সারাদেশে পুলিশসহ বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন।
Published : 04 Aug 2024, 09:29 PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে সর্বাত্নক অসহযোগের মধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষ,পুলিশের ওপর হামলা,গুলি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এতে সারাদেশে পুলিশসহ বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন।
এছাড়া ভাঙচুর,অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা,রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে অসংখ্য মোটরসাইকেল, যানবাহন।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
দিনাজপুরে ইকবালুর রহিমের বাসভবনে হামলা-অগ্নিসংযোগ
দিনাজপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিল থেকে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম বাসভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
এসময় বিক্ষোভকারীরা আড়াইশ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল এবং পুলিশের একটি সাজোয়া গাড়ি ভাংচুর করে। পরিস্থিতি পুলিশ টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে হামলাকারীদের পিছু হটতে বাধ্য করে।
হাসপাতাল, মুন্সিপাড়া, বালুবাড়ী, জিলা স্কুল সড়ক সহ আশপাশ এলাকা রণক্ষেত্র পরিণত হয়। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী।
খুলনায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন
খুলনায় জেলা ও নগর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দিয়েছেন দিনাজপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভকারীরা।
রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জেলার শঙ্খমার্কেট এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের জেলা কার্যালয়টিতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে আন্দোলনকারী পৌঁছালে তারা সেখানে কোনো বাধার মুখে পড়েননি। আওয়ামী লীগের অল্প কয়েকজন নেতাকর্মী সেখানে থাকলেও আন্দোলনকারীদের ধাওয়ায় তারা চলে যান।
এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। কয়েকটি ককটেল নিক্ষেপ ও গুলির শব্দও শোনা যায়। পরে আন্দোলনকারীরা একত্র হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দিলে তারা পিছু হটে বড় মির্জাপুর এলাকায় অবস্থান নেন।
আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগ অফিসের দ্বিতীয় তলায় উঠে ভাঙচুর ও চেয়ার টেবিলে আগুন ধরিয়ে দেন। দীর্ঘ সময় ধরে ওই এলাকায় ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে।
মানিকগঞ্জে ঢাকা আরিচা মহাসড়ক অবরোধ
সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে মানিকগঞ্জে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা।
রোববার সকাল ১০টা দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের মানরা এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেন হাজার হাজার আন্দোলনকারী। এরপর মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।
এ সময় সরকারের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন তারা। এছাড়া ট্রাফিক পুলিশ বক্সসহ কয়েকটি ভবনে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীরা।
সেখানে আন্দোলনকারীদের হামলায় ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন ও আজকের পত্রিকার মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি মঞ্জুর রহমান ও এটিএন বাংলা মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম সুজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নাটোরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
নাটোরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
রোববার বেলা সোয়া ১২টার দিকে শহরের ভবানীগঞ্জ মোড় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
সকাল থেকে অল্প অল্প করে আন্দোলনকারীরা জড়ো হতে শুরু করেন। বেলা সোয়া ১২ টার দিকে প্রায় দুই শতাধিক আন্দোলনকারী জমায়েত হয়।
এ সময় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাদের প্রতিহত করতে ধাওয়া দেয়। এ সময় আন্দোলনকারীরাও তাদের ধাওয়া দিলে এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
নোয়াখালীতে সংঘর্ষ, ব্যাংক-সরকারি দপ্তর ভাংচুর
নোয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে রোববার সকাল থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহর মাইজদীতে সংসদ সদস্য একরকমুল করিম চৌধুরীর উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় সোনালী ব্যাংক, এলজিইডি অফিসসহ সরকারি বিভিন্ন অফিস ও দোকাপাটে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
এক পর্যায়ে সকাল ১১টা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিয়ে আন্দোলনকারীরা জেলা শহরে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।
