জাতীয় পার্টি ভাঙার চেষ্টার দায় সরকারকে দিলেন জিএম কাদের

“এই দলে থেকে যারা অন্য দল করতে চায়, তাদেরকে দল থেকে বের করে দিতে হবে,” বলেন তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2024, 03:25 PM
Updated : 24 Feb 2024, 03:25 PM

জাতীয় পার্টি যখনই স্বাধীনভাবে রাজনীতি করতে চায় তখনই ক্ষমতাসীন সরকার দল ভেঙে আরেকটি দল তৈরি করে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

শনিবার ঢাকার বনানীতে দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “যারা আমাদের দলে থেকে আরেক দলের রাজনীতি করে তাদের আমরা দল থেকে বের করে দিতে পারি না। কাজেই এটাকে বাঁচাতে সমস্ত নেতাকর্মী যারা জাতীয় পার্টি করতে চায়, তাদেরকে জাতীয় পার্টিই করতে হবে। এই দলে থেকে অন্য দল করতে চায়, তাদেরকে দর থেকে বের করে দিতে হবে।”

এদিন দুপুরে তার জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত কেক কাটা অনুষ্ঠানে জিএম কাদের এসব কথা বলেন। ১৯৪৮ সালের এদিনে (২৪ ফেব্রুয়ারি) জন্মগ্রহণকারী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের ৭৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এতে নেতাকর্মীদের ‘গৃহপালিত’ দলের তকমা থেকে বের হয়ে ‘স্বনির্ভর’ দল হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য কাজ করার আহ্বান জানান।    

জিএম কাদের বলেন, “জাতীয় পার্টি না কি পরজীবী হয়েছে। মানে অন্যের উপর ভর করা ছাড়া তারা জিততে পারে না। কারও সঙ্গে জোট করলে আসন পায়। কিন্তু এই পরজীবীটা কিন্তু আমাদের জন্য একটা বড় সুযোগ ছিল। যেহেতু দুইটা রাজনৈতিক শক্তি, অল্প ভোটের ব্যবধানে জয়-পরাজয় নিশ্চিত হয়। আর সেই অল্প ভোটটি আমরা দিতে পারতাম।

“আমরা পরজীবী হলেও আমাদেরকে নেওয়ার জন্য একটা প্রতিযোগিতা ছিল। আমরা বারগেনিং করে অনেক কিছু আদায় করে নিতে পারতাম। সেটাই ছিল আমাদের একটা বড় রাজনৈতিক শক্তি। কিন্ত ২০১৪ এর পর থেকে আমরা সেটা হারিয়ে ফেলেছি।”

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “দল যদি বাঁচাতে হয়, তাহলে গৃহপালিত হতে বের হয়ে-যদি পরজীবী হয়ে থাকতে হয় তাই থাকব। তারপর পরজীবী থেকে আমরা স্বনির্ভর হব।

“আমাদের সেই দিকে এগিয়ে যেতে হলে আমাদের গৃহপালিত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যারা গৃহপালিত হবার জন্য দায়ি তাদেরকে আমাদের বর্জন করতে হবে।”

নির্বাচনের পর মানুষের নানা বিরূপ মন্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, “এবারের নির্বাচন ছিল আমার জন্য একটা বড় পরীক্ষা। নির্বাচনের পরে আমাকে নিয়ে অনেকে অনেক রকমভাবে মূল্যায়ন করেছেন। এ মূল্যায়ন আরও কিছুদিন পরে হলে ভাল হতো। এখন যারা ভালো বা খারাপ বলছেন এটা হয়ত যথার্থ হচ্ছে না।”

সরকার বৈষম্য করছে দাবি করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা ঘরে-ঘরে স্কুলে-স্কুলে শহীদ মিনার করছি। কিন্তু শহীদদের আত্মত্যাগের যে মূল বিষয় ছিল তা হল বৈষম্য। সেই বৈষম্য কি আমরা দূর করতে সক্ষম হয়েছি?

“ধনী-গরিবের বৈষম্য বাংলাদেশে প্রতিদিন বাড়ছে। এটার বিরুদ্ধে কি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? একইভাবে দলীয়করণে বৈষম্য চলছে। সরকারি দল করলে এক ধরণের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধেই ভাষা শহীদরা আন্দোলন করেছিল। সেই অন্যায় এখনও হচ্ছে। বর্তমান সরকার আরও বেশি করে বৈষম্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্য করা হচ্ছে।”