২৫ মন্ত্রীর মধ্যে ১৩ জনকে নেওয়া হয়েছে তিন বৃহত্তর জেলা থেকে। ১১ প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে আছেন ঢাকা ও গাজীপুরের চার সংসদ সদস্য ।
Published : 11 Jan 2024, 12:07 AM
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন যে সরকার গঠন হতে যাচ্ছে, তাতে রাজধানী থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা প্রাধান্য পেয়েছেন। বৃহত্তর ফরিদপুর ও বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলও গুরুত্ব পেয়েছে এ মন্ত্রিসভায়।
বিদায়ী সরকারে গুরুত্ব পাওয়া সিলেট অঞ্চল এবার মন্ত্রী পেয়েছে বেশ কম। বৃহত্তর বরিশাল কোনো পূর্ণ মন্ত্রী পায়নি। রংপুর এবং রাজশাহী বিভাগও তুলনামূলক কম গুরুত্ব পেয়েছে।
বিভাগওয়ারি হিসাব করলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগই মন্ত্রী পেতে যাচ্ছে বেশি।
এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় চারজন পূর্ণ মন্ত্রীর পাশাপাশি পাচ্ছে দুটি প্রতিমন্ত্রী।
এর বাইরে এই বিভাগে গোপালগঞ্জ দুটি, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গাজীপুর, নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জ একটি করে মোট ১০টি পূর্ণ মন্ত্রী পেয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগে বৃহত্তর কুমিল্লায় চারটি, নোয়াখালীতে একটি এবং চট্টগ্রাম জেলায় দুটিসহ মন্ত্রিত্ব মিলেছে সাতটি।
এর বাইরে রংপুর, খুলনা, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ দুটি করে মন্ত্রিত্ব পেয়েছে। একটিও পায়নি বরিশাল বিভাগ।
প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যেও ঢাকা বিভাগের প্রধান্য বেশি। ১১ জন প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে ঢাকা ও গাজীপুরে আছেন দুইজন এবং টাঙ্গাইলে একজন মিলে ঢাকা বিভাগেরই আছেন ৫ জন।
বাকি ছয় জনের মধ্যে উত্তরবঙ্গের দিনাজপুর ও নাটোর, দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল বরিশাল ও পটুয়াখালীতে একজন করে এবং সিলেট ও খাগড়াছড়িতে আছেন একজন করে।
বৃহস্পতিবার নতুন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের শপথ হবে। সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা শপথ নেবেন টানা চতুর্থবারের মত। এরপর মন্ত্রী ও পরে প্রতিমন্ত্রীদের শপথ পড়ানো হবে।
উত্তরের ভাগ কম
বিদায়ী সরকারে উত্তরবঙ্গ তথা রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের চার জন পূর্ণ মন্ত্রী এবং তিন জন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। নতুন মন্ত্রিসভায় দুই বিভাগ মিলিয়ে পূর্ণ মন্ত্রী আছেন দুই জন। প্রতিমন্ত্রী আছেন কেবল একজন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর উত্তরবঙ্গের পূর্ণ মন্ত্রীদের মধ্যে ছিলেন পঞ্চগড়ের নুরুল ইসলাম সুজন (রেল মন্ত্রী), রংপুরের টিপু মুনশি (বাণিজ্য মন্ত্রী), নওগাঁর সাধন চন্দ্র মজুমদার (খাদ্য মন্ত্রী) ও লালমনিরহাটের নুরুজ্জামান আহমেদ (সমাজকল্যাণ মন্ত্রী)।
তিন প্রতিমন্ত্রী হলেন দিনাজপুরের খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (নৌ পরিবহন), কুড়িগ্রামের জাকির হোসেন (প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা) এবং নাটোরের জুনাইদ আহমেদ পলক (আইসিটি)।
নবম সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া আবুল হাসান মাহমুদ আলী (দিনাজপুর-৪ আসন) এবার মন্ত্রিত্ব ফিরে পাচ্ছেন।
চার পূর্ণ মন্ত্রীর মধ্যে কেবল একজন পদ টেকাতে পেরেছেন। তিনি হলেন নওগাঁর সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিন প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও জুনাইদ আহমেদ পলক নতুন মন্ত্রিসভায় এলেও তারা আগের পদেই আছেন।
রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধাসহ বৃহত্তর রংপুরে কেউ মন্ত্রিত্ব পাননি। বৃহত্তর দিনাজপুরের দুই জেলা পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়েরও কেউ নেই নতুন মন্ত্রিসভায়।
