"বিএনপি যদি গায়ে পড়ে আমাদের ওপর আক্রমণ করতে আসে, তখন তো আমরা চুপচাপ বসে থাকব না,” বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
Published : 26 Oct 2023, 01:41 PM
আসছে শনিবার আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে হামলা হলে ‘পাল্টা হামলার’ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার বনানীর সেতু ভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল (কর্ণফুলী টানেল) উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।
২৮ অক্টোবর পাল্টাপাল্টি রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে জনমনে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল।
জবাবে তিনি বলেন, "বিএনপি যদি গায়ে পড়ে আমাদের ওপর আক্রমণ করতে আসে, তখন তো আমরা চুপচাপ বসে থাকব না। আমাদের কর্মীরা কি তখন শান্ত থাকবে? শান্তির সমাবেশে যদি হামলা হয়, তাহলে আমাদের কর্মীরা বসে থাকবে না। পাল্টা হামলা অবশ্যই হবে।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা বিএনপির সভাস্থলে গিয়ে হামলা করতে যাব না। এ পর্যন্ত আমরা এটা করিনি, এটা করবও না। কারণ আমরা সরকারে আছি। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই।
“আমরা নির্বাচনে শান্তি চাই। নির্বাচনের আগের পরিবেশটাতেও শান্তি চাই। আমরা দেশ চালাচ্ছি, তাই আমরা গায়ে পড়ে অশান্ত পরিবেশ হতে দেব না।"
আরেক প্রশ্নের উত্তরে কাদের বলেন, "আমরা উসকানি দেব কেন? আমাদের তার কোনো প্রয়োজন নেই। দেশ টা শান্ত থাকলে আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনটা করতে পারব। বর্তমানে শান্তিপূর্ণভাবে দেশটা চালাতে পারব। আজকের এই উন্নয়ন, তারা স্বপ্নেও কখনো এমন উন্নয়ন দেখেনি।
"এমন উন্নয়নের কথা ভাবতেও পারেনি। তারা আন্দোলন করছে। আমরা একদিকে জনগণের জান মালের নিরাপত্তা রক্ষায় রাজপথে সতর্ক পাহারায় আছি। অন্যদিকে আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।"
পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে জনমনে আতঙ্কের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, "রাজনীতিতে এমন ভয়, আতঙ্ক থাকেই। এর মধ্যে দিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তবে বিএনপি যেভাবে কথা বলে তাতে মনে হয় তারা সহিংসতায় যেতে চায়।
“বিএনপি ৭১ এর চেতনা ধারণ করে না। তারা ১৯৪৭ সালের দ্বিজাতি তত্ত্বের ধারণা ধারণ করে। তারা কর্মসূচির নামে সহিংসতা করতে চায়।"
সরকারের পদত্যাগের এক দফা আন্দোলনে থাকা বিএনপি ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে নিজেদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ করতে চায়।
একই দিনে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেইটে পাল্টা শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সেদিন রাজধানী দখলে রাখার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।
বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে না থাকলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ২৮ অক্টোবর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বুধবার বলেছেন, কোনো দলের বিষয়েই এখনও সিদ্ধান্ত দেয়নি ঢাকা মহানগর পুলিশ। তবে নিবন্ধন না থাকায় জামায়াতকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না।
বিদেশি চাপ নেই
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন নিয়ে বিদেশি কোনো ‘চাপ’ সরকারের ওপর নেই।
“নির্বাচন নিয়ে চাপ কেন থাকবে? কোনো চাপের বিষয়ে আমি অবহিত নই। বিদেশি চাপ কেন থাকবে? আমাদের ইলেকশন আমরা করছি।
"নির্বাচনটা শান্তিপূর্ণ, আবাধ, নিরপেক্ষ হচ্ছে কি না তা বিদেশিরা পর্যবেক্ষক হিসেবে দেখতে পারে। তাই বলে চাপ থাকবে কেন? আমরা শান্তিপূর্ণ ইলেকশন করব, ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন করব। যেখানে দেশে অবাধ, সুষ্ঠ, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে, সেখানে চাপের কিছু নেই।"
বুধবার রাতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বিএনপির নৈশভোজে সরকারের ভূমিমন্ত্রীর উপস্থিতির খবর নিয়েও প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। উত্তরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই।
“এটা অফিসিয়ালি না। আমার জানা নেই। মার্কিন রাষ্ট্রদূত আগামী ২৯ অক্টোবর আমার সঙ্গে সাক্ষাত করার সময় চেয়েছেন। কিন্তু আমরা এখনও সময় দিইনি, কারণ আমরা যেহেতু রাজনীতি করি, তাই সব কিছুর বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত লাগে।"
আওয়ামী লীগের কাছে বায়তুল মোকাররমের ‘বিকল্প’ জানতে চেয়েছে পুলিশ
বিএনপির ‘মহাসমাবেশ’: সতর্ক পাহারায় সড়কে সোচ্চার থাকবে আওয়ামী লীগও