পারিবারিক কলহের জেরে ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে আরজুকে হত্যা করে লাশ আঠারোবাঁকি নদীতে ফেলে দেওয়া হয় বলে জানান পিপি।
Published : 29 Jan 2025, 11:22 PM
খুলনার রূপসা উপজেলায় স্ত্রী হত্যার দায়ে এক পুলিশ কনস্টেবলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বুধবার খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. কেরামত আলী আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) আলফাজ হোসেন শেখ।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া লিটন কুমার দেবনাথ খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার বাসিন্দা। সবশেষ তিনি রূপসার শিয়ালী পুলিশ ক্যাম্পে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মামলার বরাতে পিপি আলফাজ হোসেন বলেন, ২০২০ সালের ২ মার্চ বিকালে রূপসার শিয়ালী গ্রামের একটি ডোবা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় শিয়ালী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই মো. ফিরোজ বাদী হয়ে রূপসা থানায় অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে মামলা করেন।
তিনি বলেন, তদন্তের এক পর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে, অজ্ঞাত ওই নারীর নাম আরজু আক্তার। ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি লিটন হলফনামার মাধ্যমে নিজের নাম পরিবর্তন করে আরজুকে বিয়ে করেন।
পরে একই বছরের ১৯ অক্টোবর লিটন কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে বদলি হয়ে খুলনায় আসেন এবং রূপসা উপজেলার পুঁটিমারী এলাকায় ভাড়া বাসায় তারা বসবাস শুরু করেন। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। এক পর্যায়ে আরজু বাবার বাড়ি চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
আরজু চলে গেলে চাকরির ক্ষতি হতে পারে, এই আশঙ্কায় লিটন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলফাজ হোসেন।
তিনি বলেন, “পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে আরজুকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন লিটন। লাশ যেন ভেসে না ওঠে, সেজন্য লোহার পাতসহ মৃতদেহটি আঠারোবাঁকি নদীতে ফেলে দেন তিনি।”
হত্যার পর লিটন আরজু বাচ্চা রেখে পালিয়ে গেছেন বলে এলাকায় প্রচার করেন বলে জানান পিপি আফজাল।
তিনি বলেন, মৃতদেহ উদ্ধারের পর স্থানীয় লোকজন আরজুর বলে শনাক্ত করলেও লিটন তা অস্বীকার করেন। পরে ফরেনসিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে মৃতদেহটি আরজুর বলে নিশ্চিত করে পুলিশ।
পরে আদালতের নির্দেশে আগের হওয়া মামলায় পুলিশ কনস্টেবল লিটনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আফজাল।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা পিবিআইয়ের পরিদর্শক লুৎফর রহমান ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর লিটন কুমারকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র প্রদান করেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী।