দুই লাশ মর্গে এবং একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বজনদের হস্তান্তর করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
Published : 24 Feb 2024, 08:21 PM
গাজীপুরে গত ১৫ ঘণ্টায় নারী, কিশোর ও যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
পৃথক ঘটনায় এই তিন মৃত্যুর কারণ ‘আত্মহত্যা’ বলে দাবি স্বজন ও স্থানীয়দের।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলার শ্রীপুরের নগরহাওলা গ্রাম থেকে এক গৃহবধূর, শনিবার দুপুরে শৈলাট গ্রাম থেকে এক যুবকের ও কালিয়াকৈর থেকে অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট থানাগুলোর পুলিশ জানায়।
ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে দুটি লাশ রাখা হয়েছে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বজনদের কাছে অপর লাশ হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
নিহতরা হলেন- শেরপুরের নকলা উপজেলার চরকুইয়া গ্রামের সানোয়ার হোসেনের স্ত্রী মুন্নী বেগম (২১), গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের শৈলাট গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে মনু তালুকদার (২৩) এবং টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার লাউখোলা গ্রামের আরিফ হোসেনের ছেলে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমুল (১৪)।
তাদের মধ্যে মুন্নী স্বামীর সঙ্গে শ্রীপুরের নগরহাওলা গ্রামের মো. মাজাহারুল ইসলামের বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন।
এ ছাড়া, অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমুল তার পরিবারের সঙ্গে কালিয়াকৈর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ খাজারটেক এলাকার দুলাল উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকছিল। তার বাবা রাজমিস্ত্রি ও মা স্থানীয় পোশাক কারখানায় কাজ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, “রাতে পারিবারিক বিষয়ে সানোয়ার ও তার স্ত্রী মুন্নীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সানোয়ার স্ত্রীকে মারধর করেন। ধারণা করছি, এ কারণে মুন্নী ঘরের বাইরে গিয়ে কাঁঠালগাছের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।”
শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের শৈলাট গ্রাম থেকে মনু তালুকদারের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহতের স্বজন আফতাব উদ্দিন বলেন, “মনু দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি দুপুরে ঘরের দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে আত্মীয়-স্বজনরা টের পেরে ঘরের দরজা ভেঙে ঝুলন্ত দেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়।”
মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিন্টু মোল্লাহ্ বলেন, “খবর পেয়ে শনিবার সকালে গৃহবধূ ও দুপুরে যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।”
এদিকে, পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শনিবার বিদ্যালয় থেকে ফিরে বাবার কাছে ৫০০ টাকা চায় নাজমুল। টাকা চাওয়ার কারণ ও টাকা না থাকার বিষয়টি নাজমুলকে জানায় তার বাবা। এতে নাজমুল বাবা-মায়ের সঙ্গে অভিমান করে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়।
পরে তার কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ঘরের আঁড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তাকে ঝুলতে দেখা যায়। দ্রুত নামিয়ে গাজীপুরের জিরানীতে শেখ ফজিলাতুনন্নেসা মুজিব বিশেষশায়িত হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক ছেলেটিকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে কাশিমপুর মেট্টো থানার পুলিশ ওই হাসপাতাল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।
ওই থানার ওসি সানোয়ার জাহান জানান, স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিহতের লাশ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।