“একে তো বৃষ্টির কারণে এ বছর জমিতে আলুর আবাদ দেরিতে হয়েছে। তার ওপর কুয়াশার কারণে আলু গাছের পাতায় রোগ দেখা দেয়।”
Published : 02 Feb 2024, 10:22 PM
ফসল উৎপাদনে অন্যতম নদী তীরবর্তী জেলা চাঁদপুরে প্রতিবছর কৃষকদের একটি ‘বড় অংশ’ আলুর আবাদ করেন।
তবে এ বছর বৃষ্টির কারণে আবাদ দেরিতে হয়েছে। সেই সঙ্গে এখন ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে জমিতে ছত্রাক আক্রমণ হওয়ায় আলুর ফলন নিয়ে আশঙ্কার মধ্যে পড়েছেন চাঁদপুরের কৃষকরা।
চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাফায়েত আহম্মদ সিদ্দিকী জানান, জেলায় এ বছর আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ১১০ হেক্টরে। লক্ষ্যমাত্রার চাইতে ৩৯০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ কম হয়েছে।
চাঁদপুর সদর, হাজীগঞ্জ ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আলুর আবাদ হয়।
সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের নিজ গাছতলা গ্রামের কৃষক জসিম উদ্দিন মাল বলেন, একে তো বৃষ্টির কারণে এ বছর আবাদ দেরিতে হয়েছে। তার ওপর কুয়াশার কারণে আলু গাছের পাতায় রোগ দেখা দেয়। এতে পাতা সাদা হয়ে ধীরে ধীরে গাছ নুয়ে পড়ে। কীটনাশক ব্যবহার করেও অনেকের লাভ হয়নি।
“সার, বীজ ও কীটনাশক খরচ দিয়ে ভালো দাম না পাওয়া গেলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে আমাদের।”
সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের চাঁদ খাঁর দোকান এলাকার কৃষক রোস্তম আলী বলেন, এ বছর ৪০ শতাংশ জমিতে আলু রোপণ করেছেন। কিন্তু কুয়াশার কারণে আলুর গাছগুলো বড় হচ্ছে কম।
আলুর ভাল ফলন নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়ে এ কৃষক বলছেন, “দেরিতে আলু উত্তোলন করলে দামও কম পাওয়া যাবে।”
চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাফায়েত জানান, সাধারণত নভেম্বরের মাঝিতে আলু রোপণ করা হয়। দুটি ঘূর্ণিঝড় ও অতি বৃষ্টির কারণে কৃষকরা এবার রোপণ করেছেন ডিসেম্বরের প্রথম দিকে। সময়মত রোপণ করতে পা পারায় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।
তিনি বলেন, “কুয়াশার কারণে আলু ক্ষেতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ায় কৃষকদেরকে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক সহায়তা দিচ্ছি। সবকিছুর পরও আমরা কাঙ্ক্ষিত ফলন এবং গত বছরের মত জেলার চাহিদা পূরণ করে অন্য জেলায় সরবরাহের প্রত্যাশা করছি।”
প্রতি বছরের মত এবারও জেলায় ১৩টি হিমাগারে ৮২ হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি মডেল ঘর আছে, সেগুলোতে কৃষকরা আলু সংরক্ষণ করতে পারবে বলে চাঁদপুর জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান রুপম জানান।