দুপুরে দেড়টার দিকে শহরের মাইজদী বাজারে নোয়াখালী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিথুন ভট্টের বাড়িতে হামলা ভাংচুর চালায় আন্দোলনকারীরা।
মিথুন ভট্ট জানান, হামলাকারীরা তার বাসার চারটি ঘর ভাংচুর করে এবং চারটি মোটরসাইকেল আগুনে জ্বালিয়ে দেয়।
রাজশাহীতে থানায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবির অসহযোগ আন্দোলনে রাজশাহীর মোহনপুর থানায় হামলা চালিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও উপজেলা ভুমি অফিসে ঢুকে ভাংচুর ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে আন্দোলনকারিরা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রোববার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে জড়ো হয় শিক্ষার্থী ছাড়াও বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা চত্বরের দিকে যায়। এ সময় প্রথমে তারা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয়। ধাওয়া খেয়ে তারা পালিয়ে গেছে কার্যালয়ে ভাংচুর চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে।
এর পর আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে গিয়ে গেট ভেঙে মোহনপুর থানা চত্বরে প্রবেশ করে। এ সময় তারা পুলিশের তিনটি গাড়িসহ বেশ কিছু মোটরসাইকেলে আগুন দেন।
এছাড়াও তারা উপজেলা ভূমি অফিসে ভাঙচুর এবং কেশরহাট বাজারে গিয়ে আওয়ামী লীগ ও কয়েকটি অঙ্গসংগঠনের কার্যালয়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করে।
রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, থানায় হামলার ঘটনায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে থানা চত্বরের যে সব যানবাহন ছিল সেগুলো ভাংচুর করে আগুন দিয়েছে। কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা তদন্ত করে যানা যাবে।
রাঙামাটিতে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা
রাঙামাটিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ পাওয়া যায়।
শিক্ষার্থীরা অসহযোগ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শহরের নিউ মার্কেট এলাকায় জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদেরকে রাস্তায় অবস্থান করতে দেয়নি। তারা ফিরে যাওয়ার সময় হাসপাতাল এলাকায় এই হামলা হয় বলে অভিযোগ করেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের কর্মী পারভেজ হোসেন সুমন।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী অতর্কিত হামলা করলে ৭-৮ জন শিক্ষার্থী আহত হয়ে রাঙামাটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। পরে পুলিশ আহতদের হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে বাসায় পৌঁছে দেয়।
ঝিনাইদহে পুলিশসহ অন্তত ৩৫ জন আহত
ঝিনাইদহে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের সময় এক পুলিশসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছে।
রোববার সকালে শিক্ষার্থীরা শহরের মুজিব চত্বর থেকে এবং বিএনপি হাটের রাস্তা থেকে মিছিল বেরকরে। পরে তারা পায়রা চত্বরে এসে মিলিত হয়। মিছিল থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর, থানায় হামলা, পুলিশ বক্স ভাঙচুর, পোস্ট অফিস, পৌরসভা এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সফিকুল ইসলাম অপুর বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায়। থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস ও শটগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে আহতদের মধ্যে ৩২ জনকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছে।
সকাল থেকে জেলায় যানবাহন চলাচল করেনি। খোলেনি দোকানপাট। পুলিশের পাহারায় অফিস-আদালতের কাজ চলেছে।
কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের অফিস, ট্রাফিক বক্সে ভাঙচুর ও আগুন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচির ডাকে কুষ্টিয়ায় সড়কে অবস্থান নেয় হাজারো বিক্ষোভকারী। এ সময় আওয়ামী লীগের অফিস, ট্রাফিক বক্স ও বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ পলাশ কান্তি নাথ বলেন, “রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় শহরের সাদ্দাম মোড় থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক দিয়ে চৌড়হাস মোড়ে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তাদের সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ জড়ো হলে জনসমুদ্র সৃষ্টি হয়।
“বেলা ১২টায় মজমপুর গেইটে কিছু ব্যক্তি লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে পুলিশকে ধাওয়া করে। পরে পুলিশ সেখান থেকে সরে যায়। এ সময় পুলিশ বক্সে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, বঙ্গবন্ধু ম্যূরাল ভাঙচুর ও জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগসহ শহরের প্রধান সড়ক দখল করে নেয় তারা।”
গাইবান্ধায় শতাধিক আহত