বগুড়া ও জয়পুরহাটেও মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী নেই কোনো। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জেও কারো ভাগ্যের শিকে ছিড়েনি। বৃহত্তর পাবনাও কোনো মন্ত্রিত্ব পায়নি এবার।
রাজশাহী বিভাগে নওগাঁ একটি মন্ত্রী এবং নাটোর একটি প্রতিমন্ত্রীর পদ পেয়েছে।
বৃহত্তর ঢাকার অংশ বেশি
রাজধানীর ১৬টি আসনের মধ্যে তিনটির সংসদ সদস্য হচ্ছেন পূর্ণ মন্ত্রী। তারা হলেন ঢাকা-৯ আসনের সাবের হোসেন চৌধুরী, ঢাকা-১২ আসনের আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঢাকা-১৩ আসনের জাহাঙ্গীর কবির নানক।
টেকনোক্র্যাট হিসেবে মন্ত্রিসভায় ফিরতে যাওয়া ইয়াফেস ওসমানের বাড়িও ঢাকা শহরে। টিকাটুলি এলাকায় তার বেড়ে ওঠা। সেই হিসাবে ঢাকা শহর পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী পেতে যাচ্ছে চারজন।
দুটি প্রতিমন্ত্রীর পদও পাচ্ছে ঢাকা। ঢাকা-১৭ আসনের মোহাম্মদ আলী আরাফাত প্রথমবারের মতো প্রতিমন্ত্রী হয়ে ঢুকতে যাচ্ছেন সরকারে। ঢাকা-৩ আসনের নসরুল হামিদ বিদায়ী সরকারেও প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, এবারও তিনি একই পদে থাকছেন।
ঢাকা-১৯ আসনের এনামুর রহমান ভোটে হারার পর প্রতিমন্ত্রীর পদও হারিয়েছেন।
বিদায় নিতে যাওয়া সরকারে রাজধানীর সংসদ সদস্যদের মধ্যে পূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন একজনই। তিনি হলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা আসাদুজ্জামান খান কামাল। আর টেকনোক্র্যাট কোটায় ছিলেন ইয়াফেস ওসমান।
বিদায়ী সরকারে গাজীপুরের একজন পূর্ণ মন্ত্রী এবং একজন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। পূর্ণ মন্ত্রী গাজীপুর-১ আসনের আ ক ম মোজাম্মেল হক এবারও পদ ধরে রেখেছেন। তবে হারিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
তবে নতুন দুজন প্রতিমন্ত্রী পেয়েছে গাজীপুর। তারা হলেন গাজীপুর-৩ আসনের রুমানা আলী ও গাজীপুর-৪ আসনের সিমিন হোসেন রিমি।
বৃহত্তর ঢাকার মধ্যে মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের কেউ মন্ত্রিত্ব পাননি।
বিদায়ী সরকারে মানিকগঞ্জ-৩ আসনের জাহিদ মালেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের গোলাম দস্তগীর গাজী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ছিলেন।
নরসিংদী-৪ আসনের নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন নতুন সরকারেও মন্ত্রিত্ব ধরে রেখেছেন।
ঢাকা বিভাগে কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য বর্তমানে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান মন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। বিদায়ী মন্ত্রিসভায় এ জেলার কোনো প্রতিনিধিত্ব ছিল না।
বাদ পড়েছেন টাঙ্গাইল-১ আসনের আব্দুর রাজ্জাক, যিনি গত পাঁচ বছর ছিলেন কৃষিমন্ত্রী।
এ জেলার মধ্যে টাঙ্গাইল-৭ আসনের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটো প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন। তার বাবা মকবুল হোসেন ১৯৯৬ সালে ঢাকা-৯ (সে সময়ের ধানমন্ডি-মোহাম্মদপুর) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
বৃহত্তর ফরিদপুরে ‘খুশির হাওয়া’
নতুন সরকারে বৃহত্তর জেলা হিসেবে সবচেয়ে বেশি পূর্ণ মন্ত্রী পেতে যাচ্ছে ফরিদপুর অঞ্চল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য। গোপালগঞ্জ-১ আসনের ফারুক খান এবার মন্ত্রিত্ব ফিরে পেয়েছেন।
এছাড়া ফরিদপুর-১ আসনের মো. আব্দুর রহমান এবং রাজবাড়ী-২ আসনের জিল্লুল হাকিম পূর্ণ মন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।
বিদায়ী সরকারে শেখ হাসিনা একাই এই অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
