“ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে সুস্থ ধারার রাজনীতিকে এগিয়ে নিতে ছাত্রশিবির সর্বদা প্রস্তুত।”
Published : 30 Oct 2024, 10:24 AM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও প্রচার সম্পাদক প্রকাশ্যে এসেছে।
মঙ্গলবার রাতে সংগঠনটির প্রচার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাকি স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি হারুনুর রশিদ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৬তম ব্যাচ, সাধারণ সম্পদক মহিবুর রহমান বাংলা বিভাগের ৪৭তম ব্যাচ এবং প্রচার সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন সাকি দর্শন বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
বিবৃতিতে বলা হয়, “৫ অগাস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে সুস্থ ধারার রাজনীতিকে এগিয়ে নিতে ছাত্রশিবির সর্বদা প্রস্তুত। আবাসিক হলগুলোতে কোনো ধরনের দখলদারি, চাঁদাবাজি ও মাদকের বিস্তার রোধে ছাত্রশিবির অঙ্গীকারাবদ্ধ।
“বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ আনা, গবেষণামুখী শিক্ষাব্যবস্থার বাস্তবায়ন, সুস্থ ধারার সংস্কৃতির বিকাশ ও নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে ছাত্রশিবির কাজ করে যাবে। ছাত্রশিবির চায় ছাত্র সংসদকেন্দ্রীক সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরে আসুক।”
এতে আরও বলা হয়, “দীর্ঘদিন ধরে কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ছাত্রশিবিরকে আদর্শিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে নিষিদ্ধের একটি বয়ান তৈরি করে এসেছে। আদতে এই বয়ানের কোনো সত্যতা নেই। ১৯৮৯ সালের ১৫ অগাস্ট অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১৪২তম সভায় শিবির নিষিদ্ধের প্রস্তাব এলেও এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। বরং সভার সিদ্ধান্ত ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আওতাবহির্ভূত বিধায় এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব নয়’।”
ছাত্ররাজনীতির যৌক্তিক সংস্কার বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী দুঃশাসনের কারণে রাজনীতির সংজ্ঞাই পাল্টে গেছে। আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের রাজনীতি চাই। চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার আলোকে চলমান রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক সংস্কার হোক।”
ছাত্রশিবির জাবি শাখার সভাপতি হারুনুর রশীদ রাফি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা রাজনৈতিক আগ্রাসনের শিকার। আমাদের ন্যায্য অধিকার হরণ করে, বিগত ৩৫ বছর ধরে অন্যায়ের জবাব দেওয়ার বিন্দুমাত্র সুযোগ আমাদের দেওয়া হয়নি।?
“আমরা মনে করি বৈষম্যহীন এই নতুন বাংলাদেশে ছাত্রশিবির সত্যকে সামনে রেখে সকল ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সহাবস্থানের দ্বারা শিক্ষার্থী ও শিক্ষাবান্ধব সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা অব্যাহত রাখবে।"
কেনো রাজনীতি করতে দেওয়া হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, "১৯৮৯ সালের একটি অসত্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আমাদের ওপর আগ্রাসন আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী আমরা নিষিদ্ধ না। সিনেট-সিন্ডিকেট কিংবা একাডেমিক কাউন্সিলের কোনো সভায় শিবির নিষিদ্ধ হয় নাই। তখনকার সময়ের ছাত্র সংগঠনগুলো শিবিরের রাজনীতি চায়নি এটা সত্য।
“কিন্তু এখনকার শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনগুলো ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই শিবিরের রাজনীতি চায়।"
১৯৮৯ সালে ছাত্রদলের কবীর হত্যাকাণ্ডের পর পুরো দায় শিবিরের ওপর চাপানোটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল বলেও দাবি করেন সংগঠনটির জাবি শাখার এ নেতা।
রাফি বলেন, “১৯৮৯ সালের ওই হত্যাকাণ্ডের পর সিন্ডিকেটে শিবির নিষিদ্ধের সুপারিশ করা হয়। কিন্তু সিন্ডিকেট শিবিরের রাজনীতি বহাল রাখে। আদালতে যেসব শিবিরের নেতাকর্মীদের নামে মামলা হয় তারা সবাই বেকসুর খালাস পায়।
“সবকিছু আইনত সিদ্ধ হলেও আমরা কেনো রাজনীতি করতে পারব না? এই আগ্রাসনের শেষ চাই আমরা।”