গাইবান্ধা জেলা শহরে ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশের কাঁদুনে গ্যাস, রাবার বুলেট ও ছররা গুলিতে শতাধিক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রোববার দুপুর ২টার দিকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও মিছিলে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলিও ছুড়ে। এতে মিছিলে অংশ নেওয়া
অন্তত শতাধিক ছাত্র-জনতা আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তবে এ ঘটনার পর চেষ্টা করেও পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নড়াইলে ত্রিমুখি সংঘর্ষে নারী-পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত
নড়াইলে বৈষম্যবিরাধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে দুজন বিদ্ধ হয়েছেন। এ ছাড়া ত্রিমুখি সংঘর্ষে নারী-পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।
রোববার বেলা ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত দফায় দফায় আন্দোলনকারী, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
এ সময় পুলিশ ১৫০টি শর্টগানের গুলি ও ৬০টি টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।
এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা পুলিশের পিকআপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়।
গুলিবিদ্ধ দু’জন হলেন- নড়াইল পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের স্বেছাসবক লীগের সভাপতি আল নাহিয়ান প্রিন্স (৩৫) ও সদর উপজলার আউড়িয়া ইউনিয়নের নাকশী গ্রামের কৃষক গোলাম রসুল খান (৭০) ।
তবে তারা কোথায় চিকিৎসা নিচ্ছেন, তা জানা যায়নি।
নড়াইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী বলেন, ছাত্র আন্দোলনের নামে বিশৃঙখলা সৃষ্টির চেষ্টাকালে পুলিশ শর্টগানের গুলি ও টিয়ারশেল ছুড়েছে। আন্দোলনকারীরা পুলিশের একটি পিকআপ
ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাদের ছোড়া ইটের আঘাতে আমাদের পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
শরীয়তপুর শিক্ষার্থী- ছাত্রলীগ সংঘর্ষে আহত ৩০
শরীয়তপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ১০টি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়ে দেওয়া হয়।
রোববার বেলা ১১টা থেকে শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়কে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
থেমে থেমে প্রায় ২ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর ছাত্রলীগ পিছু হটে।
এরপর পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে আন্দোলনকারীরা শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে সড়কের দুইপ্রান্তে যানজটের সৃষ্টি হয়।
বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে জানিয়ে সখিপুর থানার ওসি মাসুদুর রহমান বলেন, সকালে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটলেও কোনো হতাহতের খবর তিনি পাননি।
বাগেরহাটে পুলিশের গাড়িতে আগুন, আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর
বাগেরহাটের রামপালে পুলিশের গাড়িতে আগুন দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এসময় তারা আওয়ামী লীগের একটি কার্যালয়ও ভাঙচুর করে।
রোববার দুপুরে রামপাল উপজেলার ফয়লাহাট এলাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের কর্মীরা অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ পুলিশের। পরে
সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে পৌঁছলে আন্দোলনকারীরা চলে যায়।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খান সাংবাদিকদের বলেন, রোববার দুপুরে আকষ্মিকভাবে রামপালের ফয়লাহাট এলাকায় লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল
বের করেন। মিছিল থেকে তারা পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে প্রথমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। পুলিশ সদস্যরা নেমে গেলে আন্দোলনকারীরা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন।
তিনি আরও বলেন, এ সময় আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগের একটি কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। পরে সেখানে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কুড়িগ্রামে আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ শতাধিক আহত
কুড়িগ্রামে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জাফর আলী, সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন মঞ্জু ও কয়েকজন পুলিশসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের ঘোষপাড়া এলাকায় এই সংঘর্ষ শুরু হয়। আন্দোলনকারীরা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও জেলা পরিষদ অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকে কোটা আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। কয়েক দফা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শতাধিক আহত হয়।