গুরুত্ব ধরে রেখেছে কুমিল্লা অঞ্চল
বৃহত্তর কুমিল্লার জেলা মন্ত্রী পেয়েছে এবারও।
বিদায়ী সরকারে বৃহত্তর কুমিল্লায় পূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন চার জন। নতুন সরকারেও সংখ্যাটি একই থাকছে। তবে কুমিল্লার একটি কমে সমান সংখ্যা যোগ হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।
কুমিল্লার দুই পূর্ণ মন্ত্রীর মধ্যে কুমিল্লা-১০ আসনের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল নতুন সরকারে থাকছেন না। তবে কুমিল্লা-৯ আসনে বর্তমানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা তাজুল ইসলাম পদ ধরে রেখেছেন।
চাঁদপুর-৩ আসনের দীপু মনিও মন্ত্রিত্ব ধরে রেখেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনিসুল হকও তাই। এবার প্রথমবারের মতো মন্ত্রিত্ব পাচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
চট্টগ্রামের হিস্যা কত
বিদায়ী সরকারে চট্টগ্রাম মহানগরে কোনো পূর্ণ মন্ত্রী ছিল না। চট্টগ্রাম-৯ আসনের সংসদ সদস্য মহিবুল হাসান চৌধুরী ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী। তিনি পদোন্নতি পেয়ে এক লাফে হয়ে যাচ্ছেন মন্ত্রী।
চট্টগ্রাম-৭ আসনের হাছান মাহমুদ গত পাঁচ বছরে সামলেছেন তথ্য মন্ত্রণালয়। আবারও তিনি মন্ত্রিত্ব পেতে যাচ্ছেন।
চট্টগ্রাম-১৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে বড় ধরনের সংস্কার কাজে হাত দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি এবার বাদ পড়ে গেছেন।
তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে বিদায়ী সরকারে ছিলেন বান্দরবানের সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং। তিনি এবার বাদ পড়েছেন। মন্ত্রিসভায় ঢুকছেন খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তবে পূর্ণ মন্ত্রী নন, তিনি হতে যাচ্ছেন প্রতিমন্ত্রী।
বৃহত্তর নোয়াখালীতে সবেধন নীলমনি এবারও কাদের
এ অঞ্চলের একমাত্র সংসদ সদস্য হিসেবে গত তিনটি মেয়াদে নোয়াখালী-৫ আসনের ওবায়দুল কাদের সরকারে আছেন। এবারও তাই ঘটেছে। এই জেলার ছয়টি আসনের অন্য কাউকে মন্ত্রিসভায় নেওয়া হয়নি। লক্ষ্মীপুর ও ফেনী থেকেও কাউকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া হয়নি।
পূর্ণ মন্ত্রী ফিরে পেল ময়মনসিংহ
বিদায়ী সরকারে এ বিভাগের চারটি জেলার সংসদ সদস্যদের মধ্যে কেউ পূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন না। তবে টেকনোক্র্যাট হিসেবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া মোস্তাফা জব্বারের বাড়ি নেত্রকোণার খালিয়াজুড়িতে।
বিদায়ী সরকারে ময়মনসিংহের দুই জন, জামালপুরের দুই জন এবং ময়মনসিংহের একজন ছিলেন প্রতিমন্ত্রী।
তবে এবার বিভাগ দুটি পূর্ণ মন্ত্রী পেতে যাচ্ছে। তারা হলেন ময়মনসিংহ-৯ আসন থেকে নির্বাচিত আব্দুস সালাম এবং জামালপুর-২ আসনের মো. ফরিদুল হক খান।
বিদায়ী সরকারে ফরিদুল ছিলেন প্রতিমন্ত্রী।
ময়মনসিংহ-২ আসনের শরীফ আহমেদ, ময়মনসিংহ-৫ আসনে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবার মনোনয়নই পাননি। নতুন মন্ত্রিসভাতেও তিনি নেই বিবেচনায়।
গত নির্বাচনের পর জামালপুর-৪ আসনের মুরাদ হাসানকে করা হয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী। পরে তাকে দেওয়া হয় তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব। এক অভিনেত্রীর সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় বাদ পড়েন তিনি। এবার জোটেনি মনোনয়ন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোট করে হেরেও গেছেন।
নেত্রকোণা-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. আশরাফ আলী খান খসরু এবার ভোটে জিতে এসেছেন। কিন্তু প্রতিমন্ত্রীর পদ আর ফিরে পাচ্ছেন না। তিনি বিগত সরকারে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মন্ত্রী পেল খুলনা বিভাগ
