এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রচার না করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ইসি।
Published : 05 Jan 2024, 07:47 PM
গাইবান্ধা-৫ আসনের ভোট বন্ধ করার যে খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে, তা ‘ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক মো শরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “প্রকৃতপক্ষে মাননীয় কমিশন আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৩৩ গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ বন্ধ করা সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি। এ তথ্যটি অসত্য ও ভিত্তিহীন।”
পক্ষপাতের অভিযোগে এক প্রার্থীর রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার গাইবান্ধা-৫ আসনে নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে সাঘাটার ইউএনও এবং ওসিকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ।
সেই সঙ্গে ওই আসনে গত উপ-নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী সব প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদেরও নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে বলা হয় আদালতের আদেশে।
ভোটের আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির মধ্যে শুক্রবার কয়েকটি টেলিভিশন ও অনলাইন পোর্টাল ‘গাইবান্ধা-৫ আসনের ভোট বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে’ বলে খবর দেয়।
এই প্রেক্ষাপটে ‘ওই তথ্য সঠিক নয়’ জানিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, ভোটারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানায় নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রচার না করার জন্য অনুরোধ জানানয় ইসি।
পরে রাতে নির্বাচন ভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, “গাইবান্ধা-৫ আসনে ভোট নির্বাচন কমিশন বন্ধ করেছে, এ ধরনের একটি খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। এই ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এই খবরটি ভিত্তিহীন।
“গাইবান্ধা-৫ নিয়ে কোনো জটিলতা নেই। এখনো সব আসনে ভোটের পরিবেশ অনুকূলে আছে।”
এ আসনের ভোট নিয়ে কোনো অভিযোগ ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কোনো অভিযোগ কমিশন পায়নি। সংবাদ মাধ্যমে কেন এ ধরনের নিউজ এল, সেটা জানি না। কমিশন থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে। এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন নেয়নি।”
২০২২ সালের ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণের মধ্যে সিসি ক্যামেরায় এক-তৃতীয়াংশ কেন্দ্রে অনিয়মের দৃশ্য দেখে মাঝপথে ঢাকা থেকে নির্বাচন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল ইসি।
বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে অনিয়মের কারণে কোনো সংসদীয় আসনের নির্বাচন পুরোপুরি বন্ধ করার ঘটনা সেটাই প্রথম।
গাইবান্ধায় ভোটে অনিয়মে জড়িতদের চিহ্নিত করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন।
সেই কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মে সম্পৃক্ততার কারণে রিটার্নিং কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, পুলিশের উপ-পরিদর্শক, নির্বাহী হাকিমসহ শতাধিক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাচনী এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।
পরে ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি সেখানে নতুন করে ভোট হয় এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হোসেন রিপন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রিপন এবারও গাইবান্ধা-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী।
এছাড়া সাবেক ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মেয়ে ফারজানা রাব্বী বুবলী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ট্রাক প্রতীক নিয়ে, জাতীয় পার্টির মো. আতাউর রহমান লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের মো. জাহাঙ্গীর আলম কুলা প্রতীক নিয়ে, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. ফারুক মিয়া আম প্রতীক নিয়ে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শামসুল আজাদ শীতল ঈগল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন।
অশোক কুমার দেবনাথ জানান, ৪ হাজার কেন্দ্রে শনিবার ব্যালট যাবে।
“আর বাকি কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট যাবে ভোটের দিন। আজ সকাল ৮টা থেকে প্রচার, মিটিং-মিছিল, সমাবেশ শেষ হয়েছে। আর আগামীকাল থেকে নির্বাচনি মালামাল যাবে।”
পুরনো খবর