তিন দিনের হরতালের পর আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করতে দলের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
Published : 29 Oct 2013, 10:12 PM
৬০ ঘণ্টার হরতাল শেষের সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক শুরু হয়ে।
সোয়া ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের জানানো হয়নি। বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসন ১৮ দলীয় জোট নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
তবে খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে এই বৈঠকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে বলে বিরোধীদলীয় নেতার প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন।
হরতালে হত্যা, নির্যাতন, গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ এবং শুক্রবার গায়েবানা জানাজার কর্মসূচি এর আগে ঘোষণা করে ১৮ দল।
স্থায়ী কমিটির সদস্য আর এ গনি, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মাহবুবুর রহমান, জমিরউদ্দিন সরকার, এম কে আনোয়ার, আ স ম হান্নান শাহ, সারোয়ারী রহমান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আবদুল মঈন খান ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈঠকে ছিলেন।
দুই নেত্রীর সংলাপ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের সদস্যদের এই বৈঠক হল।
সংবিধান অনুযায়ী আগামী ২৪ জানুয়ারির মধ্যে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে এবং ওই সময় পর্যন্ত সংসদ বহাল থাকবে, দেশ চলবে বর্তমান সরকারের অধীনেই।
এ বিষয়ে আপত্তি তুলে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করে আসছে বিরোধী দল বিএনপি। নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শেখ হাসিনার থাকা নিয়েও তাদের আপত্তি।
এ নিয়ে রাজনৈতিক সংঘাতের আশঙ্কার মধ্যে গত ১৮ অক্টোবর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় মন্ত্রিসভার প্রস্তাব তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
গত ২২ অক্টোবর বিএনপির পক্ষ থেকে ওই প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনার জন্য আওয়ামী লীগকে চিঠি দেয়া হয়। পরদিন সংসদে গিয়ে বিএনপির সাংসদরা ওই প্রস্তাব পড়ে শুনিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আবারো আলোচনার উদ্যোগ নিতে বলেন।
এরপর গত শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৮ দলীয় জোটের জনসভা থেকে আলোচনায় বসার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে দুই দিন সময় বেঁধে দেন খালেদা। এর মধ্যে উদ্যোগ না নিলে রোববার থেকে টানা ৬০ ঘণ্টার হরতালের ডাক দেন।
ওই সময় শেষ হওয়ার আগেই শনিবার টেলিফোনে কথা হয় দুই নেত্রীর মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী সোমবার গণভবনে বসার আমন্ত্রণ জানান বিরোধী দলীয় নেতাকে। হরতাল প্রত্যাহারেরও আহ্বান জানান তিনি।
কিন্তু বিএনপি চেয়ারপার্সনের পক্ষ থেকে বলা হয়, হরতাল প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়। হরতাল শেষে বিরোধী দলীয় নেতা আমন্ত্রণ গ্রহণ করতে প্রস্তুত।
এরপর সংলাপের পরবর্তী উদ্যোগ নিতে দুই দল পরস্পরকে আহ্বান জানিয়ে আসছে।