বৃহস্পতিবার কোনো একটি এনজিও থেকে ঋণ পাওয়ার কথা ছিল।
Published : 04 Jul 2024, 10:48 PM
বরগুনার আমতলী উপজেলায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা সদরের বন্দর প্রাইমারি সড়কের রেভিনিউ মসজিদের একটি দোকান থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানান আমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমির হোসেন।
নিহত খোকন কাজী (৩৫) বরিশাল সিটি করপোরেশনের চার নম্বর ওয়ার্ডের ইয়াছিন কাজীর ছেলে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, খোকন ছয় বছর আগে আমতলী বন্দর প্রাইমারি সড়কের রেভিনিউ মসজিদের একটি ঘর ভাড়া নিয়ে চায়ের দোকান দেন। চার বছর আগে বরিশালের পশ্চিম কাউনিয়া এলাকার লাভলু হাওলাদারের মেয়ে ডালিয়া বেগমকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। পরিবার নিয়ে তিনি দোকানের সামনে সালেহা বেগমের বাসায় ভাড়া থাকতেন।
মৃত্যুর আগে খোকন কাজী নিজের ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ার কথা লেখেন। বৃহস্পতিবার কোনো একটি এনজিও থেকে ঋণ পাওয়ার কথা ছিল। সেই টাকায় ধারদেনা পরিশোধ করার কথা। কিন্তু সেই ঋণ তিনি পাননি বলেও স্ট্যাটাসে লিখেছেন।
স্থানীয়রা জানান, খোকন নিজের চায়ের দোকানের দরজা বন্ধ করে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। গোঙানির শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা দরজা খুলে তাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ তাকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
খোকনের স্ত্রী ডালিয়া বেগম বলেন, “দেড়টার সময় বাসায় এসে আমার ফোন দিয়ে কার সঙ্গে যেন কথা বলে আবার বের হয়ে যায়। তখন আমার সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। এটাই শেষ দেখা। এর কিছুক্ষণ পর শুনি সে আত্মহত্যা করেছে।”
তবে ঋণের ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান খোকনের স্ত্রী।
রবিউল নামে খোকনের এক বন্ধু বলেন, “দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে খোকন আমার মোবাইলে কল দিয়েছিল। কিন্তু আমি তখন নামাজে ছিলাম তাই ফোন রিসিভ করতে পারিনি। নামাজ শেষ করে শুনি খোকন আত্মহত্যা করেছে। শেষ সময়ে কী বলতে চেয়েছিল তা আর শোনা হয়নি।”
খোকনের ভাই মো. মোজাম্মেল কাজী বলেন, “২০১৮ সালে খোকন আমতলী আসে। এর আগে সে বরিশালে দর্জির কাজ করতো। আমতলী যাওয়ার পর কী কারণে এত দেনা হয়েছে তা আমাদের জানা নেই।”
খোকনের মা মমতাজ বেগম কেঁদে কেঁদে বলছিলেন, “মোর পোলাডায় এই রহম ক্যাইরা মইর্যা গ্যালো। টাহা লাগলে মোর সব বেইচ্যা টাহা দেতাম। কির লইগ্যা তুই মোগো সব কান্দাইয়া চইল্যা গেলি।”
আমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমির হোসেন সেরনিয়াবাত বলেন, “লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”