ওই মাজারে ওরশের প্রথম দিনে একই এলাকায় ‘তৌহিদী জনতার ব্যানারে’ ওয়াজ মাহফিলের ঘোষণা দেওয়া হয়।
Published : 20 Feb 2025, 07:47 PM
নোয়াখালীর সদর উপজেলায় একটি মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এত অন্তত ১০ জন আহত হন।
বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে একদল লোক এ ঘটনা ঘটায় বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও মাজারের মোতাওয়াল্লি জানিয়েছেন।
ওরশের প্যান্ডেলসহ পুরো মাজার ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে নোয়াখালী সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি), সুধারাম থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কালাদরাপ ইউনিয়নের মুন্সীরতালুক গ্রামে শাহ সুফি আইউব আলী দরবেশের মাজারে বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিনব্যাপী ওরশ আয়োজনের প্রস্তুতি চলছিল।
একইদিন বিকালে মাজারের পাশে সোলেমান মার্কেট এলাকায় ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে ওয়াজ মাহফিলের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এ নিয়ে সকাল থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
বেলা ৩টার দিকে কয়েকশ লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মাজারে হামলা-ভাঙচুর চালায়। এ সময় তারা অগ্নিসংযোগও করেন।
এতে নারীসহ অন্তত ১০ জন মাজারভক্ত আহত হন। তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
মাজারের প্রধান মোতাওয়াল্লি মো. জামাল উদ্দিন আল মাইজভাণ্ডারী বলেন, “কালাদরাপ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড মুন্সীতালুকে আল্লাহর ওলি শাহ সুফি আইউব আলী দরবেশ (রহ.) মাজার শরিফে দীর্ঘ ৬৫ বছর ধরে বাৎসরিক ওরস হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০, ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারি তিনদিন ব্যাপী বার্ষিক পবিত্র ওরস শরীফ উদযাপনকে কেন্দ্র করে মাজার শরিফ পরিচালনা কমিটির পক্ষে জিকির, মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।”
তার দাবি, বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে মাজার ও ওলি-আউলিয়াবিরোধী স্থানীয় লোকজন কাছের একটি মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে কয়েকশ লোক জড়ো করে মাজারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়।
খবর পেয়ে সুধারাম থানা পুলিশ ও সেনা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মান্দারতলী হেদায়েত নূর জামে মসজিদের সভাপতি মোজাম্মেল হোসেনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে এ ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ ওঠে।
এ বিষয়ে মোজাম্মেল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি একটু ঝামেলার মধ্যে আছি। এখন কথা বলা সম্ভব নয়।
“তবে এ মাজারে ‘বেদাত কাজ-কর্ম হয় বলে’ তৌহিদী জনতা হামলা চালিয়েছে।” এ বিষয়ে পরে আপনার সঙ্গে কথা বলব। এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
ঘটনাস্থল থেকে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ নেওয়াজ তানভীর বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পৌঁছার আগেই মাজারে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে কাজ করছে প্রশাসন।”
সুধারাম মডের থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, “অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে টহল দিচ্ছেন। এ ঘটনায় তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”