মামলার অভিযোগে বলা হয়, জাতীয়তাবাদী চালক দল নামে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কোনো অঙ্গসংগঠন নেই।
Published : 10 Mar 2025, 09:30 PM
`ছাত্র-জনতার হত্যাকারীরা’ লুকিয়ে আছে—এমন কথা রটিয়ে ‘মব’ সৃষ্টি করে ঢাকার গুলশানে একটি বাড়িতে লুটপাটের ঘটনায় কথিত জাতীয়তাবাদী চালক দল কেন্দ্রীয় কমিটির স্বঘোষিত সভাপতি জুয়েল খন্দকারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হামলা-লুটপাটের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ইলতুৎমিস সওদাগর অ্যানি সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্ল্যাহের আদালতে এ মামলা করেন।
জুয়েল খন্দকারের পাশাপাশি তার সহযোগী শাকিল খন্দকার ও জসিম উদ্দিনকে এ মামলার আসামি করা হয়েছে। তারা তিনজনই গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
বিচারক বাদীর জবানবন্দি শুনে গুলশান থানার ওসিকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী ইলতুৎমিস সওদাগর বলেন, “বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতদিন দল থেকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ কোনো অপরাধ করলে দলীয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরাধের ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
মামলার অভিযোগে বলা হয়, জাতীয়তাবাদী চালক দল নামে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কোনো অঙ্গসংগঠন নেই।
“আসামিরা গত ৪ মার্চ তাদের মনগড়া কাহিনী তৈরি করে প্রয়াত এইচটি ইমামের ছেলে তানভীর ইমাম এর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর বাসায় অনধিকার ও বেআইনি অনুপ্রবেশ করে ব্যাপক লুটপাট চালায়। এ খবর দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
“আসামিরা একটি ভুয়া সংগঠন জাতীয়তাবাদী চালক দল জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজন করে এই ব্যানারে তারা বিভিন্ন জায়গায় বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও লুটপাট চালাতে থাকে। প্রতারণামূলকভাবে ভুয়া দল সৃষ্টি করে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে তৎপর এই স্বঘোষিত ভুয়া দল। বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের পরামর্শে এই মামলা দায়ের করা হল।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা প্রয়াত এইচ টি ইমামের ছেলে তানভীর ইমামের বাড়ি– এমন দাবি তুলে ৪ মার্চ রাতে একদল লোক গুলশানের ২ এ শাহাবুদ্দিন পার্কের পাশের ওই বাড়িতে ঢুকে পড়ে।
সেখানে ‘অবৈধ অস্ত্র ও ছাত্র-জনতার হত্যাকারীরা’ লুকিয়ে আছে– এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে ‘তল্লাশি’ করার কথা বলেন তারা।
খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে সেখানে পুলিশ যায়। রাত দেড়টার দিকে যান সেনা সদস্যরা। ততক্ষণে ওই বাড়ির ভেতরে সবকিছু তল্লাশির নামে তছনছ করে ফেলা হয়।
পরে জানা যায়, বাড়িটি তানভীর ইমামের সাবেক স্ত্রীর, যার সঙ্গে তানভীরের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে ২০-২৫ বছর আগে।
ওই ঘটনার পর জুয়েল খন্দকার, শাকিল খন্দকার ও জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে ৫ মার্চ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
ওই বাসার কেয়ারটেকার আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে গ্রেপ্তার তিনজনসহ ১৪-১৫ জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন।