মেহেরপুরে ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি জামায়াত নেতা তারিক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যান বলে সেই সময় দাবি করে পুলিশ।
Published : 09 Sep 2024, 09:28 PM
মেহেরপুর জেলা জামায়াতের এক নেতা নিহতের ১০ বছর পর সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও তৎকালীন পুলিশ সুপার নাহিদুল ইসলামসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।
সোমবার মেহেরপুরের মুখ্য বিচারকি হাকিম আদালতে মামলার আবেদন করা হলে বিচারক আবু বক্কর সিদ্দীকি মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন বলে জানান মেহেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মারুফ আহমেদ বিজন।
মামলার বাদী মো. তাওফিকুল ইসলাম নিহত মেহেরপুর জেলা জামায়াতের সাবেক সহকারী সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম তারিকের ছোট ভাই।
২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি তারিক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যান বলে সেই সময় পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। তারিক জেলা জামায়াতের তৎকালীন আমির ছমির উদ্দিনের বড় ছেলে।
অন্য আসামিরা হলেন- মেহেরপুরের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল জলিল, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম সাঈদ মোহাম্মদ মজুমদার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ফরিদ হোসেন, র্যাবের গাংনী ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন আশরাফ হোসেন, র্যাবের ডিএডি জাহাঙ্গীর আলম, বিজিবির নায়েক সুবেদার মো. আসাদ মিয়া, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি বাবুল আক্তার, সদর থানার ওসি রিয়াজুল ইসলাম, সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম, এএসআই আব্দুল হান্নান, পুলিশ কনস্টেবল সাধন কুমার, গোয়েন্দা পুলিশের কনস্টেবল নারদ কুমার, সদর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রসুল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বারিকুল ইসলাম লিজন এবং সাবেক ইউপি সদস্য দরুদ আলী।
বাদীর অভিযোগ, “ঘটনার দিন দুপুরে জামায়াত নেতা তারিককে শহরের হোটেলবাজার এলাকা থেকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। ওইদিন ফরহাদ হোসেনের নির্দেশে তৎকালীন পুলিশ সুপার নাহিদুল ইসলাম গুলি করে তারিককে হত্যার নির্দেশ দেন।
“পরে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্যরা তারিককে শহরের বামনপাড়া শ্মশান ঘাট এলাকায় নিয়ে গুলি করে হত্যা করেন। যা পুলিশের পক্ষ থেকে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছে বলে বলা হয়।”
আইনজীবী মারুফ আহমেদ বিজন জানান, ১০ বছর পর একটি ‘পরিকল্পিত হত্যার’ ঘটনায় মামলা হলো। এতদিন নিহতের পরিবার নিরাপত্তার ভয়ে মামলা করতে পারেননি। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশকে নথিভুক্তের নির্দেশ দিয়েছে।
বাদী তাওফিকুল ইসলাম বলেন, “সম্পূর্ণ রাজনৈতিক শত্রুতা থেকে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতারা রাজনৈতিকভাবে জামায়াতকে র্নিমূল করার অপচেষ্টা হিসেবে আমার ভাইকে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে হত্যা করেছেন।”
জামায়াত নেতা নিহতের বিষয়ে কিছু জানেন না দাবি করে তৎকালীন এএসপি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “সেই সময় মাত্র তিন মাস মেহেরপুরে ছিলাম। কারো সম্পর্কে জানার আগেই এই ঘটনা ঘটে। যেহেতু সেই সময় মেহেরপুর ছিলেন, তাই আসামি করা হয়েছে বলে শুনেছি।”