নির্বাচনের টার্ন আউট সন্তোষজনক হবে। এ নির্বাচনে মানুষের আগ্রহ আছে।
Published : 26 Dec 2023, 08:11 PM
আগামী নির্বাচনের পর বাংলাদেশে ‘বিরোধী দলের কী হবে’ তা জানতে চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল বলে জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার প্রতিনিধি দলটির সঙ্গে বৈঠকের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
ভোট পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অবস্থান করছে। এ দলের সদস্যরা এদিন বিকালে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেন।
প্রতিনিধি দলের চার সদস্য কাদেরের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। তারা চলে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিকদের সামনে আসেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের মনোভাব কেমন ছিল? এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, “তারা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের বক্তব্য শুনেছেন। বাংলাদেশের বাস্তবতায় এ নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বিষয়টি এসেছে। এখানে ২৭টির মতো দল অংশগ্রহণ করেছে, ১৮৯৬ জন প্রতিযোগিতা করছে। এসব বিষয়গুলো তারা পজিটিভলি নিয়েছে। তারা একটা বিষয় জানতে চেয়েছে, বিরোধী দলের কি হবে?
“তারা আসলে বলার চেয়ে আমাদের কথা বেশি শুনতে আগ্রহ ছিল। মন্তব্যের ব্যাপারটা তারা ওইভাবে করতে চাননি। আমরা আমাদের বক্তব্য বলেছি। নির্বাচনে আমাদের প্রস্তুতি, বিএনপি আসলো না কেন? এটা বহু আগের জানা কথা, খুব বেশি আলোচনা নয়, তারাও জানেন।”
‘বিরোধী দলের’ প্রসঙ্গে আপনারা কী বলেছেন-এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, “নির্বাচনের ফলাফলে বলে দেবে বিরোধী দল কে হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা একটা কথা বলেছি যে, নির্বাচনের টার্ন আউট সন্তোষজনক হবে। এ নির্বাচনে মানুষের আগ্রহ আছে। সারা বাংলাদেশের ভোটারদের মধ্যে যে স্বতঃস্ফূর্ততা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তাতে টার্ন আউট নিয়ে আমাদের উদ্বিগ্নের কোনো কারণ নেই। পাঁচ বছর পর পর নির্বাচন করা একটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা।”
প্রতিনিধি দলটি সহিংসতার বিষয়েও জানতে চেয়েছে। তখন তাদের এর পেছনে বিএনপির জড়িত থাকার কথা তুলে ধরা হয়েছে জানিয়ে কাদের বলেন, “শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে ঘিরে তারা ভায়োলেন্স করতে চাচ্ছে।”
বাংলাদেশের নির্বাচনের চেয়ে ইউক্রেইন, গাজা, ইসরাইল, ফিলিস্তিনি নিয়ে ইইউ এর এখন বেশি মাথা ব্যথা দাবি করে কাদের বলেন, “এসব প্রসঙ্গ এখন বিশ্ব রাজনীতিতে প্রকট। তারা বেশি মাথা ঘামাচ্ছেন ওসব নিয়ে।”
দিন কয়েক আগে কঙ্গোতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “কঙ্গোতে একটা নির্বাচন হয়ে গেল, অনিয়ম, ইন্টারনেট বন্ধ, কারও সাথে কারও যোগাযোগ নেই, আবার কয়দিন পরে দেখব ডেমোক্রেসি কনফারেন্স, সেখানে একটা ডেক্স থাকবে কঙ্গোর জন্য, যেখানে ইলেকশনে এত অনিয়ম। কিন্তু আমরা ডেমোক্রেটিক হতে পারলাম না।”
বৈঠকে নির্বাচন কেমন হবে, কতটুকু সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য অনুষ্ঠিত হবে, এ ব্যাপারে সরকারের যে প্রস্তুতি, আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি তা তুলে ধরা হয়েছে প্রতিনিধি দলকে বলে জানান তিনি।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ও আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বতন্ত্ররা শুধুমাত্র দলেরই না কি অন্য দলেরও রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, “নির্বাচনের ফলাফল, এটা কি সবাই মেনে নেবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কতটা প্রস্তুত, নির্বাচন বিরোধীদের অবস্থা কী, তারা মেজর কোনো প্রবলেম করতে পারবেন কি না, সেসব নিয়ে অনেক কথা হয়েছে।
“স্বতন্ত্র শুধু কি আওয়ামী লীগের লোকেরা, সেটা জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি সেটা ঠিক না। বাইরের লোকও স্বতন্ত্র নির্বাচন করছে। অনেকে বিএনপি থেকে এসেও স্বতন্ত্র নির্বাচন করছে। বেশির ভাগ আওয়ামী লীগ তবে সব স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগের না।”