বিদায়ী সরকারে গোটা বিভাগের ১০টি জেলায় কাউকে পূর্ণ মন্ত্রিত্ব দেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এবার দুজন পূর্ণ মন্ত্রী পেতে যাচ্ছে বিভাগটি।
তাদের মধ্যে একজন হলেন খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত প্রথমে প্রতিমন্ত্রী ও পরে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তবে সরকারের পরের মেয়াদে মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি তিনি।
মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন গত পাঁচ বছর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এবার তিনি পুরো মন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।
যশোর-৫ আসন থেকে জিতে আসার পর গত মন্ত্রিসভায় স্বপন ভট্টাচার্যকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী করা হয়। এবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে ভোটে হেরে গেছেন।
বিদায়ী সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান এবার খুলনা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। নতুন সরকারে তার জায়গা হচ্ছে না।
বরিশাল বিভাগে এবারও ‘কেউ নেই’
বিদায়ী সরকারের মত এবারও বরিশাল বিভাগের কাউকে মন্ত্রী করা হচ্ছে না। তবে বরিশাল-৫ আসনের সংসদ সদস্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক নতুন সরকারেও প্রতিমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।
পটুয়াখালী-৪ আসনের মহিবুর রহমান প্রথমবারের মত মন্ত্রিসভায় ঢুকতে যাচ্ছেন মন্ত্রিসভায়। এই বিভাগের বাকি জেলা, ভোলা, পিরোজপুর ও ঝালকাঠি জেলা থেকে কাউকে মন্ত্রিসভায় নেওয়া হয়নি।
বিদায়ী সরকারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছিলেন শ ম রেজাউল করিম।
১৯৯৬, ২০০৯ ও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভায় বরিশাল অঞ্চল থেকে বেশ কয়েকজন পূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন।
সবচেয়ে বেশি হারাল সিলেট
সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্যরা টানা চারটি সরকারে পূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন। এবার বাদ পড়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
বিদায়ী সরকারে সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইমরান আহমেদ ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। তিনিও এবার বাদ পড়েছেন।
টেকনোক্র্যাট হিসেবে পূর্ণ মন্ত্রী হতে যাওয়া সামন্তলাল সেনের চিকিৎসক হিসেবে পরিচিতি ঢাকা শহরকে ঘিরেই। তবে তার পৈত্রিক বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথে। সেই হিসেবে সিলেটবাসী একটি পূর্ণ মন্ত্রী পাওয়ার কথা ভাবতেও পারে।
কেবল জেলা নয়, বৃহত্তর সিলেট এবার মন খারাপ করতে পারে। কারণ, চার জেলা মিলিয়ে কেবল একজন পূর্ণ মন্ত্রী এবং একজন প্রতিমন্ত্রী পেতে যাচ্ছে।
প্রথমবারের মতে মন্ত্রী হচ্ছেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুস শহীদ। এছাড়া সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত শফিকুর রহমান চৌধুরী হচ্ছেন প্রতিমন্ত্রী।
সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য এম এ মান্নান ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী। জোর গুঞ্জন ছিল, তিনি এবার অর্থমন্ত্রী হতে পারেন। কিন্তু দেখা গেল তিনি বাদই পড়ে গেছেন।
মৌলভীবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহাব উদ্দিন বিদায়ী সরকারে সামলেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। তাকেও রাখা হয়নি নতুন সরকারে।
হবিগঞ্জ-৪ আসনে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের কাছে হারার পর দুইবারের সংসদ সদস্য মো. মাহবুব আলী খেলেন আরেক ধাক্কা। বিদায়ী সরকারে তিনি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে। বাদ পড়ে গেছেন এবার।