রাজশাহীতে ‘অসাধারণ’ সভা হয়েছে: হাছান মাহমুদ

প্রেস ক্লাবের বহুতল ভবন নির্মাণ এবং গণমাধ্যমকর্মী আইন করার বিষয়ে নিজের চেষ্টার কথা তুলে ধরেন তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Jan 2023, 05:37 PM
Updated : 30 Jan 2023, 05:37 PM

রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় যে জনসমাগম হয়েছে, তাতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেছেন, “আসলে রোববার একটা অসাধারণ সভা হয়েছে। পুরো রাজশাহী শহরই জনসভায় পরিণত হয়েছিল। সভাস্থল মাদ্রাসা মাঠের বাইরে কমপক্ষে ১০-১২ গুণ মানুষ ছিল। বিএনপিও সেখানে সমাবেশ করেছিল। তাদের তুলনায় কতগুণ বড় সেটা অনুমান করা কঠিন। তবে বিএনপির সমাবেশের চেয়ে ১২-১৪ গুণ বড় তো বটেই।

“আকাশ থেকে প্রধানমন্ত্রীও সমাবেশ দেখেছেন। পুরো শহরজুড়ে যে মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা এবং সমাবেশে যাওয়ার জন্য আগ্রহ আমি দেখেছি- সেটি অভাবনীয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি, তার দলের প্রতি জনগণের যে বিপুল সমর্থন, এই জনসভায় সেটিই প্রমাণিত হয়েছে।”

সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের নবনির্বাচিত ব্যবস্থাপনা পরিষদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এখনও ভোটের অধিকার, ন্যায় বিচারের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে- বিএনপি মহাসচিব ফখরুলের এমন মন্তব্যের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, “আমি ফখরুল সাহেবকে সবিনয়ে অনুরোধ জানাব- আয়নায় নিজের চেহারাটা দেখার জন্য, দলের চেহারাটাও দেখার জন্য। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার বন্ধ করেছিল বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। সেখানে শুধু ন্যায় বিচার না, বিচারটাই বন্ধ করা হয়েছিল। কারাগারের অভ্যন্তরে চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল, সেটির বিচারও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

“জিয়াউর রহমানই এই দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন শুরু করেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে জিয়াউর রহমান যুক্ত ছিল এবং বঙ্গবন্ধুর লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী প্রধান হয়েছিল। যে সেনা কর্মকর্তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করল, তাদের প্রচণ্ড বিশ্বস্ত না হলে জিয়াউর রহমান কি সেনাপ্রধান হতে পারত? আজকে সেটি দিবালোকের মত স্পষ্ট, প্রমাণিত, সত্য।”

তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমান নিজের ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার জন্য হাজার হাজার সেনাবাহিনীর অফিসারকে বিনা বিচারে ফাঁসি দিয়েছে। অনেকের ফাঁসি হয়েছে, রায় হয়েছে- ফাঁসি কার্যকর হবার পরে। আজকে সেই নিহতদের পরিবারের সংগঠন ‘মায়ের কান্না’র বোবা কান্না আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে এবং বিদেশি কূটনীতিকদের কানেও গেছে।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “ভোটের অধিকারের কথা যদি বলেন, জিয়াউর রহমানের সময়, সাত্তার (রাষ্ট্রপতি) সাহেবের সময়, খালেদা জিয়ার সময়, এরশাদ সাহেবের সময় স্লোগান ছিল ‘১০টা হোন্ডা, ২০টা গুণ্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা’। সেই অপসংস্কৃতি তারাই চালু করেছিল। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বিএনপিই করেছিল। তারা এক মাসের বেশি ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে নাই। তো আয়নায় নিজের চেহারাটা দেখলেই উনি উত্তর পেয়ে যাবেন।”

তিনি বলেন, “বিএনপি যে ন্যায় নীতির কথা বলে; ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে মানুষের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে যেভাবে মানুষ হত্যা করেছে, সেই হামলার হুকুমদাতা তো বিএনপি নেতারা। মির্জা ফখরুল সাহেবও সেই হুকুমদাতাদের মধ্যে একজন। এভাবে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যার পর এখনও যে তারা ঘুরে বেড়ায়- এটাই তো জনগণের কাছে আশ্চর্যজনক বিষয়।”

এর আগে প্রেস ক্লাবের নবনির্বাচিত নেতারা তথ্যমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তের পরিচালনায় সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বৈঠকে সচিবালয়- প্রেস ক্লাব সংলগ্ন মেট্রোরেল স্টেশনের নাম ‘জাতীয় প্রেস ক্লাব স্টেশন’ রাখা, প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন সংস্কার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের ২১তলা ভবন নির্মাণে সহযোগিতা এবং প্রেস ক্লাব সাংবাদিক ফান্ডে সহায়তার দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন।

তথ্যমন্ত্রী জানান, প্রেস ক্লাবের ২১তলা ভবন নির্মাণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এবং গণমাধ্যমকর্মী আইনের বিষয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সঙ্গে তার আলোচনা হয়েছে। অন্য দুই বিষয়েও সহযোগিতা করার কথা বলেন তিনি।