা এসেছিলেন৷ আরও কেউ ভবনের ভেতরে আছে কি-না তা আগুন নেভানোর আগে বলা যাচ্ছে না।”