নগরকান্দার এমএন একাডেমি স্কুল প্রাঙ্গনে জানাজার আগে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এই সংগঠকের প্রতি জানানো হয় রাষ্ট্রীয় সম্মান।
Published : 12 Sep 2022, 03:06 PM
রাজনীতির মাঠের সহকর্মী, পরিবারের সদস্যসহ নানা শ্রেণিপেশার হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর জানাজা হল ফরিদপুরের নগরকান্দায়।
সোমবার সকালে নগরকান্দার এমএন একাডেমি স্কুল প্রাঙ্গনে জানাজার আগে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এই সংগঠকের প্রতি জানানো হয় রাষ্ট্রীয় সম্মান।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাজেদা চৌধুরী সংসদে ফরিদপুর-২ আসনের (সালথা, নগরকান্দা এবং সদরপুরের কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন) ভোটারদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন বহু বছর। রাজনৈতিক সহকর্মীদের কাছে তিনি হয়ে উঠেছিলেন ভরসা আর আস্থার স্থান। তার জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে স্কুল প্রাঙ্গণ।
বেলা ১১টার আগে পদ্মাসেতু হয়ে নগরকান্দায় পৌঁছায় এই আওয়ামী লীগ নেতার কফিন। জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকস দল এ সময় গার্ড অব অনার দেয়।
তারপর স্কুল প্রাঙ্গনে সাজেদা চৌধুরীর জানাজা হয়। নেতা, কর্মী, অনুসারীরা প্রয়াত নেতার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান।
উচ্চ রক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা নিয়ে অগাস্টের শেষ দিকে ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদা চৌধুরী। সেখানেই রোববার মধ্যরাতে তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ছোট ছেলে শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল, ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহ্জাহান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ আরিফসহ রাজনীতিবীদ ও সরকারি কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন এ সময়।
জানাজা শেষে সংসদ উপনেতার কফিন নিয়ে পরিবারের সদস্য ও দলের নেতারা ঢাকার পথে রওনা হন। বিকেলে সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার কফিন রাখা হবে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।
বাদ আসর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আরেকটি জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে।
তরুণ বয়সেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া সাজেদা ১৯৬৯ সালে মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন।
১৯৭১ সালে তিনি সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে নেন দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়ে দেশে ফেরার পর তার সঙ্গেও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন সাজেদা।
মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ২০১০ সালে সাজেদা চৌধুরীকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে সরকার। তার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।