জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাংচুরে মদদদাতাসহ জড়িতদের যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই তাদের পেটানোর হুমকি দিয়েছে ছাত্রলীগ।
Published : 06 Dec 2020, 04:56 PM
কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় সংগঠনের নেতা-কর্মীদের এ নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, “জাতির পিতাকে নিয়ে ওরা যেই ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, আর এক চুলও ছাড় নয়। ওরা আমাদের কলিজায় হাত দিয়েছে। ওদের যেখানেই পাবেন, সেখানে গণধোলাই দেবেন।”
ভাস্কর্য বিরোধিতার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ‘মাথা গরম’ না করতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনার পরদিন তার এই বক্তব্য এল।
মুজিববর্ষে ঢাকার ধোলাইরপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের প্রকাশ্য বিরোধিতায় নেমেছে হেফাজতে ইসলামের নেতারা। এনিয়ে বিতর্কের মধ্যে শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়া শহরে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাংচুর হয়।
তার প্রতিবাদে রোববার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ডাকে ছাত্রলীগ। দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে বের হয় কেন্দ্রীয় মিছিল। পরে রাজু ভাস্কর্যে হয় সমাবেশ।
ভাস্কর্যবিরোধীদের উদ্দেশে নাহিয়ান বলেন, “তোদেরকে আর আপনি বলার সুযোগ নেই। জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাঙার পেছনে তোদের মদদ রয়েছে। মামুনুল হক ভাস্কর্য ভাঙতে উস্কে দিয়েছে। তোদেরকে শায়েস্তা করতে ছাত্রলীগই যথেষ্ট।
“তোরা আমাদেরকে ক্ষ্যাপায় তুলছিস। আমরা সব সময় শান্তিপ্রিয়, শান্তিতে বিশ্বাসী। কিন্তু তোদের মতো কুলাঙ্গারদের জন্য আমাদেরকে অনেকে বেয়াদব বলে। তোদের মতো কুলাঙ্গারদের শায়েস্তা করতে যদি আমাদের বেয়াদব হতে হয়, সেই বেয়াদব আমরা হতে চাই।”
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে নাহিয়ান বলেন, “সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হল, যেখানেই ওয়াজ মাহফিল হবে, আপনারা আগে থেকেই সেখানে অবস্থান নেবেন। ওয়াজ মাহফিলে পাকিস্তানপন্থি রাজাকারদের দোসর, যারা ওয়াজ মাহফিলে বসে রাজনৈতিক আলোচনা করে, যদি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করে, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কথা বলে, আপনারা তাদেরকে সেই ওয়াজ মাহফিলেই প্রতিহত করবেন। তাদেরকে দাঁতভাঙা জবাব দেবেন।”
ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, “১৯৭১ সালে যারা বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিল, দেশে তাদের ঠাঁই হয় নাই। গোলাম আজম দেশে ফিরে বড় নেতা হলেও পরিণতি ভালো হয়নি। পাকিস্তানের সেই দোসররা আজকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলে নাই হয়ে গেছে। আপনারাও সাবধান হয়ে যান। অন্যথায় ফাঁসির দড়ি হবে আপনাদের শেষ পরিণতি।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, “কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে ওরা আমাদের বুকে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। যারা আমাদের কলিজায় হাত দিয়েছেন, আপনাদের কলিজা ছিঁড়ে শুকুন দিয়ে খাওয়াব।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, “আজকে যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে বিরোধিতা করছে, কালকে তারা বলবে রাজু ভাস্কর্য থাকবে না, শহীদ মিনার থাকবে না, সেখানে ফুল দেওয়া দেওয়া হারাম।
“এই ধরনের কাঠ মোল্লাদের প্রতিহত করতে হবে। যারা কোমলমতি ছাত্রদের বলাৎকার করছে, ছাত্রদের অধিকার হরণ করে রাজনৈতিক শ্রমিকে পরিণত করেছে, তাদের মুখোশ উন্মোচনের সময় এসেছে।”
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদি হাসান, সাধারণ সম্পাদক জুবায়েরর আহমেদ, উত্তরের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।