সিন্ডিকেটসহ নানা কারণে চা শিল্প পিছিয়ে পড়েছে, সেমিনারে বক্তারা

সিলেটে ‘বাংলাদেশের চা শিল্পে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এই অভিযোগ করেন।

সিন্ডিকেটসহ নানা কারণে চা শিল্প পিছিয়ে পড়েছে বলে সিলেটে এক সেমিনারে বক্তারা অভিযোগ করেছেন।

কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন-সিজেএ বাংলাদেশের উদ্যোগে এবং সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় “বাংলাদেশের চা শিল্পে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এই অভিযোগ করেন।

বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলরুমে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের পরিচালক এ কে এম রফিকুল হক এবং চা বিষয়ে বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান ও চা উৎপাদন প্রযুক্তি বিভাগের এ এফ এম সাইফুল ইসলাম।

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আলিমুল ইসলাম বলেন, “সিলেট অঞ্চলের ভূ-বৈচিত্র্য চা উৎপাদনে সহায়ক। সিলেট অঞ্চলের চা বাগানের জন্য খরা, পোকামাকড় ও রোগবালাই সহনশীল চা ক্লোন উদ্ভাবনের মাধ্যমে চায়ের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে, যাতে চা শিল্পকে দেশীয় চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি রপ্তানিমুখী করা যায়।

“চা শিল্পকে এগিয়ে নিতে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চা বোর্ড সম্মিলিত উদ্যোগ নিলে এর সুফল পাওয়া যাবে। চায়ের গুণগত মান অটুট রেখে এ খাতে রপ্তানি বৃদ্ধি করে চায়ের অতীত গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব।”

বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসাইন বলেন, “শ্রমিক সংকট, ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি, কালো বাজারে চা বিক্রির কারণে এ খাত রুগ্ন অবস্থায় পতিত হয়েছে। এ থেকে উত্তরণে চা বোর্ড কাজ শুরু করেছে।”

মালিক-শ্রমিকসহ চা শিল্পের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে কাজ করলে এ খাত লাভজনক অবস্থায় ফিরে আসবে বলে মনে করেন তিনি।

সেমিনারে অন্য বক্তারা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অপার সম্ভাবনাময় খাত হচ্ছে চা শিল্প। চা চাষের এলাকা বৃদ্ধি না পাওয়া, সিন্ডিকেটসহ নানা কারণে এ শিল্প ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে। বিশেষ করে উৎপাদন খরচ বেশি এবং বাজার মূল্য কম থাকায় ব্যাহত হচ্ছে চায়ের উৎপাদন। রুগ্ন এ শিল্পকে বাঁচাতে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজন।

কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতি পারভীন এফ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনার সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণি মনসুর। এতে আরো বক্তব্য দেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, ম্যাক্সন ব্রাদার্সের পরিচালক মো. আজহারুজ্জামান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখার আহমদ, সিজেএর সিনিয়র সদস্য শফিকুল বশর চপল, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সিলেট জেলা বারের সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম, সিজেএর সাবেক সভাপতি ফরিদ হোসেন, চা বাগান মালিকদের পক্ষে মুফতি মোহাম্মদ হাসান।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ সামিউল আহসান তালুকদার, জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের পরিচালক খসরু মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহাম্মদ, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।