ঢাকা সিটির নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ পেতে আরও আট দিন বাকি; তারপর শুরু হবে প্রচারণা। এর মধ্যেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলের প্রার্থীরা ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে উৎসবের আমেজ দেখছেন।
Published : 02 Jan 2020, 05:48 PM
অন্যদিকে নির্বাচনের পরিবেশ ও ভোট কারচুপি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নিরপেক্ষ ও ভোটের সুন্দর পরিবেশ প্রত্যাশী বিএনপিসমর্থিতসহ অন্য কাউন্সিল প্রার্থীরা।
৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের প্রার্থিতা যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার। দুই সিটি মিলে মেয়র পদে ১৩ জনের সঙ্গে সহস্রাধিক কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। এখন ১০ জানুয়ারি বৈধ প্রার্থীদের জন্য প্রতীক বরাদ্দ নেওয়ার পালা।
আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের প্রার্থীরা এর মধ্যেই ‘ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে উৎসবের আমেজ’ খুঁজে পেলেও প্রথম ইভিএমে ভোটের পরিবেশ নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটককের কাছে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অন্য প্রার্থীরা।
প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট নিয়ে বিএনপিসমর্থিত প্রার্থীরা সংশয়ে থাকলেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা স্বাগত জানাচ্ছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়েও দ্বিধায় রয়েছেন বিরোধী প্রার্থীরা।
প্রার্থিতা বাছাইয়ের দিন গোপীবাগে ঢাকা দক্ষিণ ও আগারগাঁওয়ে ঢাকা উত্তর সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ছিল মেয়র এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনে কাউন্সিলর প্রার্থীদের পদচারণায় মুখর।
ঢাকা দক্ষিণের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মো. শামসুল হুদা বলেন, “ইভিএম নিয়ে আমাদের আশঙ্কা আগেও ছিল এখনও আছে। এতে জনগণের ভোটাধিকারের সত্যিকার প্রতিফলন ঘটবে কি না তা এখনও নিশ্চিত নই।
“তবু আমরা আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। সুষ্ঠু ভোট হলে আমরা বিজয়ী হব। আশা করি, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।”
তিনি বলেন, “পৃথিবী আধুনিক হচ্ছে, ভোটগ্রহণ পদ্ধতিও আধুনিক হচ্ছে। এতে আমি কোনো সমস্যা দেখছি না। ইভিএমে ভোট নিলে ভালোই হবে।”
নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে আশাবাদী দক্ষিণের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মকবুল হোসেন বলেন, “যেহেতু বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে সেজন্য নির্বাচন যথেষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে।”
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৬ নং ওয়ার্ডে ইসলামী আন্দোলন সমর্থিত প্রার্থী এ কে নাজমুল হক বলেন, স্বতঃস্ফূর্ত ভোটের নিশ্চয়তা পেলে সিটি নির্বাচনেও জনগণ ভোট দিতে আসবে।
“এবার ইভিএম ব্যবহার করা হবে ভোটে- এটা আমাদের জন্য হবে এক নতুন অভিজ্ঞতা। নতুন প্রযুক্তিতে কেমন ভোট হবে, তা জানি না। তবে এটা ব্যবহার না করলেই ভালো।”
একই ওয়ার্ডের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেলোয়ার প্রধান বলেন, “ভোটের পরিবেশ আছে কি নাই, তা এখনই বলতে পারছি না। ১০ তারিখে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পর হয়তো ভোটের আমেজ আর পরিবেশ কেমন আছে তা বলা যাবে।“
তবে উত্তরের ৮ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আবুল কাশেম মোল্লা দাবি করেন, তার ওয়ার্ডে ইতোমধ্যে ভোটের আমেজ চলে এসেছে।
উত্তরের ৬,৭, ৮ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী স্বপ্না আহমেদ বলেন, “এখন পর্যন্ত তো ভোটের পরিবেশ ভালো দেখছি। ভোটে কারচুপি হবে কি না, সেটা বলা যাচ্ছে না।”
একই আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী রুমানা পারভিন বলেন, “ভোটের আমেজ বইতে শুরু করেছে। জনগণের সম্পৃক্ততা বেড়েছে; ভোট হবে উৎসবমুখর।”
বিএনপি সমর্থিত আরেক প্রার্থী সৈয়দা মিলি জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, “ভোট স্বতঃস্ফূর্ত হবে কি না, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। প্রতীক বরাদ্দ হলে দেখি কী ঘটে।”
তবে ইভিএমের ভোটে কারচুপির কোনো সুযোগ থাকবে না বলে দাবি করে নির্বাচন কমিশন বলেছে, ইভিএমের ভোট নিয়ে প্রার্থীদের সন্তুষ্টির জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ভোটের আগে ২৫ এবং ২৬ জানুয়ারি প্রত্যেক কেন্দ্র ও পাশের এলাকায় কীভাবে ইভিএমে ভোট দিতে হয় সে বিষয়ে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে। ২৮ জানুয়ারি ফাইনাল ‘মক ভোটিং’ হবে।
ইভিএমে ভোটের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ইসির এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, “ইভিএমে অনৈতিক কার্যক্রম করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
“তারপরেও কেউ যদি রিচেক করতে চায়, তাদের আমরা স্বাগত জানাই। আমরা ইভিএম প্রদর্শনীর আয়োজন করব। কারও সন্দেহ থাকলে, তারা এসে দেখতে পারেন।”
ইভিএম নিয়ে ভোটারদের প্রশিক্ষিত করতে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছি, লিফলেট, বুকলেট ও টিভি বিজ্ঞাপন প্রচার করবে ইসি।
আরও পড়ুন: