“আবু সাঈদ মহাকাব্যের নায়ক।”
Published : 10 Aug 2024, 05:23 PM
চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আবু সাঈদের মৃত্যুর মধ্য নিয়ে দেশে যে স্বাধীনতা এসেছে, তার সুফল দেশবাসী ভোগ করবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
ইউনূস বলেন, “আবু সাঈদ চমকে দিয়েছে বিশ্বকে। তার গুলি খাওয়ার যে ছবি মানুষ দেখলো, এরপর মানুষকে আর থামানো যায়নি। তোমরা দ্বিতীয় বিজয় এনে দিয়েছো। দেশের মানুষ এ বিজয়ের সুফল ভোগ করবে।”
শনিবার বেলা ১টায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট রুমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এ কথা বলেন তিনি।
রংপুরে শিক্ষার্থীরা গত ১৬ জুলাই বেলা ১টার দিকে জেলা স্কুল মোড়ে থেকে মিছিল নিয়ে বের হলে লালবাগ খামার মোড়ে শিক্ষার্থীদের আরেকটি মিছিল তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। পরে মিছিলটি রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর ফটক দিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করে।
সেসময় সেখানে থাকা ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলার সময় পুলিশের সঙ্গেও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাঁধে। এতে আবু সাঈদসহ পুলিশ ও বেশ কয়েক শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজে নেওয়া হলে হাসপাতালে আনার আগেই গুলিবিদ্ধ আবু সাঈদের মৃত্যু হয় বলে জানান চিকিৎসকেরা।
পুলিশের বন্দুকের সামনে দুহাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকা সাঈদকে গুলি করার ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সারা দেশে আন্দোলন জোরদার করা হয়। এক পর্যায়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা মহাকাব্য পড়ি। আবু সাঈদ সেই মহাকাব্যের নায়ক। ভবিষ্যতে তাকে নিয়ে অনেক কবিতা, গল্প ও সাহিত্য লেখা হবে।”
এরপর তিনি শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত বিভিন্ন দাবি শোনেন এবং সেগুলো পূরণের আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবারই সন্তান আবু সাঈদ। হিন্দু পরিবার হোক, মুসলমান পরিবার হোক, বৌদ্ধ পরিবার হোক-সবার ঘরের সন্তান এই আবু সাঈদ। ছোট ছেলেমেয়েরা বড় হলে পড়বে আবু সাঈদের কথা এবং বলবে, আমিও ন্যায়ের জন্য লড়বো।
গত ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন পার্ক মোড়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। তার পরদিন ১৭ জুলাই তাকে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।