হাজংরা রাসিমণিকে তাদের জনগোষ্ঠীর মাতা এবং শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রামের প্রতীক মনে করেন বলে জানান বক্তারা।
Published : 31 Jan 2025, 11:46 PM
নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলায় টংক ও জমিদার প্রথা উচ্ছেদ আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী শহীদ হাজংমাতা রাশিমণির ৭৯তম প্রয়াণ দিবস পালিত হয়েছে।
শুক্রবার দিনব্যাপী ‘বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির’ আয়োজনে উপজেলার বহেরাতলী গ্রামের ‘রাশিমণি স্মৃতিসৌধ’ চত্বরে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।
সকালে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন হাজং মাতা রাশিমণি মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য বিপুল হাজং। এরপর স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে রাশিমণির প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
পরে স্মৃতিসৌধ চত্বরে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
একাডেমির পরিচালক গীতিকবি সুজন হাজংয়ের সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পল্টন হাজং, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ জিন্নাহ, উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, কবি জন ক্রসওয়েল খকসী, কেন্দ্রীয় হাজং ছাত্র সংগঠনের সভাপতি জিতেন্দ্র হাজং, উপজেলা হাজং ছাত্র সংগঠনের সভাপতি অন্তর হাজং এবং চিত্রশিল্পী রুপক হাজং বক্তব্য দেন। পরিচালনা করেন নৃত্য শিক্ষক মালা মার্থা আরেং ও দোলন হাজং।
সুজন হাজং বলেন, হাজংরা রাসিমণিকে তাদের জনগোষ্ঠীর মাতা এবং শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে মনে করেন। টংক আন্দোলনে তার অসীম সাহসিকতা এবং বীরত্বপূর্ণ কৃতিত্বের জন্য হাজংরা তাকে বীরাঙ্গনার মর্যাদা দিয়েছেন।
আলোচনা শেষে বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি ও আদিবাসী সংগঠনের শিল্পীরা সাংস্কৃতিক পরিবেশন করেন। শেষে চিত্রাঙ্কন ও সংগীত প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
১৯৪৬ সালে ৩১ জানুয়ারি তৎকালীন ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার বাহিনীর সৈনিকেরা জোরপূর্বক কুমুদিনী হাজংকে তুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেদিন হাজং নেত্রী রাশিমণি হাজং ও কৃষক নেতা সুরেন্দ্র হাজংয়ের নেতৃত্বে শতাধিক নারী-পুরুষ দা, খুন্তি, কুড়াল নিয়ে পথরোধ করেন। এক পর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধে গুলিতে রাশিমণি হাজং ও সুরেন্দ্র হাজং শহীদ হন।