রাজধানীর মিরপুরের কালশীতে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে হতাহতের ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা।
Published : 22 Jun 2014, 05:53 PM
১০ জন ‘বিহারি’ মারা যাওয়ার ঘটনাকে ‘দুর্ঘটনা’ বলে দাবি করে তিনি বলেছেন, “আমি কিঞ্চিত দোষী হলেও আমার সর্বোচ্চ বিচার হোক। আমি দোষী হলে রাজনীতি ছেড়ে দেবো”
একটি মহল রাজনৈতিক ‘ফায়দা’ হাসিলের জন্য তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য।
“এই ঘটনা নিয়ে একটি কুচক্রী মহল রাজনৈতিক ফয়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। অবাঙালিরা আমাকে ভালবাসে। আমার ডাকে শত শত অবাঙালি ছুটে আসবে।”
কালশীর ঘটনা নিয়ে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে হুইপ ইকবালুর রহিমের কক্ষে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া জানান ইলিয়াস মোল্লা। ইকবালুর রহিমও এসময় উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৪ জুন ভোরে মিরপুরের কালশীতে হামলার সময় কয়েকটি ঘরে আগুন দেয়া হলে পুড়ে মারা যান নারী ও শিশুসহ নয় জন। এরপর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন আরেকজন।
পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী,শবে বরাতের রাতে আতশবাজি ফাটানো নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে এই সংঘাত বাঁধে। তবে ক্যাম্পবাসী এই হামলার জন্য ইলিয়াস মোল্লার অনুসারীদের দায়ী করে বলছেন, তাদের উচ্ছেদ করে জমি দখলের জন্য এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
বিএনপিও এই ঘটনার জন্য ইলিয়াস মোল্লাকে দায়ী করে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে।
ইলিয়াস মোল্লা জমি দখলের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সাংবাদিকদের কাছে তার সম্পদের বিবরণও তুলে ধরেন।
“আইয়ুব খান (পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট) বলেছিলেন, আমার বাবা মিরপুরের ল্যান্ডলর্ড। এখনো যা সম্পদ সম্পত্তি রয়েছে, তাতে ১০০ বছর খেলেও ফুরোবে না। আমার বাবা যখন পুরান ঢাকায় ঢুকতেন তখন লোকজন বলত- ‘মিরপুরের রাজা ঢুকেছেন’।”
‘বিহারিদের’ দুটি পক্ষের বিবাদে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে দাবি করে ইলিয়াস মোল্লা বলেন, “অবাঙালিদের মধ্যে দুটি গ্রুপ ছিল, তার সঙ্গে বাঙালিরা মিলেছে। গত ৪২ বছরেও এমন আতশবাজির ঘটনা ঘটেনি। যে বাড়িটিতে ১০ জন মারা গেছে, তাদের ঘরের কাছে কাগজপত্র এবং টায়ার জালিয়ে আগুন ছিটানো হয়েছে। এ থেকেই আগুন তাদের ঘরে লাগতে পারে।”
কালশীর ওই ক্যাম্পবাসীর অভিযোগ, ঘটনার কয়েকদিন আগে পাশের ক্যাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে বলেছিলেন ইলিয়াস মোল্লা। তাতে রাজি না হওয়ায় ‘হুমকি’ দিয়েছিলেন।
“যে জায়গাটা নিয়ে অভিযোগ, সেই জায়গাটি ক্যাম্পের বাইরে। সরকারি জমি দখল করা হয়েছে। তারা অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। তার পরেও আমি তাদের বাড়িতে বাড়িতে গ্যাসের সংযোগের ব্যবস্থা করেছি। আমি দখল করলে তাদের গ্যাস সংযোগ দেব কেন?”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে যারা আমার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল, তারা অভিযোগ তুলেছে। গত নির্বাচনে তারা আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। তারা আওয়ামী লীগকে যাতে বেচে খেতে না পারে, তার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করি।”
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এই সংসদ সদস্য বলেন, “তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, তদন্তে প্রমাণিত হবে, কে দোষী। যে দোষী প্রমাণিত হবে তার বিচার হবে।”