নভেম্বরের শেষের দিকে আটকা পড়া শকুনটিকে বন বিভাগের টাকায় প্রতিদিন একটি করে মুরগি খাওয়ানো হত।
Published : 23 Dec 2024, 11:23 PM
তেইশ দিন পর ‘স্যাটেলাইট ট্যাগ’ নিয়ে মুক্ত আকাশে ডানা মেলেছে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার একটি গ্রামে আটকা পড়া হিমালয়ান প্রজাতির শকুন।
সোমবার দুপুরে উপজেলার উত্তর দাড়িয়াল গ্রাম থেকে শকুনটিকে আকাশে অবমুক্ত করা হয়।
“এর আগে শকুনটির গায়ে স্যাটেলাইট ট্যাগ বসান হয়,” বলেন ঢাকা থেকে আসা আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংঘের জ্যেষ্ঠ প্রোগ্রাম অ্যাসিস্ট্যান্ট কাজী জেনিফার আজমিরি।
গত ৩০ নভেম্বর শকুনটি দাড়িয়াল গ্রামের বাসিন্দা মুদি দোকানি মো. সোলায়মানের ঘরের চালের উপর এসে পড়ে।
তখন সেটিকে ধরে ঘরের পাশে একটি পরিত্যক্ত দোকান ঘরে আটকে রাখেন তিনি।
মুন্সীর হাটের দোকানি সোলায়মান বলেন, ওইদিন দুপুরের দিকে শকুনটি তার ঘরের চালে এসে পড়ে। শকুনটি উদ্ধার করে পরিত্যক্ত দোকান ঘরে রাখেন তিনি। এরপর থেকে প্রতিদিন তিনি এটিকে একটি করে মুরগি খেতে দেন। যদিও মুরগি কেনার টাকা দিয়েছে বন বিভাগ থেকে।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা মনিন্দ্র নাথ হালদার বলেন, “বন্যপ্রাণী শাখায় যোগাযোগ করে জানতে পারি, শকুনটি হিমালয়ান গৃধিনী প্রজাতির। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, এটা সুস্থ আছে। সেবা দিলে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে। তখন সোলায়মানের হেফাজতে রেখে খাবারের ব্যবস্থা করি।”
জেনিফার আজমিরি বলেন, “বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিসে আমরা বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করি। এটা হিমালয়ান গৃধিনী প্রজাতির। শকুনটির ওজন সাড়ে সাত কেজি, এটা পুরোপুরি এডাল্ট হয়নি।”
তিনি বলেন, “শকুনগুলো হিমালয় থেকে মাইগ্রেট করে আসে। উত্তরবঙ্গে শকুন বেশি পাওয়া যায়। কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলে একটা দুটো পাওয়া যায়। শীতের শেষে মার্চ-এপ্রিলে গরম পড়া শুরু করলে ফিরে যায়।”
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংঘের এ কর্মকর্তা বলেন, মরা গরু দেখলে শকুন আকাশ থেকে নিচে নেমে আসে। বাংলাদেশে এখন খাবার সংকট রয়েছে। কারণ এখন গরু মারা গেলে মাটি চাপা দেওয়া হয়। খাবার সংকটের কারণে অনেক দূর থেকে উড়ে এসে খাবার না পেয়ে দুর্বল হয়ে যায়। তখনই এরা মানুষের হাতে ধরা পড়ে। খাবার দিলে সুস্থ হলে বিশ্রাম নিয়ে আবার ফিরে যেতে পারে।
“এখানে পাওয়া শকুনটি সুস্থ আছে, দুর্বলতা নেই। এ কারণে ওর পেছনে একটি স্যাটেলাইট ট্যাগ লাগিয়ে দিয়েছি। এটা দিয়ে তার গতিবিধি নজরদারিতে রাখা যাবে।”