নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করুক বিএনপি, চান আওয়ামী লীগ নেতারা

রাজধানী ঢাকার ১০ জায়গায় শান্তি সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2023, 04:12 PM
Updated : 4 March 2023, 04:12 PM

সংবিধানবিরোধী কোনো দাবি আওয়ামী লীগ মানবে না জানিয়ে দলের নেতারা বলেছেন, বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক দলের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বপ্ন বাংলার মাটিতে আর বাস্তবায়ন হবে না।

নির্বাচন ছাড়া সরকার হটানো যাবে না এবং নির্বাচনই হল ক্ষমতা বদলের একমাত্র পথ জানিয়ে তারা বিএনপিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ারও আহ্বান জানান।

শনিবার রাজধানী ঢাকার ১০টি জায়গায় পৃথক সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সরকারে থাকা দলটির নেতারা এসব কথা বলেন।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এসব সমাবেশের মধ্যে চারটি উত্তরে এবং ছয়টি দক্ষিণে অনুষ্ঠিত হয়। দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এগুলোতে অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন।

সরকার হটাতে ১০ দফা দাবি আদায়ে বিএনপি ও সমমনা জোটের পদযাত্রা কর্মসূচির দিনে শান্তি সমাবেশ করছে আওয়ামী লীগ।

এদিন মহানগর উত্তরের সমাবেশ হয় মিরপুর ১ নম্বর গোলচত্বর, মোহাম্মদপুর টাউন হল, মধ্য বাড্ডা ও উত্তরার আমির কমপ্লেক্সের সামনে। মহানগর দক্ষিণে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে, শ্যামপুর রেলগেট, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা, ঢাকেশ্বরী বালুর মাঠ, মুগদা স্টেডিয়াম ও ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে সমাবেশে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যদের জবাব দেন এবং দলটির সমালোচনা করেন।

মোহাম্মদপুরে টাউন হলের সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, "নির্বাচন ছাড়া কোনো সরকার উৎখাত করা যাবে না। নির্বাচনই হল ক্ষমতা বদলের একমাত্র পথ। কাজেই যতই ষড়যন্ত্র করেন, সব ষড়যন্ত্রকে নসাৎ করে দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।"

এতে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ এম এ সাত্তার। সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মিয়া চাঁনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবাহান গোলাপ, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রহমান, স্থানীয় সংসদ সদস্য সাদেক খান।

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, "বিএনপি কেবল সরকার পতনের লক্ষ্যে কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে মাঠে নামে নাই। তারা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্য মাঠে নেমেছে।“

একটা দানবীয় শক্তি সরকার পতনের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে মন্তব্য করে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

উত্তরার আজমপুরে আমিন কমপ্লেক্সের সামনের সমাবেশে সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, "আওয়ামী লীগ, রাজপথের দল রাজপথেই থাকবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ আবারো ক্ষমতায় আসবে।"

বাড্ডায় বক্তব্যে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম নতুন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেন।

ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর প্রাঙ্গণের সমাবেশে শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, "যারা বিদ্যুৎ দিতে পারেনি, খাম্বা দিয়েছে। ৫ বছরে ৬ বার বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। সংবিধানকে ভূলন্ঠিত করেছে। আপনাদের জন্মই সংবিধানের বাইরে, গণতন্ত্রের বাইরে। আপনারা কোনদিন গণতন্ত্র মানবেন না এটাই স্বাভাবিক।"

শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বাধা দেওয়া হবে না, তবে সহিংসতা করলে বাংলার জনগণ হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

মিরপুর ১ গোল চত্বরের সমাবেশে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, "যারা দেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে শত শত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর যারা আঘাত এনেছে,তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।

"কোন ভয় ভীতি বা হুমকি বা অগ্নি সন্ত্রাস দ্বারা তাদের ভয় দেখানো হলে আমরা মেনে নিব না।তার জন্যই আমাদের এই কর্মসূচি। এটি কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। এটি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কর্মসূচি।"

ডেমরার চৌরাস্তায় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, "বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও নৈরাজ্য কিছুতেই প্রতিষ্ঠিত হতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দিনরাত রাজপথে নিজেদের শক্তি দিয়ে কঠোরভাবে প্রতিরোধ করবে।"

এছাড়া ঢাকেশ্বরী বালুর মাঠের সমাবেশে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মুগদা স্টেডিয়ামে আইন বিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় বন পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শ্যামপুর রেলগেটে কেন্দ্রীয় সদস্য সানজিদা খানম উপস্থিত ছিলেন।