শুক্রবার রাতে বাগেরহাট শহরে দুর্বৃত্তের ছোড়া গুলিতে তিনি নিহত হন।
Published : 13 Nov 2022, 03:53 PM
বাগেরহাটে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম ভূঁইয়া তানুকে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোববার দুপুরে বাগেরহাট জেলার পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
এদিকে এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা বাদী হয়ে ফরিদ শেখকে প্রধান করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৭/৮ জনকে আসামি করে বাগেরহাট মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এর আগে শনিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলা বালিপাড়া গ্রাম থেকে মামলার এজাহারনামীয় ৮ জনসহ নয়জনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাকি একজন সন্দেহভাজন। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি পিস্তল, গুলি ও ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তররা হলেন-ফরিদ শেখ (২৮), মনির (২৬), রাতুল (২৭), সিরাজুল (২৭), আলামিন (৩০), সুমন (২৬), সোহাগ (২৫), মুকুল শেখ (৫৩) ও কবির (৫০)। তাদের সবার বাড়ি বাগেরহাট শহরের পূর্ব বাসাবাটি এলাকায়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, “বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি এলাকায় যে হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত হয়েছে তা কোনো রাজনৈতিক আধিপত্য নয়, এটি স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হয়েছে। ঘটনার পর তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গেছে, নিহত নূরে আলম ভূঁইয়া তানুর সঙ্গে আসামিদের পূর্ব বিরোধ ছিল। সেই জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।
বাগেরহাটে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে গুলি করে হত্যা
“তানু স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত নেতা ছিলেন। ২০২১ সালে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অধিকাংশ আসামিদেরই আমরা ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।”
গ্রেপ্তাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছ স্বীকার করেছে বলেও দাবি করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা সবাই প্রতিবেশী জানিয়ে পুলিশ সুপার আরিফুল হক আরও বলেন, আসামিরা সবাই পাশাপাশি বসবাস করেন। এই ঘটনার জন্য তারা অনুতপ্ত। তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে।
গত শুক্রবার রাত পৌনে দশটার দিকে বাগেরহাট শহরের পূর্ব বাসাবাটি পদ্মপুকুরপাড় এলাকায় দুর্বৃত্তের ছোড়া গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নূরে আলম ভূঁইয়া তানু (৩৫) নিহত হন। এ ঘটনায় স্থানীয় ফরিদ নামে এক যুবক জড়িত বলে অভিযোগ করে আসছিলো তানুর পরিবার। ঘটনার পরপরই এই কাণ্ডে কারা জড়িত রয়েছে তা নিশ্চিত হয় পুলিশ। এরপর পুলিশের একাধিক দল তাদের ধরতে অভিযান শুরু করে।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোর্য়াটার) রাসেলুর রহমান, বাগেরহাট সদর মডেল থানার ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম, পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র এ এস এম আশরাফুল আলমসহ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।