সদর থানার পরিদর্শক বলেন, চার আসামি কারাগারে আছেন।
Published : 09 Mar 2025, 06:41 PM
মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে আসা আট বছর বয়সি শিশু ধর্ষণের মামলায় চার আসামিকে নিরাপত্তাজনিত কারণে আদালতে আনা যায়নি। ফলে তাদের রিমান্ডের কোনো শুনানিও হয়নি।
রোববার দুপুরে আসামিদের আদালতে আনা হতে পারে এই খবরে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ মাগুরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের ফটকে ভিড় জমায়। এ সময় তারা শিশুটির ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করে স্লোগান দিতে থাকে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই পরিস্থিতিতে তাদেরকে আর আদালতে আনা হয়নি বলে পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
সদর থানার ওসি আয়ুব আলী রাতে বলেন, “আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কোনো রিমান্ডের আবেদন করা হয়নি। তবে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।”
তবে দুপুরের দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানানো হয়েছিল।
আলোচিত এই মামলার আসামিরা হলেন- শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব হোসেন (১৮) ও বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া (৪২), অপ্রাপ্তবয়ষ্ক এক কিশোর (১৭) এবং তাদের মা জাবেদা বেগম (৪০)।
মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) এনে ভর্তি করা হয় এবং পরে শুক্রবার রাতে তাকে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়।
শনিবার ঢাকা মেডিকেলে শিশুটির অবস্থা ‘সঙ্কটাপন্ন’ জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এরপর তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হলেও সন্ধ্যায় তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে আনা হয়।
রোববার সকালে শিশুটির চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে সিএমএইচে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেখানে তিনি শিশুটির সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
এদিকে দুপর ১২টার দিকে মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ভেতর থেকে একটি মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। তারা মাগুরা আদালতের ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় মূল ফটক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এতে সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীরা ধর্ষণে জড়িত ব্যক্তিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচার চেয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। বিদ্যমান আইনে অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যায় বলে বারবার এমন ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
দুপুর ১টার পর ঘটনাস্থলে আসে সেনাবাহিনীর একটি দল। পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাদের আশ্বাসে দুপুর সোয়া ২টার দিকে শিক্ষার্থীরা আদালতের ফটক থেকে সরে যায়।
আরও পড়ুন:
মাগুরায় 'শিশু ধর্ষকের' ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বর ঘেরাও ছাত্র-জনতার
মাগুরায় শিশু 'ধর্ষণের' ঘটনায় তিন দিন পর মামলা, ৪ আসামির সবাই গ্রেপ্তার
মাগুরার 'ধর্ষণের শিকার' শিশুটি লাইফ সাপোর্টে
মাগুরায় 'শিশু ধর্ষণ': থানা ঘেরাও করে জনতার বিক্ষোভ
'ধর্ষণের শিকার' শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি, ভগ্নিপতি ও বোনের