রোগীরা ‘মাস হিস্টিরিয়ায়’ আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে দাবি স্বাস্থ্য বিভাগের।
Published : 14 Oct 2024, 09:47 PM
শেরপুর সদর হাসপাতালে একই ‘ইনজেকশন দেওয়ার’ পর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ৩০ নারী রোগী। ভুল ইনজেকশনে এমনটা হয়েছে বলে অভিযোগ রোগীর স্বজনদের।
ইনজেকশন পুশ করার পর শ্বাসকষ্ট ও খিঁচুনিসহ রোগীর শরীরে নানা জটিলতা দেখা দেয়; যাকে ‘মাস হিস্টিরিয়া’ বলছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
রোববার রাত ১১টার দিকে হাসপাতালের ৭ নম্বর মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হুমায়ুন কবীর নূর।
তিনি জানান, ওই ওয়ার্ডে সাড়ে ৩০০ রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ৩০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এটি ভুল ইনজেকশনের ফলে নয়; গণ-হিস্টিরিয়ায় (মাস সাইকোজেনিক ইলনেস) আক্রান্ত হয়েছিলেন তারা।
স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতালের সাত তলায় মহিলা ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্স রোগীদের সেফরাড ইনজেকশন দেন। অসুস্থ রোগীর বেশির ভাগ পেট ব্যথা, হার্টের সমস্যা (বুক ব্যথা) ও উচ্চরক্ত চাপ নিয়ে ভর্তি আছেন। ইনজেকশন দেওয়ার কিছুক্ষণ পর একে একে রোগীরা শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনি, বমি ও জ্বরে আক্রান্ত হতে থাকেন। এতে সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়।
পরে স্বজনরা রোগীদের দ্রুত জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। তিনজনের অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় রাতেই তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। খবর পেয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা গিয়ে রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
চিকিৎসক হুমায়ুন কবীর নূর বলেন, “ঘটনা শোনার পর রাত দেড়টা পর্যন্ত আমরা চেষ্টা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী, স্বজন ও কর্তব্যরত নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, এক মাস ধরে সব ওয়ার্ডে সেফরাড ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে, যা মহিলা ওয়ার্ডের রোগীদেরও দেওয়া হয়।
তবে অন্য ওয়ার্ডে কোনো সমস্যা না হলেও শুধুমাত্র মহিলা ওয়ার্ডে এ সমস্যা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ইনজেকশন দেওয়ার পর একজন রোগীর ‘ড্রাগ ফোবিয়ার’ কারণে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল। আর তা দেখেই হয়ত অন্য রোগীরা ‘মাস হিস্টিরিয়ায়’ আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন।
বর্তমানে সেফরাড ইনজেকশনটি দেওয়া বন্ধ রয়েছে; তবে বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে দেখার কথা জানান হাসপাতালের এই আবাসিক কর্মকর্তা।
ইনজেকশনের কারণে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েননি দাবি করে শেরপুরের সিভিল সার্জন মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘মাস হিস্টিরিয়ায়’ আক্রান্ত হয়েছিলেন রোগীরা। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ভয় ও অতিরিক্ত আবেগ লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানে সবাই সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন।