ডিসি বলেন, “দুটি ইউনিয়নের বাসিন্দারা বিগত দিনের জলাবদ্ধতার অভিযোগ করেছেন। তাদের একটি লিখিত আবেদন পেয়েছি। সেটি অবশ্যই বিবেচনায় থাকবে।”
Published : 28 Jan 2025, 11:25 PM
বাগেরহাটে প্রবাহমান সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার আশঙ্কায় ছয়টি জলমহালের ইজারা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে মঙ্গলবার দুপুরে জলমহাল ইজারা বাতিলের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
স্মারকলিপিতে সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ও ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের ছয়টি সরকারি খালের ইজারা বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।
খালগুলো হচ্ছে- কাড়াপাড়া ইউনিয়নের মড়গা গজি খাল ও মির্জাপুর খাল; ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের ইমামবাড়ি খাল, শশীখালী খাল-১, শশীখালী খাল-২ ও মান্দারতলা খাল। এই খাল সংলগ্ন এলাকায় কয়েক হাজার মানুষের বসবাস রয়েছে।
সম্প্রতি এই খালগুলো ইজারা দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সঞ্জীব দাশ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ১০টি খাল তিন বছরের জন্য ইজারা দিতে ৫ জানুয়ারি নিবন্ধিত মৎস্যজীবী সমিতি সংগঠনগুলোকে অনলাইনে জলমহল ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে আবেদন দিতে আহ্বান করে। আবেদনের শেষ দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি।
এলাকাবাসীর পক্ষে সৈয়দ নাছির আহমেদ মালেক বলেন, কাড়াপাড়া ও ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের বাসিন্দারা বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগে পড়েন। জলাবদ্ধতার একটাই কারণ, সরকারি খালগুলোর পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে সরকারের কাছ থেকে ইজারা নেওয়া কিছু লোক মাছের চাষ করে আসছেন। এই খালগুলো পানি নিষ্কাশনের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।
“এই খালগুলো ইজারা দেওয়া হলে আগামী বর্ষা মৌসুমে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন দুর্বিসহ হয়ে ওঠবে। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়বে। এই মাছ চাষিরা বর্ষা মৌসুম এলে খালের সরকারি স্লুইচ গেইটগুলো বন্ধ করে দিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। এতে অসংখ্য মাছের ঘের ভেসে যায়। পরে ইজারা নেওয়া মাছ চাষিরা স্লুইচ গিইট ছেড়ে ভেসে যাওয়া মাছ ধরে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হন।”
সৈয়দ নাছির আহমেদ মালেক বলেন, “তাই জনস্বার্থে ইজারা না দিতে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন জানিয়েছি। সরকার যদি এসব খাল দিয়ে রাজস্ব আয় করতে চায় তাহলে স্থানীয় উপকারভোগীরা প্রয়োজনে সেই টাকা জমা দেবে। জনগণের স্বার্থে জেলা প্রশাসক বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।”
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান বলেন, “১০টি জলমহাল দীর্ঘদিন ধরে ইজারা দেওয়া হচ্ছে। সরকার ইজারা দিয়ে রাজস্ব আয় করে থাকে। ১৫ ফেব্রুয়ারি খালের ইজারা আবেদনের শেষ দিন। যারা ভবিষ্যতে ইজারা পাবেন তারা যাতে সরকারি আইনের বাইরে না যায় সেদিকে কঠোর নজরদারি করবে জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি।
“দুটি ইউনিয়নের বাসিন্দারা বিগত দিনের জলাবদ্ধতার অভিযোগ করেছেন। তাদের একটি লিখিত আবেদন পেয়েছি। সেটি অবশ্যই বিবেচনায় থাকবে।”