বিকালে সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
Published : 18 Feb 2025, 04:35 PM
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে নদীপাড়ে দুই দিনের কর্মসূচির শেষ দিনের পদযাত্রা মানুষের ঢল নেমেছে।
‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’র আয়োজনে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে এ কর্মসূচিতে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ নদীপাড়ের মানুষ অংশ নিয়েছেন।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার পর এ কর্মসূচি শুরু হয়। উত্তরের পাঁচ জেলায় ১১টি পয়েন্টে এ কর্মসূচি একসঙ্গে শুরু হয়েছে। গণপদযাত্রাটি লালমনিরহাটের তিস্তা ব্রিজ থেকে শুরু হয়ে রংপুরের কাউনিয়া বাজারে গিয়ে শেষ হয়।
সোমবার সকাল থেকে তিস্তাপাড়ে ৪৮ ঘণ্টা লাগাতার অবস্থান, সমাবেশ ও পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়েছে। রংপুর ও লালমনিরহাটের তিস্তা রেলওয়ে সেতু-সংলগ্ন পয়েন্টে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিস্তা বিস্তৃত রংপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামের ১১টি পয়েন্টে এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। প্রথম দিনের মতো সমাপনী দিনেও সকাল থেকে ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করছে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’।
দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচিতে সকাল থেকে তিস্তা নদীর তীরে নামে মানুষের ঢল। তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে নদীর দুই পাড়।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন: 'এই নদী বাঁচলে উত্তরাঞ্চলের কৃষক বাঁচবে
তিস্তা পাড়ে দিনভর মানুষের ঢল, 'আগে ছিল আশীর্বাদ, এখন অভিশাপ'
তিস্তাপাড়ে হাজারো মানুষ ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে পতাকাসহ ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে জড়ো হয়েছেন।
বিকালে কর্মসূচির সমাপনী সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
৩১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা অববাহিকার ১১৫ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশ অংশে। তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী হওয়া সত্ত্বেও ভারত একতরফাভাবে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং তাদের জমিতে সেচের জন্য পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর বাংলাদেশের জন্য পানি ছাড়ে।
তবে সেই পানি আশীর্বাদ না হয়ে বেশিরভাগ সময়ে বাংলাদেশের মানুষের জন্য বয়ে আনছে অভিশাপ। ফলে অসময়ে তিস্তায় বন্যা দেখা দিচ্ছে, সঙ্গে বছর বছর বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।
নদী গবেষক ও বিশ্লেষকরা বলছেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে উত্তরের পাঁচ জেলার দুই কোটি মানুষের জীবনমান রক্ষার সমাধান এনে দিতে পারে। নদীকেন্দ্রিক কৃষিজমি রক্ষা, ভাঙন রোধসহ চরগুলো রক্ষায় সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। নয়তো উজানের পলিতে নদী ভরাট হয়ে প্রতিবছর অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ বাড়তেই থাকবে।
তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার যেমন প্রয়োজন আছে, তেমনি তিস্তা নদীর সুরক্ষার বিষয়টিও এখন জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।