“এ ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তার জন্য পরিবহন মালিক, চালক পুলিশকে আরও সচেতন হতে হবে।”
Published : 29 Dec 2024, 05:51 PM
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোলপ্লাজায় বাসের ধাক্কায় প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল দুমড়ে-মুচড়ে ছয়জন নিহতের ঘটনায় সেই বাসের মালিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মাদারীপুরের শিবচর থেকে শনিবার রাতে ‘বেপারী পরিবহনের’ মালিক ডাবলু বেপারীকে গ্রেপ্তার করে হাসাড়া হাইওয়ে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ডাবলু বেপারী কাঁঠালবাড়ি এলাকার সিদ্দিক বেপারীর ছেলে। রোববার দুপুরে হাসাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানিয়েছে।
হাসাড়া হাইওয়ে থানার আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত ডিআইজি আ ক ম আক্তারুজ্জামান বসুনিয়া।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “দুর্ঘটনার আগের দিন বাসটি গ্যারেজ থেকে বের করা হয়। বাসের ফিটনেস ছিল না। আর চালকের লাইসেন্সও মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল। ওইভাবেই বাসটি চালানো হচ্ছিল।”
এর আগে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কেরানীগঞ্জ উপজেলায় এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় মাওয়াগামী লেনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি প্রাইভেটকারকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় প্রচণ্ড গতিতে আসা বেপারী পরিবহনের একটি বাস।
এতে দুমড়ে-মুচড়ে একটি প্রাইভেটকারটি। এ ছাড়া দুর্ঘটনা কবলিত হয় আরও একটি মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল। প্রাণ হারায় ছয়জন।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন- মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নন্দনকোনা গ্রামের বাসিন্দা ও দুর্ঘটনা কবলিত প্রাইভেট কারের নুর আলমের স্ত্রী আমেনা আক্তার (৪০), তার বড় মেয়ে ইসরাত জাহান ইমি (২৪), ছোট মেয়ে রিহা মনি (১১), আমেনার মেঝো মেয়ের ছেলে আইয়াজ হোসেন (২) এবং মোটরসাইকেলের চালক সুমন মিয়ার স্ত্রী রেশমা আক্তার (২৬) ও তার ছেলে মো. আবদুল্লাহ (৭)।
দুর্ঘটনার পর যাত্রীবাহী বাসের চালক মোহাম্মদ নূরু উদ্দিন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরে শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে র্যাব-১০ এর একটি টিম তাকে আটক করে।
এরপর শুক্রবার মধ্যরাতে চালক নুরুদ্দিনকে গ্রেপ্তারের খবর জানান র্যাব-১০ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার তাপস কর্মকার।
এ দুর্ঘটনায় নিহত আমেনা বেগমের ভাই নুরুল আমীন বাদী হয়ে শনিবার রাতে হাসাড়া হাইওয়ে থানায় মামলা করেন বলে থানার ওসি মো. আব্দুল কাদের জিলানী জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আক্তারুজ্জামান বসুনিয়া বলেন, “এ ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তার জন্য পরিবহন মালিক, চালক ও চালকের সহকারীসহ পুলিশকে আরও সচেতন হতে হবে।
এক্সপ্রেসওয়েতে ঝরল ৫ জনের প্রাণ
“এতে যদি আমাদের পুলিশের কোনো সদস্যের অবহেলা থাকে বা তাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে যদি চালকরা অবৈধ পথ অবলম্বন করে গাড়ি চালায় এবং তার ফলে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে যদি প্রমাণিত হয় তাহলে ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য এরই মধ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “আশা করি, পরিবহন মালিক, চালকসহ সবার সহযোগিতা পেলে আমরা এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে সক্ষম হব।”
এই ঘটনায় গ্রেপ্তার মালিক ও চালককে আদালতে তুলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি।
হাসাড়া হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী, এসআই রহমান মিয়াসহ সাংবাদিকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।