“ছোটবেলায় মেলায় গিয়ে পুঁটলি ভরে এসব মিষ্টি কিনতাম। আর খেতে খেতে মেলায় ঘুরতাম।”
Published : 14 Apr 2025, 05:27 PM
বৈশাখী মেলায় আসা লোকজনের হাতে হাতে মুড়ি-মুড়কি, কদমা-বাতাসার প্যাকেট। কারো হাতে ঝুলছে পাঁচমিশালী মিষ্টির হাঁড়ি।
কড়াইয়ে গরম রসে চুবিয়ে তোলা জিলাপি খাওয়ার জন্য যেন তর সইছে না। দোকানের সামনে জিলাপি কেনার জন্য লম্বা লাইন।
এ সব দৃশ্য চোখে পড়ল কুমিল্লার টাউন হল মাঠের বৈশাখী মেলায়। সোমবার সকালে সেখানে ঘুরে খুব বেশি দোকান চোখে পড়েনি। তবে হাতেগোনা যে কয়েকটি শুকনো মিষ্টির দোকান বসেছে, সেগুলোতে বেশ ভিড় দেখা গেছে।
রঙ-বেরঙের এসব খাবারে শিশুদের আগ্রহ বেশি। তবে বড়রাও কম যান না; বেশ আয়েশ করেই টপাটপ মিষ্টি মুখে পুরে নিতে দেখা গেল তাদের।
মেলায় সুজন চন্দ্র সাহার দোকানে গিয়ে অন্তত ৬০ পদের শুকনো মিষ্টির পসরা দেখা গেল। তার দ্খোনে জিলাপিও ভেজে দেওয়া হয় গরম গরম।
সুজন বলেন, তার দোকানে চিনির মুরালি ও গুড়ের মুরালিসহ চার রকমের মুরালি বিক্রি হয় ২৮০ টাকা কেজিতে। বাদামের চাপটি ৩০০ টাকা কেজি, তারা বিস্কুট ২০০ টাকা, মুড়ির মোয়া ২৪০ টাকা আর কাজু বাদামের মিষ্টি ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেন তিনি।
এছাড়া গুড় মাখানো খই ২০০ টাকা কেজি, বাতাসা ২৮০ টাকা, পেরা সন্দেশ ৪০০ টাকা কেজি, সন্দেশ ৪৫০ টাকা কেজি, চমচম ২০০ টাকা আর জিলাপি ২০০ টাকা কেজিতে তার দোকানে মিলবে বলে জানান তিনি।
এ ব্যবসায়ী বলেন, “আমরা সারা বছরই বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে এসব খাবার বিক্রি করি।গ্রামের বাজারে কিংবা শহরের বিভিন্ন শিল্পমেলায় আমাদের দোকান বসে। তবে বৈশাখী মেলার জন্যই অপেক্ষা বেশি থাকে। মেলা উপলক্ষে নতুন করে সব বানানো হয়। বিক্রিও হয় বেশি।”
টাউন হল মাঠে বৈশাখীর মেলায় কথা হয় লেখক জহির শান্তর সঙ্গে। প্রথম শ্রেণী পড়ুয়া সন্তান কাব্যর হাত ধরে মেলায় ঘুরছিলেন তিনি।
শৈশবের স্মৃতিচারণ করে জহির বলেন, “কাব্য এর আগে কখনো মেলায় মিষ্টির এত আয়োজন দেখেনি। আসলে আমাদের শৈশবের স্মৃতিচারণ করতে আর সন্তান মেলা দেখাতে এখানে আসা। শহুরে নতুন প্রজন্মের কাছে মেলা, মুড়ি- মুড়কি, কদমা, বাতাসা এসব অপরিচিত।
“অথচ আমরা ছোটবেলায় মেলায় গিয়ে আগে পুঁটলি ভরে এসব কিনতাম। আর খেতে খেতে মেলায় ঘুরতাম। আজকেও যেন সেই শৈশবে ফিরে গেলাম।”
আলোকচিত্রী আলমগীর হোসেন মাটির পাতিল ভরে পরিবারের জন্য কিনেছেন পাঁচমিশালি। বাসায় নিয়ে তাদের উপহার দেবেন বলে জানালেন।
তিনি বলেন, আটা, ময়দা, চিনি, গুড়, তেল, ডাল এসব দিয়েই বানানো হয় এসব মিষ্টি খাবার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব খাবারের দাম বেড়েছে কিন্তু আমাদের খাবারের আগ্রহ কমেনি।
“তবে খোলা জায়গায় যে পরিমাণ ধুলোবালি ওড়ে, এগুলো বাচ্চাদের খাওয়ানোর ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।”