এর আগে সকালে কুড়িগ্রাম পৌরবাজারে টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের কার্যালয়ের সামনে দীপ্ত টিভির জেলা প্রতিনিধি ইউনুছ আলী, ঢাকা পোস্টের জুয়েল রানা এবং দুজন ক্যামেরা পার্সনকে লাঞ্ছিত করা হয়।
পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছোড়ে। কুড়িগ্রাম সদরে কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছে।”
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ জানান, নতুন করে বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ ও বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।
কেরানীগঞ্জে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষে আহত ২০
কেরানীগঞ্জে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন তারানগর ইউনিয়নের ঘাটারচর এলাকায় তিন রাস্তার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
এ সময় বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন এবং কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ে ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আন্দোলনকারীরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে।
চাঁদপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত ৩০
চাঁদপুরে ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে।
রোববার সকাল ১০টায় শহরের বাসস্যান্ড এলাকায় অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টায় ছাত্রলীগ অবস্থান নেয় পাশের ইলিশ চত্বরে। বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে অনেকে ইটের আঘাতে গুরুতর আহত হয়।
এদিকে ছাত্রলীগ ও সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুরাতন বাবস্ট্যান্ড থেকে সরে গিয়ে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কের সড়ক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইয়াসির আরাফাত, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আল-ইমরান খাঁনসহ পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
বরিশালে বিআরটিসি বাসে অগ্নিসংযোগ
বরিশাল নগরের সিএন্ডবি রোড এলাকায় একটি বিআরটিসি বাসে আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নগরের সিএন্ডবি রোড কালুখান বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় নগরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় ও আওয়ামী লীগের ব্যানার-পোস্টার সাঁটানো একটি অফিসে ভাঙচুর করা হয়েছে। দুটির কার্যালয়ের আসবাবপত্র সড়কে এনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যার আগ মুহুর্তে একদল পুলিশ ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে অবস্থান নেওয়া বিক্ষোভকারীদের দিকে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে চৌমাথা থেকে আমতলার মোড়ের দিকে অবস্থান নেয়। পুলিশ চলে যাওয়ার পর মহাসড়কটিতে আবারও বিক্ষোভকারীরা লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেয়।
সন্ধ্যার পরপরই হেলমেট পরা কিছু লোক এসে ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ের সামনের সড়কের উপর থাকা বিআরটিসি বাসটিতে আগুন দেয়। কাউন্সিলর কার্যালয়টি ভাঙচুর করে।
ফায়ার সার্ভিস বরিশাল সদর স্টেশনের স্টেশন অফিসার রবিউল আলামিন বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট সেখানে যায়। তবে বিক্ষোভকারীদের বাধার কারণে তারা ফিরে আসেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১১টি মোটরসাইকেলে আগুন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে।
রোববার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার স্কুল-কলজ রোডে এ ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীরা এ সময় কার্যালয়ের পাশে আওয়ামী লীগ নেতাদের ১১টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ এবং সাতটিতে ভাঙচুর করে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার দুই নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি দাবি করেন, “জামায়াত-শিবির ও ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।”
এছাড়া আন্দোলনকারীরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ সড়কের শিবতলা এলাকায় তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুর করেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
আন্দোলনকারীরা বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামজিদ সড়কের শান্তি মোড় ও টোলঘর এলাকায় অবস্থান নেয় ও রাস্তা অবরোধ করে রাখে ।
লালমনিরহাটে ২ উপজেলা পরিষদে হামলা
লালমনিরহাটে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের পৃথক পৃথক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে। এসব ঘটনায় পুলিশ, সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।
