সিলেটে বিএনপি নেতা কামাল হত্যায় মামলা

কামালের ভাই মইনুল হক মঙ্গলবার রাতে সিলেট নগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানায় মামলা করেন।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2022, 07:13 PM
Updated : 8 Nov 2022, 07:13 PM

সিলেটে নগরে বিএনপি নেতা আ ফ ম কামাল হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পর মামলা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নিহত কামালের ভাই মইনুল হক বাদী হয়ে সিলেট নগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানায় মামলা করেন।

সিলেট নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ জানান, মামলায় আজিজুর রহমান সম্রাটসহ (৩৫) ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও পাঁচ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার অপর আসামিরা হলেন বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজির মো. হাফিজ (২৫), সিলেট নগরের আম্বরখানা বড়বাজারের শাকিল আহমদ (৩৫), বাদাম বাগিচার মিশু (২৬), গুয়াইপাড়ার কুটি (২৪), একই এলাকার মনা (২৫), বিশ্বনাথের আব্দুল আহাদ (৬০), খাদিম দাসপাড়ার মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস (২৮), সিলেট সদরের রায়েরগাঁওয়ের আশরাফ সিদ্দকী (৩৭) ও লালারগাঁওয়ের রুহুল আমিন শাওন (২২)।

মামলায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে জানান তিনি।

গত রোববার রাত ৮টার দিকে সিলেট নগরের আম্বরখানা বড়বাজার এলাকায় ছুরিকাঘাতে খুন হন জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম কামাল।

মামলার এজাহারে বাদী মইনুল হক উল্লেখ করেন, আম্বরখানার মান্নান সুপার মার্কেটে তাদের ফুফাতো ভাইয়ের ছেলে লাহিন আহমদের ‘লহিন এয়ার ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস’ নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গত ১৯ অক্টোবর আসামিরা এসে এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায়। এ খবর পেয়ে কামাল ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামিদের ভাঙচুর চালাতে নিষেধ করেন। এ সময় দুপক্ষের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। আসামিরা সেদিন প্রকাশ্যে আমার ভাইকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, “এর জেরে ধরে ৬ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে আমার ভাই প্রাইভেটকারে বালুচরে যাওয়ার সময় বড়বাজার এলাকায় ৪/৫টি মোটরসাইকেলযোগে আসামিরা পিছু নেয়। এ সময় তারা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আমার ভাইকে কুপিয়ে খুন করে।”

নগর পুলিশ জানায়, বিএনপি নেতা আ ফ ম কামাল সিলেট বিমানবন্দর এলাকা থেকে আম্বরখানা বড়বাজার হয়ে গোয়াইটুলার দিকে যাচ্ছিলেন। তার গাড়িকে অনুসরণ করছিল দুটি মোটরসাইকেল। বড়বাজারের ১১৮ নম্বর বাসার সামনে কামালের গাড়ির গতিরোধ করে তাকে গাড়ি থেকে নামায় একদল লোক। পরে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে কামাল মারা যান জানিয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান শামছুল ইসলাম বলেন, কামালের দেহে ২৫টি ছুরিকাঘাত করা হয়। তার বাম হাতে ১৬টি, বাম বগলের নিচে দুইটি, বুকের বামপাশে একটি ও বাম পায়ে ছয়টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ জানান, আ ফ ম কামাল রাজনীতির পাশাপাশি পাথর ব্যবসা এবং নগরের জিন্দাবাজার এলাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসায়ে যুক্ত ছিলেন। সম্প্রতি তার ট্রাভেল এজেন্সি থেকে আজিজুর রহমান সম্রাটের আত্মীয়কে সৌদি আরব পাঠানো নিয়ে দুজনের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় সম্রাট ২১ অক্টোবর কামালসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।

এর জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বলেন তিনি। 

আরও পড়ুন:

সিলেটে কামাল হত্যায় বিক্ষোভ, বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুরে আটক ৪  

সিলেটে কামাল হত্যা: বিএনপির ৩ দিনের শোক 

সিলেটের বিএনপি নেতা কামালের গায়ে ২৫ ছুরিকাঘাত: পুলিশ

সিলেটে বিএনপি নেতা কামাল খুন 'ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে': পুলিশ

সিলেটে কামাল হত্যা: মধ্যরাতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর

সিলেটে ছুরি মেরে বিএনপি নেতাকে খুন, ছাত্রদল কর্মী আটক