“দীর্ঘদিন আমরা উন্মুক্ত কাজ করতে পারিনি। সমাবেশকে ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে আনন্দমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।”
Published : 23 Feb 2025, 10:39 AM
গোপালগঞ্জে ১৯ বছর পর জনসভা করতে যাচ্ছে বিএনপি। জনসভা ঘিরে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। নেতা-কর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি ও জাতীয় নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবি আদায়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অংশ হিসেবে এ জনসভার আয়োজন করেছে দলটি।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কের মুক্ত মঞ্চে এ জনসভা হবে। এতে অন্তত প্রায় ৫০ হাজার লোকের সমাগম ঘটবে আশা করছেন নেতাকর্মীরা।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিকদার শহিদুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘদিন আমরা উন্মুক্ত কাজ করতে পারিনি। তাই সোমবারের সমাবেশকে ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে আনন্দমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।”
এদিকে সভাকে কেন্দ্র করে শহরসহ জেলার আনাচে-কানাচে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন ও তোরণে ছেয়ে গেছে।
জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন ও প্রধান বক্তা হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) শামা ওবায়েদের থাকার কথা রয়েছে।
বিশেষ অতিথি থাকবেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) সেলিমুজ্জামান সেলিম, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) খন্দকার মাশুকুর রহমান, সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদীন মেহবাহ।
এছাড়া কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম পটুসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকউজ্জামান।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন সদর উপজেলা বিএনপি সভাপতি সিকদার শহিদুল ইসলাম লেলিন ও জেলা বিএনপির সদস্য সাজ্জাদ হোসেন হিরা।
এদিকে সমাবেশ সফল করতে এবং বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ও সমর্থকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন স্তরে দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা চলছে। প্রচারের জন্য করা হচ্ছে লিফলেট বিতরণ।
দলটির নেতাকর্মীরা বলছে, গোপালগঞ্জ শহরের শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২০০৪ সালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সর্বশেষ ফরিদপুর বিভাগীয় ইউনিয়ন সভা করেছিলেন; যা পরবর্তী সময়ে জনসভা নামে পরিবর্তন করা হয়। ১৯ বছর পর সোমবারের এ জনসভায় নেতা-কর্মীরা ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষের সমাগম ঘটাতে চাইছেন।
সমাবেশকে সফল করতে কেন্দ্রীয় নেতা সেলিমুজ্জামান সেলিমসহ অন্যান্যরা দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিকদার শহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “দীর্ঘ ১৭ বছর দেশে কোনো গণতান্ত্রিক পরিবেশ ছিল না। বিগত দিনে আওয়ামী লীগের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা ও তৎকালীন প্রশাসনের বিমাতা সুলভ আচরণের কারণে বিএনপি প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি।
“গত ৫ অগাস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে ফ্যসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সারা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনায় গোপালগঞ্জে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।”
গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ রফিকউজ্জামান বলছিলেন, “বিগত দিনে আওয়ামী লীগ ও তার পুলিশ বাহিনী দিয়ে বিএনপির কন্ঠ রোধ করা হয়েছিল। আহ্বায়কের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আওয়ামী লীগের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে নিরলস ভাবে বিএনপিকে শক্তিশালী করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।”
“শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আশা করি, প্রায় ৫০ হাজার লোকের সমাগম ঘটবে”, যোগ করেন তিনি।