রোববার দুপুরে পাটগ্রাম পৌরসভার বাইপাস সড়কে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দুজন আহত হয়। দুপুরের দিকে পাটগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে থাকা বঙ্গবন্ধু মূর্যাল, উপজেলা সমবায় কার্যালয়, নিবাচন কার্যালয়, সমাজসেবা কার্যালয়, হিসাব রক্ষণ কার্যালয়, পৌর ভবন, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, ডাকবাংলো, একটি বেসরকারি ব্যাংকসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করা হয়।
অপরদিকে কালীগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বের হওয়া একটি বিক্ষোভ মিছিল কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভাণ্ডার বাজার ঘুরে উপজেলার পরিষদের পেছনের সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় শ্রমিকলীগ কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ সময় উপজেলা পরিষদে হামলা করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভাবনেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।
ইউএনও জহির ইমাম বলেন, “শিক্ষার্থীদের ব্যানারে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।”
আন্দোলনকারীরা শহরের মিশনমোড়ে পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবারবুলেট নিক্ষেপ করে সেখান থেকে সরে যায়। এ সময় যমুনা টিভির ক্যামেরাপার্সনসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৩ জন আহত হন।
গাজীপুরে থানায় হামলা, দুই বাসে আগুন, পুলিশ আহত
গাজীপুরে আন্দোলনকারীরা বাসন থানায় হামলা, দুটি বাসে আগুন ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান।
রোববার বিকালে বিক্ষোভকারীরা ভোগড়া বাইপাস সড়ক দিয়ে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় বাসন, জেলা পুলিশের জয়দেবপুর থানায় ইটপাটকেল ছুড়ে কাচের জানালা ভাঙচুর করেন।
পরে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে বাসন থানার এসআই আব্দুল্লাহ ইবনে সাইদ জানান।
দুপুরে আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও শ্রীপুরের মাওনা হাইওয়ে থানার সামনে রাখা দুই বাসে অগ্নিসংযোগ করেন।
হামলায় জয়দেবপুর থানার ওসিসহ কয়েক পুলিশ আহত হওয়ার দাবি করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে মাওনা হাইওয়ে থানার ওসি শেখ মাহবুবুর রহমান জানান, রোববার দেড়টার দিকে মাওনা এলাকায় আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভের এক পর্যায়ে মহাসড়কের পাশে রাখা বাস দুটিতে আগুন দেন।
কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদের নিচতলায় এবং কালিয়াকৈর থানা গেইট এলাকায় দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। চন্দ্রা এলাকা হাইওয়ে পুলিশ বক্স ও আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, কালিয়াকৈর ফায়ার স্টেশন অফিস ও চন্দ্রা বনবিভাগের রেঞ্জ অফিসে ইটপাটকেল ছুড়ে ভাঙচুর করেছেন আন্দোলনকারীরা।
তিনি আরও বলেন, “এছাড়া উপজেলার সফিপুর আনসার অ্যাকাডেমির ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে আনসার সদস্যরা আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করেছে বলে শুনেছি।“
জামালপুরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়-গাড়ি ও দোকানে আগুন, আটক ৪৯
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের আশপাশের পাঁচটি দোকান ও কয়েকটি মোটরসাইকেল পুড়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরে আন্দোলনকারীরা বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের ভেতরে ঢুকে বগারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুম প্রামাণিকের প্রাইভেট কার পুড়িয়ে দেয়। ভাঙচুরে করেছে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ও।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা একদফা দাবি বাস্তবায়নে রোববার সকালে বকশীগঞ্জ উপজেলা সদরের নুর মোহাম্মদ উচ্চবিদ্যালয় মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন আন্দোলনকারীরা।
মিছিলের পর মালিবাগ মোড়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় ৫০-৬০ জন দলীয় নেতাকর্মী কার্যালয় ছেড়ে চলে যান।
বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন তালুকদার বাবুলের অভিযোগ, “বিএনপি-জামায়াত জোটের সশস্ত্র ক্যাডাররা দলীয় কার্যালয় আগুন দিয়ে পুড়ে দিয়েছে। এ সময় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের পাশে পাঁচটি দোকান ও কয়েকটি মোটরসাইকেল পুড়ে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা।”
জামালপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. সোহেল মাহমুদ বলেন, “বকশীগঞ্জে অনেক ঘটনাই ঘটেছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”
মাদারগঞ্জ থানার ওসি নূর মোহাম্মদ প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বলেন, “জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ি বাজারে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল বের করলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেয়। ধাওয়া খেয়ে পৌরসভার মেয়র মির্জা গোলাম কিবরিয়া কবিরের মালিকানাধীন আরএস টাওয়ারে ঢুকে পড়ে মিছিলকারীরা। পরে পুলিশ সেখান থেকে ৪৯ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।”
