গত বছরের ১ ডিসেম্বর সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে ‘অনৈতিক সম্পর্ক’ গড়ে তোলার অভিযোগ তদন্তের দাবি করা হয়।
Published : 10 Jan 2023, 11:07 PM
এক শিক্ষকের যৌন হয়রানির অভিযোগের তদন্ত নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘লুকোচুরি’ করছে বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
পাবলিক হেলথ্ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস্ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে ‘চাকরির প্রলোভনে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে’র অভিযোগের তদন্ত কমিটি গঠন প্রসঙ্গে এই অভিযোগ এনেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে অভিযোগের তদন্ত কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কয়েকজন। পরে তারা সংবাদ সম্মেলনে এসে এই অভিযোগ আনেন।
এ সময় দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, “আমরা জেনেছিলাম গত বছরের ৮ ডিসেম্বরে জনির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তবে এক মাস অতিবাহিত হলেও তদন্ত কাজ শুরু হয়নি। অথচ আজকে জানলাম, সিন্ডিকেট কর্তৃক কোনো তদন্ত কমিটিই গঠিত হয়নি।”
“সিন্ডিকেটের রেজ্যুলেশনে তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য উপাচার্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরপর আরও একটি সিন্ডিকেট সভা হলেও উপাচার্য তদন্ত কমিটি গঠন করেননি। পরে মাসখানেক সময় অতিবাহিত হলে একটি প্রাথমিক কমিটি গঠন করেছে। অথচ কথা ছিলো সিন্ডিকেট থেকে স্ট্র্যাকচারাল কমিটি গঠনের।”
মাহমুদুর রহমান জনিকে শিক্ষকতা থেকে অপসারণের দাবি জানিয়ে অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিবিধি অনুসারে জনি এরই মধ্যে নৈতিক স্খলনের কারণে শিক্ষক হওয়ার অযোগ্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। তার ‘যৌন নিপীড়ন’ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর কালেমা লেপন করেছে।”
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনিছা পারভীন জলি বলেন, “জনির বিরুদ্ধে একটি পক্ষপাতমূলক দলীয় কমিটি গঠন হয়েছে। যাদের থেকে ন্যায়বিচার আশা করা কঠিন।”
“এই ঘটনার দ্রুত বিচার হওয়া প্রয়োজন। বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। অচিরেই একটি মোর্চা গঠন করে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। আমরা চাই না, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো নীপিড়কের কারণে শিক্ষার্থীরা অনিরাপদ হোক।”
তদন্ত কাজে কেন ‘গড়িমসি’ হচ্ছে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কিছু প্রক্রিয়াগত কারণে আমাদের দেরি হয়েছে। কিন্তু দেরিতে হলেও প্রাথমিক সত্যাসত্য তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। আশা করি, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত শেষে সঠিক বিচার সম্পন্ন হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচী, ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায়।
গত বছরের ১ ডিসেম্বর সহকারী অধ্যাপক জনির ‘অনৈতিক সম্পর্ক’ গড়ে তোলার অভিযোগ তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক।
আরও পড়ুন: