জামিনে মুক্ত হাজি সেলিম ফুলের মালা গলায় নিয়ে ছাড়লেন হাসপাতাল

গত বছরের ৬ ডিসেম্বর হাজি সেলিমের জামিন মঞ্জুর করে আপিল বিভাগ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2023, 10:34 AM
Updated : 17 Jan 2023, 10:34 AM

দুর্নীতির দায়ে দশ বছরের সাজায় দণ্ডিত পুরান ঢাকার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ সেলিম দশ মাস পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। 

আলোচিত এই এমপি এতদিন কারা তত্ত্বাবধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ‘চিকিৎসাধীন’ ছিলেন। কারাগার ঘুরে জামিনের নথিপত্র হাসপাতালে পৌঁছালে সেখান থেকেই মঙ্গলবার দুপুরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ জানান।

হাসপাতালের বাইরে জড়ো হওয়া নেতাকর্মীরা ফুলের মালা দিয়ে হাজি সেলিমকে বরণ করে নেন। পরে তিনি গাড়িতে করে হাসপাতাল ছাড়েন। 

হাজি সেলিমের সহকারী মহিউদ্দিন বেলাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্যার এখন মুক্ত। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে তিনি আজিমপুর কবরাস্থানে তার বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করেছেন। এরপর গেছেন মদিনা টাওয়ারে, সেখান থেকে বাসায় যাবেন।”

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ গত বছরের ৬ ডিসেম্বর হাজি সেলিমের জামিন আবেদন মঞ্জুর করে।

১০ বছরের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে তাকে আপিলের অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি ওই  আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাকে জামিন দেওয়া হয়।

যে মামলায় দণ্ড নিয়ে হাজি সেলিম কারাগারে ছিলেন, ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে জরুরি অবস্থার মধ্যে সেটি দায়ের করেছিল দুদক।

২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল বিশেষ আদালত হাজি সেলিমকে দুই ধারায় মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়। পাশাপাশি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে সহযোগিতার অভিযোগে হাজি সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা বেগমকে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

হাজি সেলিম এবং তার স্ত্রী ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করলে ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি উচ্চ আদালত তাদের সাজা বাতিল করে রায় দেয়। দুদক তখন সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করে।

ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাই কোর্টের রায় বাতিল হয়ে যায়। সেই সঙ্গে হাজি সেলিমের আপিল পুনরায় হাই কোর্টে শুনানির নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ।

সেই শুনানি শেষে গত বছরের ৯ মার্চ হাই কোর্ট বেঞ্চ একটি ধারায় হাজি সেলিমের ১০ বছরের সাজা বহাল রাখে এবং অন্য ধারায় ৩ বছরের সাজা থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়। সেই সঙ্গে তাকে এক মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত ২২ মে ঢাকার ৭ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে হাজি সেলিম জামিন আবেদন করেন। বিচারক শহীদুল ইসলাম তা নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়।

পরদিন স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে হাজি সেলিমকে কারা তত্ত্বাবধানে ভর্তি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।

গত ২৪ মে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি (লিভ টু আপিল) চেয়ে আবেদন করেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজি সেলিম। একইসঙ্গে জামিন চেয়েও আবেদন করেন তিনি।

সে আবেদনের শুনানির পর তা আপিল বিভাগ ৬ ডিসেম্বর জামিন মঞ্জুর করলে তার মুক্তির পথ খোলে।

পুরনো খবর

আইনপ্রণেতা হাজি সেলিম দণ্ড নিয়ে কারাগারে

হাজি সেলিম আদালতে, সমর্থকদের ভিড়

হাজি সেলিমের জামিন আবেদন, আদালতে ভিড়

হাজী সেলিমের এমপি পদের কী হবে?

তথ্য গোপন: হাজী সেলিমের শাস্তি চেয়ে দুদকের আপিল

হাজী সেলিমের ১০ বছরের দণ্ড বহাল

হাজী সেলিমের পুরনো মামলার নথি তলব হাই কোর্টের

হাজী সেলিমকে উপদেষ্টামণ্ডলীতে রেখে আ. লীগের ঢাকা দক্ষিণের কমিটি

হাজী সেলিমের যত দখল

নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারপিটের মামলায় ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

Also Read: দুর্নীতি মামলায় জামিন পেলেন দণ্ডিত হাজি সেলিম