হাজী সেলিমকে উপদেষ্টামণ্ডলীতে রেখে আ. লীগের ঢাকা দক্ষিণের কমিটি

সম্মেলনের প্রায় এক বছর পর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে আলোচিত-সমালোচিত হাজী সেলিমকে উপদেষ্টামণ্ডলীতে রাখা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2020, 02:38 PM
Updated : 19 Nov 2020, 02:56 PM

নতুন এই কমিটিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এবং বিগত কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদকে সদস্য রাখা হয়েছে।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহকে সহ-সভাপতি হিসেবে রাখা হয়েছে এই কমিটিতে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ এই কমিটি অনুমোদন দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিম আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিগত কমিটিতে সদস্য ছিলেন। তার আগে অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের কমিটিতে থেকেও ২০১৪ সালের নির্বাচনে দল মনোনীত প্রার্থী মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে হারিয়ে ঢাকার এই আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন তিনি।

সম্প্রতি হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমের সহযোগীরা রাস্তায় নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তাকে মারধর করার পর ব্যাপক আলোচনা হয়। ২৫ অক্টোবর রাতের ওই ঘটনার পর দিন পুরান ঢাকার সোয়ারিঘাটে হাজী সেলিমের বাসায় অভিযান চালিয়ে মদ্যপান ও অবৈধভাবে ওয়াকিটকি রাখায় তার ছেলে ইরফান সেলিমকে দেড় বছরের কারাদণ্ড দেয় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

এ সময় পুরান ঢাকার প্রভাবশালী ব্যবসায়ী-রাজনীতিক হাজী সেলিমের দেখা না মিললেও সপ্তাহখানেক পর পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডে কেন্দ্রীয় কারাগারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে জেলহত্যা দিবসের অনুষ্ঠানে দেখা যায় তাকে।

হাজী সেলিমসহ ২৭ জনকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীতে রাখা হয়েছে। খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহসহ ১১ জনকে সহ-সভাপতি করা হয়েছে।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন- মোরশেদ হোসেন কামাল, মো. মিরাজ হোসেন ও মহিউদ্দিন আহমেদ মহি।

অন্যান্য সম্পাদকীয় পদের মধ্যে আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট জগলুল কবির, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আবদুর রহমান, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আনিস আহম্মেদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শেখ মো. আজহার, দপ্তর সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন রিয়াজ, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক চৌধুরী সাইফুন্নবী সাগর, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক নাঈম নোমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এফ এম শরিফুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাহমিনা সুলতানা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন হেলাল, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক সাইদুল ইসলাম খান পল, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক এস কে বাদল, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. নাসির, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাংষ্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতিন ভুইয়া, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন ডা. নজরুল ইসলাম।

সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন গোলাম আশরাফ তালুকদার, মো. আকতার হোসেন ও গোলাম সরোয়ার কবির।

ফজলে নূর তাপস ও শাহ আলম মুরাদসহ ৩৬ জনকে কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

গত বছর ৩০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পর আবু আহমেদ মন্নাফীকে সভাপতি ও মো. হুমায়ুন কবিরকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়।

এর এক বছর পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আশা করি, এই কমিটির নবনির্বাচিত সব সদস্য নিষ্ঠা, শৃঙ্খলা, আন্তরিকতা ও সততার সঙ্গে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হবেন এবং সবার ঐক্যবদ্ধ  প্রচেষ্টায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগকে আরও সুদৃঢ় সংগঠিত ও শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করবেন।

“জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষুধা-দারিদ্র্য শোষণ বঞ্চনা ও দুর্নীতিমুক্ত একটি উন্নত সমৃদ্ধ আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রামে জনগণকে সম্পৃক্ত এবং ঐক্যবদ্ধ করতে নতুন নেতৃত্ব যথাযথ ভূমিকা পালন করবে বলে বিশ্বাস করি।”