“দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়ে দেশকে পঙ্গু করে দেওয়া। এটাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য।”
Published : 29 Jul 2024, 03:51 PM
রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে হামলাকারীরা বাংলাদেশকে একটি ‘অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু।
তিনি বলেছেন, “আজকে আর বলতে অসুবিধা নেই, তারা (হামলাকারীরা) দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে এখন পর্যন্ত মেনে নিতে পারেনি, বিশ্বাস করে না। যারা দেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত করতে চায় তাদেরই কর্ম হচ্ছে আজকের এই স্থাপনাগুলো ধ্বংস করে দেওয়া, যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া। দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়ে দেশকে পঙ্গু করে দেওয়া। এটাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য।”
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঘটে যাওয়া সহিংসতায় হামলার শিকার বনানীর সেতুভবন ও মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা অধিদপ্তর সোমবার দুপুরে পরিদর্শন করেন ১৪ দলের নেতারা।
এ সময় আমু সাংবাদিকদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক বিশ্বে একটি সমাদৃত দেশ ও জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, সেজন্য তাদের গাত্রদাহ। তাই আজকে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটনা ও ষড়যন্ত্র হচ্ছে।”
আন্দোলনকারীদের কাঁধে ভর দিয়ে ‘স্বাধীনতাবিরোধীরা’ সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে মন্তব্য করে, দুষ্কৃতকারীদের প্রতিহত করতে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, “রাষ্ট্রীয় স্থাপনার ওপর আঘাত করে তারা চেষ্টা করেছে রাষ্ট্রকে অকার্যকর করে দেওয়ার। অকার্যকর রাষ্ট্র যদি তারা প্রমাণ করতে পারে, তাহলে বিদেশ থেকে যে সহযোগিতা তারা পাচ্ছে তা হয়তো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। সে কারণেই এই সেতুভবনের উপর আক্রমণকে আমাদের জাতীয় জীবনের উপরও আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।”
হামলার জন্য জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করে মেনন বলেন, “এটা স্পষ্ট যে জামায়াত-শিবিরের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররাই যারা খুলনা, সাতক্ষীরা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রংপুর থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছিল।”
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজ ভান্ডারিসহ ১৪ দলের নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মাসের প্রথমে শুরু হওয়া শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংস রূপ নেয় মাসের মাঝামাঝি থেকে। সারা দেশে ব্যাপক সংঘাতের মধ্যে ১৮ জুলাই বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা শুরু হয়।
রামপুরায় বিটিভি ভবন, বনানীতে সেতু ভবন, মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
দুই দফা হামলা করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মহাখালী ও বনানীর দুটি টোল প্লাজা। হামলা করে ভাঙচুর করা হয় মহাখালী টোল প্লাজা সংলগ্ন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কার্যালয়েও।
একইদিনে মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় একদল মানুষ। তারা টিকেট ভেন্ডিং মেশিন, মূল স্টেশনে যাত্রী প্রবেশের পাঞ্চ মেশিনসহ সব কিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। ওইদিন পল্লবী ও ১১ নম্বর স্টেশনেও হামলা হয়। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন মেরামতে এক বছর সময় লেগে যাবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।