“গাইবান্ধা রুটে চার জোড়া আন্তঃনগর ও দুই জোড়া লোকাল ট্রেনে কয়েক হাজার যাত্রী চলাচল করে।”
Published : 28 Jan 2025, 08:32 PM
হঠাৎ করে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন গাইবান্ধার রেল যাত্রীরা। বিভিন্ন কাজে ও লেখাপড়া জন্য যারা প্রতিদিন ট্রেনে গাইবান্ধা থেকে অন্য এলাকায় যাওয়া-আসা করেন; তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার বিষয়টি আগে থেকে না জানা থাকায় অনেকে স্টেশনে এসেছেন। পরে বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে তাদের গন্তব্যে যেতে হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে গাইবান্ধা রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীরা টিকিট কাউন্টারের সামনে ভিড় করছেন। কেউ কেউ ট্রেন কখন চালু হবে তা জানতে চাইছেন। আবার অনেকে ট্রেন না চলায় টিকিটের টাকা ফেরত নিচ্ছেন।
এ ছাড়া স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ট্রেনের অপেক্ষায় অনেক যাত্রীকে বসে থাকতে দেখা যায়। তাদের অনেকেই ট্রেন চলাচল বন্ধের এ খবর জানতেন না।
বেলা ১১টার দিকে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে মুকুল মিয়া নামে এক চাকরিজীবীকে দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। ঈশ্বরদীর আজিমপুর হর্টিকালচারে স্টক লেবার হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি।
মুকুল মিয়া বলেন, “পরিবারসহ কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কেটেছিলাম। কিন্তু ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় টাকা ফেরত নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। এখন গাইবান্ধা বাস টার্মিনাল থেকে বাসে করে যেতে হবে।”
এমন ভোগান্তির কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
ঢাকায় বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিবন্ধনের চাকরির ভাইভা পরীক্ষা দিতে যাওয়ার জন্য টিকিট কেটেছিলেন জীবন চৌধুরী শুভ নামে এক যুবক।
তিনি বলেন, “কাল চাকরির ভাইভা পরীক্ষা আছে। হঠাৎ ট্রেন বন্ধের খবরে বিপদে পড়ে গেছি। ট্রেন বন্ধের খবর এসএমএস বা অন্য কোনোভাবে জানালে যাত্রীদের ভোগান্তি কম হত।”
এমন দুর্ভোগের কথা জানান স্টেশনে টিকিটের মূল্য ফেরত নিতে আসা ও প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষারত যাত্রী মো. ইব্রাহিম, হাছনা বানু, মাজেদুল ইসলাম, ইলিয়াস হোসেনসহ অনেকেই।
তারা জানান, স্টেশনে এসে তারা জানতে পারছেন যে ট্রেন চলবে না। নির্ধারিত গন্তব্যে তারা যেতে পারছেন না। ফলে তাদেরকে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। এখন বাসে বা অন্য পরিবহনে করে তাদেরকে নির্ধারিত গন্তব্যে যেতে হবে।
গাইবান্ধা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার আবু তাহের বলেন, “গাইবান্ধা রুটে চার জোড়া আন্তঃনগর ও দুই জোড়া লোকাল ট্রেনে কয়েক হাজার যাত্রী চলাচল করে।”
তিনি বলেন, “সর্বশেষ মঙ্গলবার সকালে লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেন গাইবান্ধা ছেড়ে লালমনিরহাটে গেছে। আর কোনো ট্রেন এই রুটে চলাচলের খবর নেই। যারা ট্রেনের টিকিট কেটেছিলেন তাদেরকে মূল্য ফেরত দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া যারা অনলাইনে অ্যাপসের মাধ্যমে টিকিট কেটেছেন তাদের অনলাইনেই রিফান্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে জটিলতা নিরসন না হওয়ায় কর্মবিরতিতে গেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। কর্মবিরতির অংশ হিসেবে সোমবার দিবাগত রাত ১২টার পর শিডিউলে থাকা ট্রেনগুলোতে ওঠেননি রানিং স্টাফরা।
ফলে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। যার ফলে সারাদেশে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল। রানিং স্টাফের মধ্যে রয়েছেন ট্রেন চালক, গার্ড ও টিকিট চেকার পদের কর্মকর্তা-কর্মচারী।