তুমব্রু সীমান্তে থেমে থেমে গুলি: দুই স্কুলে আশ্রয় রোহিঙ্গাদের

বৃহস্পতিবার সকালেও থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।

বান্দরবান প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2023, 08:30 AM
Updated : 19 Jan 2023, 08:30 AM

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় আশ্রয়শিবিরে আগুন লাগার পর ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা পরিবাররা দুটি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।

বুধবার সকাল থেকে রোহিঙ্গাদের দুটি সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) এর মধ্যে দিনভর থেমে থেমে গোলাগুলির পর সন্ধ্যায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার সকালেও থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা গেছে জানিয়ে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আলম বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেও রোহিঙ্গাদের দুটি পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে গোলাগুলি হয়। বেলা সাড়ে এগারটা পর্যন্ত গুলি চলে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ইউপি সদস্য আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রোহিঙ্গাদের দুটি পক্ষই সশস্ত্র অবস্থানে রয়েছে। তবে সীমান্ত এলাকা জুড়ে বিজিবির সদস্যরা টহল জোরদার করেছে।

“আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও কিছু নিরীহ রোহিঙ্গা পরিবার মিলে আনুমানিক ২০০টি পরিবার তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জুনিয়র হাই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে।”

কিছু পরিবার বুধবার রাতে বিক্ষিপ্তভাবে মিয়ানমারেও চলে গেছে বলে জানান এই জনপ্রতিনিধি।

তুমব্রু সীমান্তের কোনাপাড়ার শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা এ আশ্রয়শিবিরে বুধবার শতশত ঘর ভস্মীভূত আশঙ্কা করা হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা এখনও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেনি।

এ ছাড়া আশ্রয় নেওয়া পরিবারের সংখ্যা ঠিক কত তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা বৃহস্পতিবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েনিফোর ডটকমকে বলেন, কিছু পরিবার স্কুলে ঢুকেছে খবর পেয়েছি। এ ব্যাপারে কী করা যায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

“তবে ঠিক কত পরিবার আশ্রয় নিয়েছে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। অনেক রোহিঙ্গা পরিবার মিয়ানমারেও ফেরত চলে গেছে শুনলাম।

“তারা সবাই বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কালকে রাতের ঘটনা আজকে সকালের মধ্যে সঠিক পরিসংখ্যান বের করা সম্ভব হয়নি। খোঁজ খবর নিয়ে আজকের মধ্যে সঠিক পরিসংখ্যান পেয়ে যায় কিনা দেখা হচ্ছে।”

স্থানীয়দের মাঝে কোনো আতঙ্ক রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএনও বলেন, “এটি মূলত রোহিঙ্গাদের দুটি গ্রুপের মধ্যে ঘটনা। গতকাল যখন গোলাগুলি চলছিল তখন স্বাভাবিক কারণে স্থানীয়রা হয়ত একটু আতঙ্কিত হয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। যেহেতু এটাতে স্থানীয় বিষয় জড়িত না।”

কোনাপাড়া শূণ্যরেখার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে বসবাসকারী ও  মাঝি (দলনেতা) দিল মোহাম্মদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের একটি দল এখনও এই আশ্রয়শিবিরে অবস্থান করছে।

সেখানে ৬২১টি পরিবারে প্রায় চার হাজার ২৮০ জন শরণার্থী রয়েছেন।

সীমান্ত পরিস্থিতি জানতে বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম চৌধুরীকে একাধিকবার কল করা হলেও তার মোবাইল সংযোগ পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন:

Also Read: তুমব্রু সীমান্তে গোলাগুলির পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন

Also Read: কক্সবাজারের সীমান্তে ফের গোলাগুলির খবর

Also Read: শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘আরসা-আরএসও’র গোলাগুলি, নিহত ১