ওসি নূর মোহাম্মদ বলেন, “আটক ৪৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে যারা প্রকৃত শিক্ষার্থী তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।”
নীলফামারীতে এমপির বাড়ি ভাঙচুর, পুলিশ-সাংবাদিকসহ আহত অর্ধশতাধিক
নীলফামারীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের বাড়ি, জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, পুলিশ বক্স ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
একইসঙ্গে জেলা বিএনপি কার্যালয়সহ বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের বাসাতেও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।
এ সময় ত্রিমুখি সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো জেলা শহর।
পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এসব ঘটনায় আহতের মধ্যে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ১৩ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকাল থেকে আন্দোলনকারীরা লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে বড়বাজার ট্রাফিক মোড়ে একত্রিত হন। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে চৌরঙ্গী মোড়ে যাওয়ার পথে বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপি-জামায়াতের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা ওই মিছিলে যোগ দেন।
মিছিলকারীরা চৌরঙ্গী অবস্থান নিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোড় ছেড়ে কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল ও কলেজে এলাকায় নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আদালত চত্বর থেকে বিএনপি ও জামায়াতপন্থী আইনজীবীদের সঙ্গে তাদের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী চৌরঙ্গী মোড়ের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেন।
তারা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দিকে গিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।
তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
এতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে পুরো জেলা শহরে।
ছত্রভঙ্গ আন্দোলনকারীরা পুনরায় চৌরঙ্গী মোড়ে ফিরে এসে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। সেখান ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ করে কার্যালয়ের আসবাবপত্র ও বিভিন্ন কাগজপত্রে।
তারা দুপুর দুইটার দিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের বাসভবনে দরজা ভেঙে প্রবেশ করে বিভিন্ন কক্ষে ভাঙচুর চালায়। বেরিয়ে যাওয়ার সময় সেখানে থাকা ১০টি মোটরসাইকেলে আগুন দেন।
পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদুনে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে পিছু হটেন আন্দোলনকারীরা।
বাসভবনে ভাঙচুরের বিষয়ে সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর বলেন, “যদি ছাত্ররা এই হামলায় জড়িত থাকে তাহলে তাদের কেউ মিসগাইড করেছে। আমি ছাত্রদের জন্য প্রতিমাসে ৭৫ হাজার টাকা বৃত্তি প্রদান করে থাকি। আমি ছাত্রদের ছাত্র হিসাবেই দেখি। তারা কোনো দলের এ বিবেচনা করি না। ছাত্র আন্দোলনের নামে আমার বাড়ি ভাঙচুর হওয়ার কথা নয়। আমার বাড়ি ভাঙচুর হওয়াকে কেন্দ্র করে যাতে আর কোনো প্রতিহিংসামূলক ঘটনা না ঘটে সেটাই আমি বলব। আমি চাই নীলফামারীতে শান্তি বজায় থাকুক।”
দুপুর ২টার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শহরে বেরিয়ে আসেন।
এদিকে, বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ তাদের কার্যালয়, জেলা বিএনপির সভাপতি ও সহসভাপতির বাড়ি ও একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায়।
জেলা বিএনপির সভাপতি আ খ ম আলমগীর সরকার বলেন, “সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। সেই আন্দোলনে আমরা সংহতি প্রকাশ করে তাদের সহযোগিতা করেছি মাত্র। মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছে শিক্ষার্থীরাই। আমরা ছিলাম না। আমি বিএনপির সভাপতি হওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাদের দলীয় কার্যালয়সহ আমার বাড়িতে, আমার বড় ভাইয়ের বাড়ি ও ছোট ভাইয়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করেছে। এছাড়াও জেলা বিএনপির সহসভাপতি মীর সেলিম ফারুকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর এবং সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শামীম শাহ আলম তমুর গাড়ির গ্যারেজে অগ্নিসংযোগ করলে তিনটি মাইক্রোবাস, একটি প্রাইভেট কার ও একটি ইজিবাইক পুড়িয়ে দিয়েছে।”
