“একটা ফর্মালিটিজ করে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তাদের ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হতো,” বলেন রাজ্জাক।
Published : 19 Dec 2023, 12:09 AM
ভোটে আসার শর্তে কারাবন্দি বিএনপি নেতাদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক যে বক্তব্য রেখেছিলেন, তা নিয়ে সমালোচনার মুখে ওই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি ।
তার ভাষ্য, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন করার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হয়েছে সরকার। যারা সন্ত্রাস করছে, সন্ত্রাসের হুকুম দিচ্ছে, সন্ত্রাসের পরিকল্পনা করছে, লন্ডনে বসে থেকে নির্দেশ দিচ্ছে, সরকার বাধ্য হয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করতে।
রোববার টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরে প্রচারিত সাক্ষাৎকারে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “বারবার বলা হয়েছে নির্বাচন কমিশন থেকে, তারা (বিএনপি) যদি নির্বাচনে আসে- নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হবে। এবং পিছিয়ে দেওয়াই না, বলা হয়েছে সবাইকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।”
সেখানে আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য এও বলেন, “২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার না করে কি আর এই হরতালের দিন গাড়ি চলত? এছাড়া আমাদের জন্য কোনো গত্যন্তর ছিল না, কোনো অল্টারনেটিভ ছিল না।”
টিভিতে প্রতিবেদনটি প্রচারের পরদিন সোমবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা-গ্রেপ্তারের বিষয়টি যে পরিকল্পিত তা কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্যের মাধ্যমেই প্রমাণিত হয়েছে।
এদিনই সচিবালয়ে কয়েকজন সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে টিভিতে দেওয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। পরে কৃষি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে সেই বক্তব্য লিখিত আকারে প্রচার করা হয়।
এতে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “বহুবার আমি বলেছি বিএনপি অবশ্যই একটি বড় রাজনৈতিক দল। তাদের নির্বাচনে আমরা আনতে চাই কিন্তু সংবিধানের বাইরে আমাদের যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমার কথা এসেন্সটাই (সারমর্ম) ছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমরা সবসময় চেয়েছি, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। কিন্তু বিএনপি আসবে না।”
তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন বারবার বলেছে, ‘বিএনপি নির্বাচনে এলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হবে। বিএনপি যদি রাজি হয় নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে’। নির্বাচন কমিশনে তো আইনের লোক অনেক আছে।
“একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আলাপ-আলোচনা করে অনেক কিছুই করা যায়। খুনের আসামিরও তো জামিন হয়। প্রথমে না হলেও আস্তে আস্তে এক সময় জামিন হয়। ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কি জেলে রেখে নির্বাচন হবে? সেটা একটা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে জামিনের ব্যবস্থা করা হতো। একটা ফর্মালিটিজ করে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তাদের ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হতো।”
বিবৃতিতে কৃষিমন্ত্রী বলেন, “কীভাবে বিএনপি রেললাইন কেটেছে! দেশে কি কোনো মুক্তিযুদ্ধ চলছে? দেশে কি যুদ্ধাবস্থা? এগুলো তো যুদ্ধের সময় করে। এগুলো বন্ধ করতে হলে মানুষকে তো গ্রেপ্তার করতে হবে। বিএনপি নেতাদের হুকুম ছাড়া কোনো কর্মী কি বাসে আগুন দেবে?
“আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের দায়িত্ব হলো মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই গ্রেপ্তারের ফলে এ বছর বিএনপির সহিংসতা অনেক কম। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে তারা যেভাবে তাণ্ডব ও চারশ'র বেশি মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছিল, এ বছর সেই পরিস্থিতি নেই।”