মোট ২৮জন প্রার্থী ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
Published : 07 May 2024, 11:59 PM
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোটের আয়োজন করেছে নির্বাচন কমিশন।
>> বুধবার সকাল ৮টায় দেশের ১৩৯ উপজেলায় ভোট শুরু হয়েছে, চলবে একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
>> এর মধ্যে ২২টি উপজেলায় ইভিএমে এবং বাকিগুলোতে প্রচলিত ব্যালট পেপারে ভোট হচ্ছে।
স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতার আশঙ্কা প্রকাশ করে যে কোনো মূল্যে নির্বাচন সুষ্ঠু করার ওপর তাগিদ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তিনি বলেছেন, এই নির্বাচনে ব্যর্থ হলে বিগত সংসদ নির্বাচনে যে ‘গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা’ প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তা ‘ক্ষুণ্ন’ হতে পারে৷ বাংলাদেশে যে গণতন্ত্র আছে, তা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ‘প্রমাণ’ করতে হবে।
প্রথম ধাপের নির্বাচনের জন্য তফসিল হয়েছিল ১৫২ উপজেলার। মনোনয়নপত্র জমা পড়ে ১৫০টিতে। স্থগিত, ধাপ পরিবর্তন ও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বুধবার ভোট হবে ১৩৯ উপজেলায়।
# এই ধাপে মোট ১ হাজার ৬১৯ জন প্রার্থী রয়েছেন।
# তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৬৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬১৯ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৩৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
# এ ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন করে, অর্থাৎ মোট ২৮জন প্রার্থী ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
# হাতিয়া, মুন্সীগঞ্জ সদর, বাগেরহাট সদর, পরশুরাম ও শিরবচর– এই পাঁচ উপজেলায় তিনটি পদেই একক প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে এসব উপজেলায় ভোট করার প্রয়োজন পড়ছে না।
নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৭ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ থেকে ১৯ জন সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। বিশেষ এলাকায় (পার্বত্য ও দুর্গম এলাকা) সাধারণ কেন্দ্রে ১৯জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২০ থেকে ২১ জন সদস্য মোতায়েন থাকছেন।
ভোটের মাঠে নিয়োজিত রয়েছেন ১৫০ জন নির্বাহী হাকিম। উপজেলা ভিত্তিক বিচারিক হাকিমরাও নিয়োজিত থাকবেন।
ফিরে দেখা
দলীয় প্রতীকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ভোট করার সুযোগ থাকলেও স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বা মনোনয়ন দেয়নি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ফলে আওয়ামী লীগ নেতারা নির্বাচন করছের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে।
সবশেষ ২০১৯ সালে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট হয় পাঁচ ধাপে। সেবার পাঁচ ধাপ মিলিয়ে গড়ে ভোট পড়ে ৪১ শতাংশের বেশি।
বিএনপি ভোটে না থাকায় সেবার উপজেলা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের বিদ্রোহী প্রার্ধীদের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকায় ভোট করে ২৮৮ জন উপজেলা চেয়ারম্যান হন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে ১৩১ জন জেতেন চেয়ারম্যান পদে, তাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের নেতা।
২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন প্রণয়নের পর থেকে স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করে আসছে রাজনৈতিক দলগুলো। দেখা গেছে, একজনকে প্রতীক দিলে আরেকজন বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছেন।
এর আগে ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গড়ে ৬১ শতাংশ ভোট পড়েছিল। ২০০৯ সালের নির্বাচনে ভোটের হার ছিল ৬৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
১৯৮৫ সালে উপজেলা পরিষদ চালু হওয়ার পর ১৯৯০ ও ২০০৯ সালে একদিনেই ভোট হয়েছিল। ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা নির্বাচন ছয়টি ধাপে ও ২০১৯ সালে পাঁচ ধাপে পঞ্চম উপজেলা পরিষদের ভোট হয়।
এবার চার ধাপে উপজেলা ভোট
দেশের মোট ৪৯৫ উপজেলার মধ্যে নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫ উপজেলায় চার ধাপে ভোট হচ্ছে এবার। পরে মেয়াদোত্তীর্ণ হলে বাকিগুলোয় ভোটের আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন। প্রথম ধাপের ১৫০ উপজেলায় ভোট হবে ৮ মে।
এরমধ্যে প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২৪ ও চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নির্বাচন হবে; বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে ভোট হবে।
আরো পড়ুন:
প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলায় ভোট ৮ মে
উপজেলা ভোট: মন্ত্রী-এমপিদের প্রচার ঠেকাতে স্পিকারের 'দুয়ারে' ইসি