“২৮ ফেব্রুয়ারি নাগাদ বাঁধের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত সময়ে শেষ হবে।”
Published : 01 Mar 2025, 08:16 PM
নেত্রকোণায় হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধের সংস্কার কাজে অনিয়ম, অব্যবস্থাপনার অভিযোগ ও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে।
শনিবার দুপুরে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ‘হাওর বাঁচাও আন্দোলনের’ ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে ‘হাওর বাঁচাও আন্দোলনের’কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোনায়েম খান, জেলা কমিটির সভাপতি অহিদুর রহমান, শামীম তালুকদারসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মোনায়েম খান বলেন, “জেলায় হাওরাঞ্চলের ৪৪ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল আবাদের সঙ্গে এক লাখ ৮০ হাজার কৃষকের জীবন-জীবিকা জড়িত। এই ফসল রক্ষা বাঁধ সংস্কারের সঙ্গে সম্পৃক্তরা সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে পারেননি। এই বাঁধ নিয়ে অনিয়ম যেমন করা হয়েছে, তেমনি সরকার নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা হয়নি।”
জেলা ‘হাওর বাঁচাও আন্দোলনের’ সভাপতি অহিদুর রহমান বলেন, “ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় হাওর পাড়ের সবাই ফসল নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। দ্রুত সঠিক নিয়ম মত বাঁধের কাজ শেষ করার দাবি জানায়।”
সঠিক মান বজায় রেখে দ্রুত ফসল রক্ষা বাঁধ কাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন কৃষকেরা।
খালিয়াজুরী উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের কৃষক আমির উদ্দিন বলেন, “আমরা আগে থেকেই বইল্যা আইতাছি প্রকল্পের কামে ধীর গতি চলতাছে। এই কারণে ফসলহানির শংকায় আমরা রাইতে ঘুম হয় না। কিন্তু আমরার কথা কানে তুলে নাই। অহনতো সরকারের সময়ও শেষ অইয়া গেছে। বান্ধের কামতো শেষ অয়নাই।”
একই এলাকার কৃষক রহিম উদ্দিন বলেন, “খেত করছি ঋণ দাওর কইরা। বান্ধের কাজ ঢিলেমছি করতাছে। এভাবে চললে বন্যা আইয়া পসল লইয়া যাইব গা। হেরা তাড়াতাড়ি হাওরের ফসল রক্ষা বাধেঁর কাজ শেষ করুক।“
আরেক কৃষক আয়েন উদ্দিন বলেন, “ভাটি এলাকা। এইহানের ফসল বান্ধের মধ্যেই টিকে। বাঁধ যদি তাড়াতাড়ি না হয় তাইলে ফসল লইয়া যাইব বন্যায়। বাঁধে মাটিও ফেলানো হইতাছে কম। দ্রুত বাঁন্ধের কাম শেষ করার দাবি করতাছি।”
নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, জেলায় হাওরাঞ্চলে এক ফসলি বোরো জমির ফসল আগাম বন্যা থেকে রক্ষায় বাঁধের কাজ বাস্তবায়ন করছে পাউবো। জমির ফসল আগাম বন্যা থেকে রক্ষায় ডুবন্ত বাঁধ রয়েছে ৩৬৫ কিলোমিটার।
এরমধ্যে ১৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয় বরাদ্দে ১৯১ টি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৫ ডিসেম্বর ১৪৬ দশমিক ১২ কিলোমিটার বাঁধের সংস্কার কাজে হাত দেয় পাউবো।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান বলেন, “২৮ ফেব্রুয়ারি নাগাদ বাঁধের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত সময়ে শেষ হবে।”
প্রকল্পে কোনো অনিয়ম হলে ছাড় দেওয়া হবে না বলেন বলে জানান তিনি।