এদিকে, জামায়াতের জেলা শাখার সহকারী সেক্রেটারি আল ফারুক আব্দুল লতিফ দাবি করে বলেন, “সাধারণ শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক আন্দোলন করছে। তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আমি একজন আইনজীবী হিসেবে সংহতি প্রকাশ করেছিলাম, এটাই আমার অপরাধ। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকায় ক্ষিপ্ত হয়ে সরকার দলীয় লোকজন আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ি ঘর ভাঙচুর করেছে।”
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, “ইটপাটকেলে অন্তত ২৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। রাবার বুলেট, কাঁদুনে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। শহরজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।”
এক দফা দাবিতে উত্তাল দোহার, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ
এক দফা দাবিতে উত্তাল ঢাকার দোহার উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার লটাখোলা থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা।
মিছিলটি বাঁশতলা মোড় অতিক্রম করার সময় পেছন থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেন।
পরে হামলার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে ছাত্ররা এসে ধাওয়া দেন স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের।
এ সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকার দলীয় সমর্থকদের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থী-সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন উপজেলার রাইপাড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মো. রাজিব।
আহতরা দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
খাগড়াছড়িতে বিএনপির সাবেক এমপির বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর
খাগড়াছড়িতে বিএনপির সাবেক সাংসদ ওয়াদুদ ভূঁইয়ার বাসভবনে বৈঠকে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমএন আফসার অভিযোগ করে বলেন, “বেলা ২টার দিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সাংসদ ওয়াদুদ ভূঁইয়ার বাড়িতে হামলা করে। এসময় বাড়ির কাচের জানালা, কাচের প্রাচীর, আসবাবপত্রসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয়। ”
তিনি আরো অভিযোগ করেন, “আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ওপেন গুলি করে। তারা আমাদের ৫ জন নেতাকর্মীকে হামলা করে আহত করেছে। আমরা বিচার চাই। জনগণ এর বিচার করবে।”
তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে খাগড়াছড়ি পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জিৎজয় ত্রিপুরা বলেন, “শেখ হাসিনার প্রশ্নে ছাত্রলীগ কোনো আপস করবে না। নৈরাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ সবসময় রাজপথে থাকবে। রাষ্ট্রের সম্পদ বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।”
মৌলভীবাজারে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ
জেলার সব উপজেলায় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হলেও মৌলভীবাজার সদরে ছাত্রলীগ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েক দফা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন ও দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে আহতও হয়েছেন কয়েকজন।
মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, “দুপুরের দিকে শহরের চৌমুহনী এলাকায় কিছু উত্তেজনা দেখা দিলে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এখন পরিবেশ শান্ত রয়েছে।”
এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংগঠিত হওয়ায় মৌলভীবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, মৎস্যজীবী লীগ ও ছাত্রলীগ রাস্তায় বের হয়ে প্রতিবাদ জানায়।
গোড়াই হাইওয়ে থানায় অগ্নিসংযোগ, ওসিসহ আহত ৭
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় গোড়াই হাইওয়ে থানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় থানার ওসিসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া পুলিশের চারটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।
রোববার বিকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের গোড়াই হাইওয়ে থানায় এ ঘটনা ঘটে।
পরে মির্জাপুর থানা পুলিশের সদস্যরা গিয়ে গোড়াই পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করেন।
গোড়াই হাইওয়ে থানার ওসি আদিল মাহমুদ জানান, আন্দোলনকারীরা হঠাৎ করে গোড়াই থানায় হামলা চালায়। পরে তারা ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়।
“আন্দোলনকারীদের হামলায় এতে আমিসহ পুলিশের সাতজন সদস্য আহত হয়েছি”, বলেন ওসি আদিল মাহমুদ।
মির্জাপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, “আন্দোলনকারীরা থানা ঘেরাও করে ভাঙচুরের সময় গুলির শব্দ শুনতে পাই। বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে থানার সামনে আগুন নেভাতে গেলে আন্দোলনকারীদের ধাওয়ায় সেখান থেকে ফিরে আসতে হয়েছে।”