রাজধানীর পুরান ঢাকার সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণের দিন শবে বরাতের রোজা রাখার পর ক্যাফে কুইন ভবনে ইফতারির জন্য অপেক্ষা করছিলেন মুন্সীগঞ্জের আওলাদ হোসেন মুসা এবং তার আপন চাচাত ভাই আবু জাফর সিদ্দিক তারেক।
মঙ্গলবার বিকালে বিস্ফোরণের ছয় ঘণ্টা পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি ও বার্ন ইউনিটে মারা যান তারেক। মুসা শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সাজারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বুধবার রাত ১১টার দিকে তিনিও মারা যান বলে জানান মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামান জুয়েল সরকার।
আওলাদ হোসেন মুসা (৩৭) উপজেলার বালুয়াকান্দি পশ্চিম পাড়া গ্রামের মৃত জামান শফিকের ছেলে। তিনি কোরআনের হাফেজ ছিলেন। চাচাতো ভাই আবু জাফর সিদ্দিক তারেক (৩৩) গ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক খোকার ছেলে।
মঙ্গলবার বিস্ফোরণের পর বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনায় মোট ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে। এ ঘটনায় আহত ২৭ জন এখনও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন। তাদের মধ্যে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি আটজনের অবস্থাও ভালো নয়।
পরিবার জানায়, আওলাদ হোসেন মুসা ছিলেন ব্যবসায়ী। স্যানেটারি মালামাল কেনার জন্য তারেক তার চাচাতো ভাই মুসাকে নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিলেন। মুসা এক বছর আগে বিয়ে করেছেন। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে মুসা তৃতীয় ছিলেন।
মুসার চাচাতো এবং তারেকের আপন বড় ভাই রামু থানার রাখাইছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (আইসি) এ বি সিদ্দিক মাসুদ বলেন, “স্যানেটারি পণ্য আনতে গিয়ে ক্যাফে কুইন ভবনে ইফতারির অপেক্ষায় ছিলেন তারেক ও মুসা। এ সময় হঠাৎ বিস্ফোরণের পর ওইদিনই তারেকের মৃত্যু হয়।
“মুসা গুরুতর দগ্ধ হয়ে হাসপাতালেন চিকিৎসাধীন ছিলেন। বুধবার রাতে তার মৃত্যু হয়। তারা দুজনেই শবে বরাতের নফল রোজা রেখেছিলেন।”
ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামান জুয়েল সরকার বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে বালুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মুসার জানাজা হয়। জানাজা শেষে মুসার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে তার চাচাতো ভাই তারেকের কবরের পাশে দাফন করা হয়।
আরও পড়ুন